থার্মোকলে সরকারি নিষেধাজ্ঞায় শারদউৎসবে হতাশ থার্মোকল শিল্পীরা। করোনা পর্ব পার করে অনেক কিছুই স্বাভাবিক হয়েছে। মানুষ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে এবার উৎসব মূখী। কিন্তু হতাশ এই উৎসবের অন্যতম অঙ্গ থার্মোকলের শিল্পীরা। এবার আর তারা দুবছর আগের ব্যাস্ততা খুঁজে পাচ্ছে না। কেউই তেমনভাবে চাইছেন না পুজোর মন্ডপে থার্মোকলের নক্সা বা সজ্জা হোক। কারণ থার্মোকলের ওপর জারি হয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। দু-একটি বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রোজেক্টের কাজ হতো, তাতেও ভাটা।
বিদ্যালয়গুলিও জানিয়ে দিচ্ছে থার্মোকলের বিকল্প কিছু ব্যাবহার করবে। মেদিনীপুর শহরে এমন শতাধিক থার্মোকলের শিল্পী রয়েছেন। তাদের মধ্যে সব থেকে পুরনো শিল্পী শেখর দাস। প্রায় ৪০ বছর ধরে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। তার সুদক্ষ কাজ অবিভক্ত মেদিনীপুর জুড়ে সমাদৃত। ৭৬ বছর বয়সী শেখর দাসের একমাত্র ছেলেও সেও বাবার পেশাতে হাত পাকিয়ে নিজের মতো করে সরকারি ঋন নিয়ে সেই ব্যাবসাকে প্রসারিত করেছিল। ব্যাবসা প্রসারিত করার পরে সম্প্রতি সরকারি তরফে ঘোষনা হয়েছে থার্মোকলের সমস্ত কিছু বন্ধ।
কারণ সেটি পরিবেশ বান্ধব নয়। মেদিনীপুর শহরে প্রতিনিয়ত পৌরসভার নিষেধাজ্ঞা সূচক মাইকিং চলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে জেলাজুড়ে। এই পরিস্থিতিতে পুরনো থার্মোকল শিল্পীরা হতাশ পুজোতে। কারণ, কেউই কোনো মন্ডপে ব্যাবহার করতে চাইছেন না থার্মোকল। হতাশ এই ধরনের থার্মোকলের শিল্পীরা। শিল্পী শেখর দাস বলেন, আমি চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে এই পেশাতে রয়েছি। কোনো সময়েই এতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। আমার ৫ ছেলে মেয়ে।
সকলের পড়াশোনা থেকে বিয়ে দেওয়া সবটাই এই থার্মোকলের কাজ থেকে করতে পেরেছি। আজ সেই দোকানের এতো প্রসারন করা সত্বেও কোনো কাজের অর্ডার নেই। কারণ, থার্মোকলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। তাই কোনো মন্ডপেই অর্ডার নেই। অথচ, এর কোনো বিকল্পও নেই আমাদের মতো শিল্পীদের কাছে৷ আমরা হতাশ। শেখর দাসের ছেলে দেবাশীষ দাস বলেন, বাবার পুরনো ব্যাবসা রপ্ত করে আমিও এই দোকানে বসেছিলাম। ব্যাবসাকে বাড়াতে সরকারি ঋণ নিয়ে কাজে নেমেছিলাম। ব্যাবসা বাড়িয়েছি, এখন মাঝ মাঠে শুনলাম থার্মোকলে নিষেধাজ্ঞা। জানিনা এরপর কি করবো। কোনো অর্ডার নেই কোনো মন্ডপে। প্রতিবছর যেখানে বিশাল অর্ডার থাকে।