রাজ্যে নবম দিনমজুরের মেয়ে, স্বপ্নপূরণে বাধা হতে পারে অর্থ

রাজ্যে নবম দিনমজুরের মেয়ে, স্বপ্নপূরণে বাধা হতে পারে অর্থ

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

রাজ্যে নবম দিনমজুরের মেয়ে, স্বপ্নপূরণে বাধা হতে পারে অর্থ। প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর জেদ থাকলে যে কোনও বাধাই বাধা নয় তা দেখিয়ে দিলেন টিনা থোকদার। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রত্যন্ত এলাকা ফতেপুরের দিনমজুর বাবার মেয়ে টিনা এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে নবম হয়েছেন। ভালুকা আরএমএম বিদ্যাপীঠ থেকে কলা বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিলেন টিনা। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯০। এদিন মেয়ের ফল জানার পর সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলার সময় কেঁদে ফেলেন বাবা নাড়ুগোপাল থোকদার ও মা রাসেশ্বরী থোকদার। মেয়ে ভালো ফল করলেও বাইরে কীভাবে মেয়েকে পড়াবেন তা নিয়ে দুশ্চন্তায় দিশেহারা তিনি। মেধাবী টিনার যাতে পড়াশুনায় আর্থিক সমস্যা বাধা না হয়ে দাঁড়ায় সেজন্য সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

 

ফতেপুরে্ বাড়ি নাড়ুগোপাল থোকদারের। দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় টিনা। ছোট ছেলে ঋজু ষষ্ঠ্য শ্রেণিতে পড়ে। পানের বরোজে কাজ করেন তিনি। এছাড়া রোজগারের আশায় অন্য কাজও করতে হয় তাকে। তা থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানোই দায়। অনেক কষ্টে ইটের গাঁথনি দিয়ে দুটো ঘর করলেও তাতে প্লাস্টার করতে পারেননি। সব ঘরের দারজা-জানালাও নেই। ফতেপুর এলাকায় কোনও স্কুল নেই। তাই ভালুকায় সাড়ে তিন কিলোমিটার পায়ে হেঁটে স্কুলে যাতায়াত করতে হত টিনাকে।

 

সবুজ সাথীর সাইকেল থাকলেও কাজের জন্য তা বাবাই বেশি ব্যবহার করেন। অভাবের সংসারে সব বিষয়ে টিউশনও পড়তে পারেননি। তারপরেও রাজ্যে নবম হয়ে স্কুল তো বটেই এলাকার মানুষকে চমকে দিয়েছেন টিনা। ভবিষ্যতে ইংরেজি নিয়ে পড়াশুনা করতে চান টিনা। অর্থাভাবের মধ্যেও স্বপ্ন দেখেন আকাশে ওড়ার। কেন না এয়ারহোস্টেস হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। যদিও সেই স্বপ্ন কতটা সফল হবে তা তিনি জানেন না। কেননা এতদিন বাড়ি থেকেই পড়াশুনা করতেন। বিভিন্ন স্কলারশিপের টাকা, কন্যাশ্রীর টাকায় পড়াশুনার খরচ চলত।

আরও পড়ুন – মাধ্যমিকে পাস করার উপহার হিসেবে, বাবার মোবাইল কিনে দিতে দেরি, আত্মঘাতী হলো মেয়ে

টিনা বলেন, সব বিষয়ে টিউশন পড়লে আরও ভালো ফল হত। তবে যা ফল হয়েছে তাতেই আমি খুশী। কিন্তু এবার বাইরে থেকে কীভাবে পড়াশুনা চলবে জানি না।

মেয়ের ফলাফল জানার পর কথা বলতে গিয়ে এদিন কেঁদে ফেলেন বাবা নাড়ুগোপাল থোকদার। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি। নয়তো মেয়েকে পড়াতে পারব না।

ভালুকা আরএমএম বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ ইমদাদুল হক বলেন, ও আমাদের স্কুলের সুনাম বাড়িয়েছে। পড়াশুনায় বরাবর ও ভালো ছিল। অভাবের সঙ্গে লড়াই করেই ওকে পড়াশুনা করতে হয়েছে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করব। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কাছে টিনাকে সাহায্যের জন্য আমরাও আবেদন জানাচ্ছি।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top