অগ্নিপথের নামে চুক্তি ভিত্তিক সেনা নিয়োগের গলদ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠা আগুনে উত্তপ্ত উত্তরবঙ্গ

অগ্নিপথের নামে চুক্তি ভিত্তিক সেনা নিয়োগের গলদ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠা আগুনে উত্তপ্ত উত্তরবঙ্গ

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

অগ্নিপথের নামে চুক্তি ভিত্তিক সেনা নিয়োগের গলদ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠা আগুনে উত্তপ্ত উত্তরবঙ্গ। সেনায় চাকুরি প্রার্থীদের ভয়ঙ্কর বিক্ষোভ আন্দলনের মুখে রাজ্য পুলিশের তৎপর ভূমিকায় বড় আশঙ্কার হাত থেকে মিললো রক্ষা! শুক্রবার সেনা চাকুরি প্রার্থীদের আন্দোলনে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। চুক্তি ভিত্তিক সেনা নিয়োগের পরবর্তে নিয়মমাফিক পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলনকারিকদের বিক্ষোভে কয়েক ঘন্টার জন্য স্তব্ধ হয়ে পড়ে শিলিগুড়ি শহর।

 

জানা গিয়েছে সকাল ৯.৩০টা নাগাদ শিলিগুড়ি শালুগাড়ার আর্মি রিক্রুটমেন্ট অফিস (এআরও) তথা সেনা নিয়োগ দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় সেনায় চাকুরী প্রার্থীরা। উত্তরবঙ্গের আট জেলা থেকে সংগঠিত হয়ে বিক্ষোভকারীরা সেনা উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার দাবি জানালে তাদের তরফে কোনোরকম প্রতিক্রিয়া না মেলায় ক্ষুদ্ধ চাকুরী প্রার্থীরা ক্ষোভে ফেঁটে পড়ে। এরপরই নিমেষে বিক্ষোভকারীদের আন্দোলনের রূপরেখা বদলে তা অগ্নিগর্ভ রূপ নেয়। হাতে বাঁশ, লাঠি সোটা নিয়ে খোলা রাস্তায় বিক্ষোভ আন্দোলনের নামে শহরকে স্তব্ধ করে দেয়। উত্তরপূর্ব রেলের সর্ববৃহৎ এনজেপি স্টেশনকে টার্গেট করে এগোতে লাগে আন্দোলন।

 

শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসিপি হেডকোয়ার্টার জয় টুডু, ডিসি ওয়েস্ট কুওয়ার ভূষন সিং, এসিপি শুভেন্দু অধিকারি নেতৃত্বে পরিস্থিতি সামালের চেষ্টা করা হয়। সেবক রোড ধরে আন্দোলনকারিরা এগিয়ে এসে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ দেখাতে লাগে। সেবকরোডের রাস্তার ওপর থাকা গার্ডরেল ভেঙে দেওয়া হয়, বিভিন্ন বৈদ্যুতিক বাতি স্তম্ভে থাকা হোডিং ভাঙচুর চালাতে লাগে আন্দোলনকারীরা। পুলিশ ভেনাস মোড়ের কাছে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে বাঁশ,লাঠিসোটা বাজেয়াপ্ত করে নেয়।

 

ভেনাস মোড় অবরুদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে লাগেন স্বাস্থ্য ও শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ন কয়েক হাজার যুবক। উত্তরবঙ্গের মালাদা, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং থেকে আসা প্রায় ৭০০-৮০০যুবকেরা একজুট হয়ে চিৎকার করে বলেন বেকারত্বের যন্ত্রনায় নিয়ে তাদের আত্মহত্যা করতে হবে, আর তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবে মোদি।অস্ত্র আইনে প্রশিক্ষণ নিয়ে সেনায় কাজ করার চারবছর পর চাকুরি কেড়ে নিলে বেকারত্বের জ্বালায় সন্ত্রাসীবাদী গোষ্ঠীতে যোগ দেবে যুবকেরা কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি। রাস্তার আটকে বুকডন দিতে লাগেন।

আরও পড়ুন – নতুন রূপে সেজে উঠবে বকখালি. আগামী দিনে বকখালি পর্যটন কেন্দ্র নিয়ে একাধিক পরিকল্পনা

টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভও চলে। বিক্ষোভের জেরে শহর জুড়ে যানজটের আটকে নাকাল হতে হয় আমজনতাকে। স্কুল বাস, ভ্যানে রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়ে কচিকাঁচারা। তবে শিলিগুড়ির মেট্রোপলিটন পুলিশ এনজেপি স্টেশনে আন্দোলন পৌঁছনোর দুই কিমি আগেই বিক্ষোভকারীদের রুখে দেয়। পুলিশ সু কৌশলে বুঝিয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সক্ষম হয়। পুলিশের তরফে সমস্ত রকম সতর্কতা অবলম্বন করেই এনজেপি স্টেশনে কয়েকশো মিটার আগে থেকেই পুলিশ ব্যারিকেড করে বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়।

 

পুলিশ আশস্ত করে আট জেলার প্রতিনিধিদের শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের দপ্তরে স্মারকলিপি পেশ করার কথায় রাজি হয়ে আন্দোলন তুলে নেন বিক্ষুদ্ধ চাকুরিপ্রার্থীরা। কোচবিহারের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার আলী বলেন দেড় চার বছর আগে মেডিকেল হয়েছে, একাধিকবার পরীক্ষার জন্য ট্রেনে উঠেও পরীক্ষা বাতিলের বিজ্ঞপ্তিতে ফিরে আসতে হয়েছে। বাবার কিডনির অসুখ, অর্থের জন্য বোনের বিয়ের আটকে রয়েছে। এখন পুরোনো আবেদন খারিজ করে নতুন চুক্তিভিত্তিক নেওয়ার নামে জুলুমবাজি চলছে। তার মত অনেকেরই দাবি অসহায় পরিবার ও পেটের তাড়নায় বিক্ষোভে নেমেছি। আবার সেনায় চাকুরীর বয়সের উর্দ্ধসীমাও এই দু বছরের টালবাহানায় পেড়িয়ে গিয়েছে অনেকেরই।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top