কাটোয়ায় প্রাক্তন নৌসেনার বাড়িতে হেরোইন কারখানার হদিস, গ্রেপ্তার ৪। বাড়িতে ল্যাব বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলত মরফিন থেকে হেরোইন তৈরীর কারখানা! লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে তৈরী করা হত হেরোইন! গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে এই হেরোইন চক্রের পর্দাফাস করল এসটিএফ এবং কাটোয়া থানার পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থানার রাজোয়া গ্রামে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত তথা প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী মহম্মদ গোলাম মোর্তাজা সহ ৪ জন।
এই গোলাম মোর্তাজার বাড়িতেই মজুদ ছিল বিপুল পরিমাণ মরফিন। সেই মরফিন থেকেই বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি হতো হেরোইন। যা ছড়িয়ে পড়ত রাজ্যের বিভিন্ন কোণায় এমনকি রাজ্যের গন্ডি পেরিয়েও এই হেরোইন পাচার হত ভিন রাজ্যে। তাই নয় রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে চলে যেত অন্য রাজ্যেও। বাড়িতেই ছোটখাটো ল্যাবরেটরি করে মরফিন থেকে নিষিদ্ধ হেরোইন তৈরি হতো। কাটোয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম রাজোয়ায় এক বাড়িতেই চলত এই মাদক চক্র। সেই বাড়ির মালিক মহম্মদ গোলাম মুর্তাজা দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যেই হেরোইন তৈরি করত।
আরও পড়ুন – আবারও পথ দূর্ঘটনার কবলে পড়ল রায়গঞ্জের বিধায়ক তথা বিধানসভার পিএসি চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কল্যানীর গাড়ি
শুক্রবার রাতে যখন হানা দেয় এসটিএফ ও কাটোয়া থানার পুলিশ তখন বাড়িতেই ছিল গোলাম এবং তার এক সঙ্গী। অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মরফিন উদ্ধার করা হয়েছে, উদ্ধার করা হয়েছে হেরোইন তৈরীর কয়েক কোটি টাকার সরঞ্জাম। পাশাপাশি বিরাট অঙ্কের টাকাও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই চক্রের মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে গোলাম মুর্তজা ছাড়াও রয়েছে আঙ্গুর আলি, মিঠুন শেখ, মিনারুল শেখ নামে তিন হেরোইন তৈরীর তিন কারিগর।
জানা গেছে, তাদের মধ্যে দু’জন হেরোইন বানানোয় দক্ষ। ধীরে ধীরে বাড়িতেই যন্ত্র বসিয়ে মরফিন থেকে দেদার তৈরি হতো হেরোইন। তারপর সেখান থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ত তা। এমনকি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশেও চালান হতো এই হেরোইন। কাটোয়ার এই বাড়িতেই মণিপুর সহ পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসত হেরোইন তৈরীর উপকরণ বা কাঁচামাল। শনিবার ধৃত ৪ জনকে দাঁইহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়, তার পরই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ধৃতদের থেকে এই চক্র সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। কোথা থেকে এই মাদক আনা হতো? কোথায় কোথায় বিক্রি করা হতো? আর কারা কারা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত আছে? কোন রাজনৈতিক ছত্রছায়া এরা কাজ চালাচ্ছিল কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।