রাস্তার বেহাল দশায় বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে গ্রামের মেয়েদের! আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। রাস্তা না ছোট জলাশয় বোঝা দায়। নিত্য নরক যন্ত্রনায় হেটে যাওয়াই দুষ্কর। ছোটখাটো দুর্ঘটনা রোজ নামচা। জীবন হাতে করে নিয়ে চলতে হচ্ছে নিত্য পথচারী থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়াদের। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে ছোট খাটো জলাশয়ের রূপ নেয়।
স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাধিকবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েও মিলছে না কোনো সুরাহা। ভোট আসলে মেলে শুধু প্রতিশ্রুতি, কিন্তু স্থানীয় মানুষদের মেলে না রাস্তা। তাই বেহাল কাঁচা রাস্তা পাকা করার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল দশটা নাগাদ রাস্তায় মাছ ছেড়ে অভিনব প্রতিবাদে সামিল হলেন মালদা জেলার মালতীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চিলা পাড়া ও লালগঞ্জ গ্রামের শতাধিক বাসিন্দারা।
এমনকি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট বয়কটের ডাক দেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা। যদিও স্থানীয় বিধায়ক ও ব্লক প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ তুলে নেয় স্থানীয়রা। স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত এক কোদাল পর্যন্ত রাস্তায় মাটি পড়েনি। চিলা পাড়া গ্রামের আতাবুদ্দিনের বাড়ি থেকে নাজিমুদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা কঙ্কালসার অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন থেকেই। এই রাস্তা দিয়ে দৈনিক প্রায় এক হাজার মানুষের যাতাযাত।
আরও পড়ুন – সিপি(আই)এম র মিছিলে মানুষের ঢল
বেহাল রাস্তার কারণে জনদুর্ভোগের শেষ নেই। কাঁচা রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে চলাচল অযোগ্য হওয়ায় অন্য এলাকার আত্মীয়-স্বজন এই গ্রামে আসে না। গ্রামে রোগীর জন্য ঢোকেনা কোন অ্যাম্বুলেন্স। এলাকার কোন রোগীকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব হয় না। প্রসূতি মা ও অসুস্থ রোগীকে বাঁশের তৈরি চাঙারিতে বসিয়ে কাঁধে করে দুই কিলোমিটার পায়ে হেঁটে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।
শুধু তাই নয়, বেহাল রাস্তার কারণে গ্রামের তরুণ-তরুণীদের বিয়েও ভেঙে যাচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই কঙ্গলসার রাস্তা দিয়ে স্থানীয়দের যেতে হয় হাসপাতাল, ব্লক অফিস, থানা, ব্যাঙ্ক, বাজার ও
স্কুলে। স্থানীয়দের অভিযোগ সম্পর্কে মালতিপুর বিধানসভার বিধায়ক তথা মালদা জেলা পরিষদের সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সি জানান, চিলাপাড়া ও লালগঞ্জ তার বিধানসভার অন্তর্গত। বছর খানেক আগে জেলা পরিষদ থেকে গ্রামে কিছুটা রাস্তা পাকা হয়েছে। প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা পড়ে রয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে তাই কাজ করতে পারছে না। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করে দ্রুত এর সমাধানের চেষ্টা করবেন। চাঁচল-২ নং ব্লকের বিডিও দিব্য জ্যোতি দাস জানান, পঞ্চায়েতের সঙ্গে এটা নিয়ে শিঘ্রই আলোচনা করবেন। এই বর্ষায় আপাতত অস্থায়ী ভাবে কিছুটা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন।