নেশার আসরে বচসার জেরে বন্ধুকে গুলি করে খুন

নেশার আসরে বচসার জেরে বন্ধুকে গুলি করে খুন

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

নেশার আসরে বচসার জেরে বন্ধুকে গুলি করে খুন। ভাটপাড়ার রেশ কাটতে না কাটতেই ২৪ ঘন্টার মধ্যে ফের শুট আউটের ঘটনা ঘটল জগদ্দলে। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে পরপর শুট আউটের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকালে ভাটপাড়ার বাকরমহল্লার ১৩ নম্বর গোলিতে প্রকাশ্য দিবালোকে দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে খুন হয়েছিল এলাকার এক ইমারতি ব্যাবসায়ী সালাউদ্দিন আনসারী ওরফে মুকুল। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার মধ্যে রাতে ফের জগদ্দলের শিবমন্দির তলায় বন্ধুর গুলিতে খুন হল আর এক বন্ধু।

 

অভিযোগ,প্রতিদিনই সন্ধে নামতেই প্রকাশ্যে জগদ্দল থানার ভাটপাড়া পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের রেললাইনের ধারে শিবমন্দির তলায় মদ-গাঁজার ঠেকে আসর বসত। শনিবার মধ্য রাতে সেই আসরে যোগ দেয় রোহিত দাস ও তাঁরই অন্তরঙ্গ বন্ধু করন যাদব। ভাটপাড়ার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তি নিবাস পল্লীতে ভাড়া থাকে বছর উনিশের রোহিত। আর করন ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সূর্যসেন নগরের বাসিন্দা। অভিযোগ,ওইদিন মধ্যরাতে নেশার আসরে বচসার জেরে রোহিতের পেটে আচমকাই গুলি চালায় তাঁরই অন্তরঙ্গ বন্ধু করন। গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির দোরগোড়ায় গিয়েই লুটিয়ে পড়ে রোহিত। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে তৎক্ষনাৎ ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার আগেই রোহিতের মৃত্যু ঘটে।

 

ঘটনার খবর আসতেই এলাকায় রিতিমত উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে জগদ্দল থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। এদিন মৃত রোহিতের বাবা প্রদীপ দাস বলেন,ছেলে টিটাগড় জুটমিলে কাজ করত। শনিবার রাতে খাওয়া দাওয়া সেড়ে কাজে যাচ্ছি বলে ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তারপর আমি আর ওর মা ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। রাত আড়াইটে নাগাদ চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখি,ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির সামনে পড়ে কাতরাচ্ছে। তখন ওকে জিঞ্জাসা করায় ও বলল করন ওকে গুলি করেছে। কিন্তু কি জন্যে করন ছেলেকে গুলি করল তা বলতে পারব না। এদিকে মৃতের বাবা প্রদীপবাবু রবিবার সকালেই জগদ্দল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা অভিযুক্ত যুবক করন। তবে কি নিয়ে নেশার আসরে ওদের দুজনের মধ্যে বচসা বেধেছিল,তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় মৃতের পরিবার ও পড়শিরা।

আরও পড়ুন – মনিপুরের টুপুলে ধ্বস নেমে মৃত বনগাঁর ব্যারাকপুরে সন্তু ব্যানার্জী, কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার

যদিও ভাটপাড়া ও জগদ্দলে দুটি খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মোনজ ভার্মা বলেন,দুটি ক্ষেত্রেই খুনের উদ্দেশ্য এখনও পরিষ্কার নয়। তবে শনিবার সকালে ভাটপাড়ায় ইমারতি ব্যাবসায়ী সালাউদ্দিন আনসারীর খুনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া শনিবার মাঝ রাতে জগদ্দলে যুবক খুনের ঘটনায় মৃতর পরিবারের পক্ষ্য থেকে “করন” নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। নগরপাল বলেন, সমস্ত সম্ভাবনা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে অভিযুক্ত যুবক “করনের” বিরুদ্ধে আগেও পুলিশের কাছে অপরাধ মুলক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে মদের আসরে এক রাউন্ড গুলিই চলেছিল বলে তিনি এদিন জানান। এদিকে ভাটপাড়া ও জগদ্দলে পরপর খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র বলেন,এই ধরনের খুনের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখের।

 

প্রশাসন বিষয়টি দেখছে। তবে আগে ভাটপাড়া অঞ্চলে যে ধরনের অশান্তি, দাঙ্গাবাজি ও বোমাবাজি হত তা এখন অনেকাংশেই কমে গেছে। একশ শতাংশের মধ্যে এখন ওখানে অপরাধমুলক কাজকর্মে সংখ্যা কমে এক থেকে দুই শতাংশে নেমে এসেছে। তবে দুই-একটি ঘটনা ঘটাও বাঞ্চনীয় নয়। মদন মিত্র আরও বলেন,কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়। দোষীরা শাস্তি পাবেই। প্রশাসনের কাজ প্রশাসন যাথাযত ভাবে করছে। ইতিমধ্যেই ভাটপাড়ার খুনের ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতারও করেছে। তাই এখন আলটপকা মন্তব্য করে প্রশাসনের তদন্তকে বিঘ্নিত করা উচিত হবে না।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top