কেন্দ্রীয় সরকারের রেল দপ্তরের বিরোধীতায় মুখর খোদ ভাজপা বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। ভাজপার অন্তঃ কলহ প্রকাশ্যে এনে কেন্দ্রের রেল দপ্তরের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রচার মুখী রণক্ষেত্র প্রস্তুত করছেন পদ্মের রাজ্য সম্পাদক। সম্প্রতি রেল নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে ১৫ই আগস্ট থেকে হলদিবাড়ি স্টেশন থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ছুটবে দার্জিলিং মেল। বর্তমানে দার্জিলিং মেল এর রুট নিউজলাপাইগুড়ির থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত। তবে কোভিড পরিস্থিতির আগে হলদিবাড়ি এনজেপি প্যাসেন্ঞ্জার ট্রেনের সঙ্গে দার্জিলিং মেলের দুটি কোচ সংযুক্ত করে চালানো হতো।
নিউজলপাইগুড়ি স্টেশনে এসে প্যান্সেনজার ট্রেনের সংযুক্ত কোচ জুড়তো মূল দার্জিলিং মেইল ট্রেনের সঙ্গে। তবে লকডাউনের পরই হলদিবাড়ি থেকে দার্জিলিং মেল এর সংযুক্ত কোচ দুটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয় রেলের তরফে। যা নিয়ে জলপাইগুড়ি ও হলদিবাড়ির যাত্রীদের দাবির মুখে চাপে পড়ে রেলকে একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে স্মারকলিপি প্রদানের পাশাপাশি চালুর বিষয়ে আবেদন জানান জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ ডঃ জয়ন্ত রায়। ফলত রেলের নতুন ঘোষণার পর থেকেই জলপাইগুড়ি হলদিবাড়ির মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দেয়।
আর এই নিয়েই তাজিয়া খাড়া করে দলের অন্তঃদন্দ্ব প্রকাশ্যে এনে রণক্ষেত্রের ময়দান প্রস্তুত করলেন শিলিগুড়ি পদ্ম বিধায়ক শংকর ঘোষ। জলপাইগুড়ি সাংসদ বনাম বিধায়কের ঠান্ডা যুদ্ধ এবারে প্রকাশ্যে! মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে ভাজপা বিধায়ক শংকর বাবু দাবি করেন ট্রেনটি হলদিবাড়ি থেকে চালোনা করা হলে দার্জিলিং মেলের নামকরণের ঐতিহ্য নষ্ট হবে। যেহেতু ট্রেনটির নাম দার্জিলিং মেল তাই স্বাভাবিকভাবেই তা দার্জিলিং জেলা থেকে যাত্রা শুরু করবে এটাই কাম্য। নিজ কেন্দ্র সরকারের বৃহত্তর মন্ত্রক রেলের সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত ভূল বলে দেগে দেন তিনি।
পাশাপাশি তিনি মন্তব্য করেন রেলবোর্ড মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তার দাবি দার্জিলিঙ জেলার মানুষের আবেগ আহত হচ্ছে এতে। যদিও বিরোধী রাজনৈতিক শিবির তৃনমূল ও নাগরিকরা এই বিষয়টিতে আমোল দিতে নারাজ। যাতে দলীয় সাংসদের সঙ্গে তার দূরত্ব ও অন্তঃকলহই সাফ প্রকাশ্যে আসছে। বিধায়ক শঙ্কর খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের দপ্তরের সিদ্ধান্তের বিরোধিতাকে একেবারেই ভালো চোখে দেখছে না ভাজপা দলীয় নেতৃত্বরা। রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মন্তব্য বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের সঙ্গে দলের ক্রমশ দূরত্ব রেখা স্পষ্ট হচ্ছে। চওড়া হচ্ছে ভাজপার অন্দরের ফাঁটল।
আরও পড়ুন – জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপন
যাতে দলের কোন্দল বেড়িয়ে আসছে প্রকাশ্যে। দলীয় সূত্রের খবর সম্প্রতি বেশ কিছুদিন যাবত দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষের। শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশেই দলীয় কর্মসূচির বিষয়ে কিছুই দলের তরফে জানানো হয়না বিধায়ককে। সাম্প্রতিককালে অধিকাংশ কর্মসূচিতে দেখাও মেলেনি বিধায়কের। বিজেপির অন্দরমহল সূত্রে বেড়িয়ে আসা খবর বলছে বর্তমানে দলকে বিভক্ত করে দুটি গোষ্ঠিতে চালনা করছেন নেতৃত্ব ও বিধায়ক। জলপাইগুড়ি সাংসদের সঙ্গেও রয়েছে বিধায়কের বিরাট ব্যবধান। একইসঙ্গে নিজ সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধাচারণ করে প্রচার মুখী রণক্ষেত্র প্রস্তুত করা নতুন নয় বিধায়কের কাছে।
সম্প্রতি পোস্ট অফিসে দাঁড়িয়েও একইভাবে দপ্তরের বিরুদ্ধে গুচ্ছের অভিযোগ তোলেন বিধায়ক শংকর বাবু। আর এরপরই রেলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য তার। এ বিষয়ে তৃণমূল সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ অবশ্য জানাচ্ছেন এটা তাদের দলীয় অন্তঃকলহ। বিধায়ক ও সাংসদ দুজনেই নিজ এলাকার মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। দার্জিলিং মেল হলদিবাড়ি থেকে চালনার বিষয়ে তার মন্তব্য অনেক বেশি মানুষ পরিষেবার সুযোগ পাক এটাই কাম্য।



















