নদী গর্ভে চাষের জমি থেকে বসত বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় স্থানীয় বাসিন্দারা। সামান্য বৃষ্টিতেই ব্যাপক হারে জল বাড়তে শুরু করেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ফুলহর নদীর জল। এলাকায় তেমন বৃষ্টি না হলেও বিহার থেকে আসা গঙ্গার জলে ফুলহর নদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
জল বৃদ্ধি হতেই নদীর দক্ষিণ প্রান্তে থাকা ভাকুরিয়া এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলের তলায় ইতিমধ্যেই তলিয়ে গেছে। পুজোর প্রাক্কালে ভাঙ্গনের আতঙ্কে কার্যত দিশেহারা এলাকাবাসীরা। ইতিমধ্যেই এলাকার কয়েকশো বিঘা ধান এবং পাটের জমি নদী গর্ভে চলে গিয়েছে। এদিকে ভাকুরিয়া এলাকায় থাকা রিং বাঁধের ৩ থেকে ৪ জায়গাতে ফাটল ধরেছে এবং সেই ফাটল দিয়ে হু হু করে নদীতে জল ঢুকতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ ফুলহরের জল বাড়লেই চরম দুর্দশায় পড়তে হয় ভাকুরিয়া এলাকার বাসিন্দাদের। পানীয় জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবায় সংকট দেখা দেয় এলাকায়। এলাকায় উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও মিলছে না কোনো ওষুধ। বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো এলাকায় দুর্বিষহভাবে দিন কাটাতে হচ্ছে ভাকুরিয়া এলাকার বাসিন্দাদের।
ফুলহর নদীতে যে ভাবে জল বাড়তে শুরু করেছে যে কোনো মুহূর্তে জলের তলায় তলিয়ে যেতে পারে বেশ কয়েকটি গ্রাম।এলাকায় প্রশাসনিক কর্তা থেকে শুরু করে কোনো জনপ্রতিনিধিদের দেখা পাওয়া যায় নি বলে আক্ষেপের সুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের গলায়। পাশাপাশি স্থানীয়দের অভিযোগ, পশু খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে এলাকা জুড়ে।নৌকার অভাবে নদী পারাপার করতে পারে না লোকজন।
নদী পার্শ্ববর্তী রিং বাঁধের যে তিন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে গতবছর এই বাঁধ মেরামতের জন্য ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছিল গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে, কিন্তু কোন রকম পাইলিং বা মাটি ভরাট পর্যন্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ এলাকা বাসিন্দাদের।এদিন স্থানীয় বাসিন্দা বিভূষণ মন্ডল বলেন, নদীর জলে হাজার হাজার বিঘা জমি তলিয়ে গেছে।আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে একটা দ্বীপের মধ্যে বসবাস করছি। কিন্তু কোনো জন-প্রতিনিধিদের দেখা মিলছে না।
কোন গর্ভবতী মহিলাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নৌকা নেই। কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসা করানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারছি না। ঘটনা প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের বিডিও বিজয় গিরি জানান, নদী এলাকা পরিদর্শন করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাবেন। ঘটনা নিয়ে রাজ্যের পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী তাজমুল হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন এবং যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা সমাধানের জন্য বৈঠক করবেন।