তিন দিন ধরে মৃত দিদিমার সাথে বসবাস করছিল মানসিক ভারসাম্যহীন নাতনি

তিন দিন ধরে মৃত দিদিমার সাথে বসবাস করছিল মানসিক ভারসাম্যহীন নাতনি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

তিন দিন ধরে মৃত দিদিমার সাথে বসবাস করে চলছিল মানসিক ভারসাম্যহীন নাতনি। তিন দিন পর বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর জানতে পারে স্থানীয়রা। এরপর পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর কুমারগঞ্জ থানার ভোঁওড় গ্রামে। মৃত বৃদ্ধার নাম সন্ধ্যা রানী ঝাঁ। গতকাল মহিলার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট হাসপাতালে পাঠায় কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। পাশাপাশি মানসিক ভারসাম্যহীন নাবালিকাকে আপাতত কুমারগঞ্জ খাবারের ব্যবস্থা করেছে। দেখভালের জন্য বাড়িতে সিভিক ভলেন্টিয়ার পোস্টিং করা হয়েছে। প্রসাশনের মাধ্যমে তাকে হোমে পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে। এদিন বালুরঘাটে মৃত মহিলার দেহ সৎকার করা হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে।

 

জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা রানী ঝাঁর স্বামী অনেকদিন আগেই মারা গিয়েছেন। এক মেয়ে ও তার স্বামীও অনেক দিন আগে মারা গেছেন। এক ছেলে থাকলেও তার কোন খোঁজ নেই। এদিকে সন্ধ্যা রানী দেবীর নাতনি রানী চৌধুরী মানসিক ভাবে অসুস্থ। তাকে নিয়েই কোন রকমে বাস করতেন তিনি। বয়সের কারণে বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। নাতনি রানীকে নিয়েই সংসার ছিল তাঁর। ছোট থেকেই সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল না রানী। অভাব-অনটন থাকায় নাতনির চিকিৎসা করাতে পারেননি।

আরও পড়ুন – নৌকাডুবির ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জে

মহিলা কে দেখতে না পাওয়ায়, স্থানীয়রা গতকাল বৃদ্ধার বাড়ি যান। তখনই নজরে আসে বৃদ্ধার দেহ ঘরে পড়ে রয়েছে।দেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। আর তার পাশেই বসে আছে তাঁর নাতনি রানী। স্মৃতিদেবীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। সবকিছু খতিয়ে দেখার পর পুলিশের প্রাথমিক অনুমান গত মঙ্গলবারই মারা যান তিনি। মারা যাওয়া দু’দিন পেরিয়ে যাওয়ায় শরীরে পচন ধরেছিল। যার ফলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। এদিকে ওই বৃদ্ধার নাতনী মৃতদেহ সঙ্গে দু’দিন কাটায়। এমনকি দু’দিন ধরেই অভুক্ত অবস্থায় ছিল সে। বিষয়টি নজরে আসার পরে ওই মানসিকভাবে অসুস্থ নাবালিকাকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন প্রতিবেশীরা। যদিও বর্তমানে পুলিশ তার দেখভাল করছে।

 

এদিকে প্রতিবেশীদের এখন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই মানসিক ভাবে অসুস্থ নাবালিকাকে নিয়ে। কারণ এতদিন পর্যন্ত সে তার দিদার সঙ্গে থাকত। বর্তমানে তার আর কেউ নেই। সে কি ভাবে থাকবে? কোথায় থাকবে? আপাতত ওই নাবালিকাকে প্রতিবেশী একজনের বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিবেশীরা পুরো বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনার চেষ্টা করছেন। প্রশাসনের তরফে ওই নাবালিকাকে কোন হোমে থাকার ব্যবস্থার পাশাপাশি চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে হয়ত সে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।

 

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ ও কতদিন আগে মারা গেছেন তা জানা যাবে। মৃতার নাতনি কে হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top