পরিবেশবান্ধব মূর্তি তৈরি করে আবারও নজির সৃষ্টি করলেন নদীয়ার গয়েশপুরের তপন পাল। গতবছর গয়েশপুরের শিল্পী তপন পাল তিন ইঞ্চির দুর্গা প্রতিমা গড়ে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিলেন। সেই জন্য তার নাম ‘ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে’ নথিভুক্ত করা হয়। এবারও তিনি পরিবেশবান্ধব মূর্তি তৈরি করে আবারও তাক লাগিয়ে দিলেন গয়েশপুর বাসীদের। শিল্পী জানান তার এই মুক্তি তৈরীর কারণ।
তিনি বলেন, “শিক্ষা আনে চেতনা — সেই চেতনা সুন্দর হোক , বাস্তবমুখী হোক , হোক বই মুখী – এই লক্ষ্যেই এবার তৈরী করেছি – সমস্ত শিক্ষা সামগ্রী দিয়ে এই দুর্গা প্রতিমাটি ।” শিল্প কলা সৃষ্টির নতুন উপকরণের পরীক্ষা মূলক খোঁজ এবং অভিনব রূপ অবয়ব প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টায় , করণ কৌশলের ক্রমাগত চর্চায় এই মূর্তি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে। নানান বই ( বইয়ের পৃষ্ঠা ) , নানান ধরনের রংয়ের কলম , স্কেচ পেন , কাঠ পেন্সিল , শ্লেট পেন্সিল , চক , ডাস্টার , দাগ তোলার রাবার বা ইরেজার , পেন্সিল কাটার , জ্যামিতিক চাঁদা , কম্পাস , স্কেল , পেন বক্স , পেন দানী , ব্ল্যাক বোর্ড – ইত্যাদি নানান শিক্ষা সামগ্রীকে মূর্তি তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ।
মূর্তির উচ্চতা – ১০ ফুট , চওড়া – ১২ ফুট — মূর্তিটি দেখা যাবে – গয়েশপুর “মালঞ্চ” সংস্কৃতিক সংস্থার দুর্গা পূজা মন্ডপে। প্রসঙ্গক্রমে পূজা মন্ডপটিও শিক্ষা সামগ্রীর বিভিন্ন রূপ, আদলে ও অনুপ্রেরণায় তৈরী হয়েছে বলে জানান পূজো উদ্যোক্তারা। পূজা উদ্যোক্তাদের মূল ভাবনায় পাট শিল্পকে বাণিজ্যিক দিক থেকে আরো গুরুত্ব বাড়াতে ও অগ্রাধিকার দেবার দাবী কে সামনে রেখে , এই পাট শিল্পকে আরো সদর্থক অগ্রগতির চাহিদাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে ব্রতী হয়েছেন বলে জানান। সাথে সাথে তাদের জনসাধারণের প্রতি বার্তা যে প্রকৃতিকে সু-স্বাস্থ্য পূর্ণ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে, দৈনন্দিন জীবনে সর্বক্ষেত্রে ক্ষতিকারক প্লাস্টিক ব্যাগের উৎপাদন ও ব্যবহার বর্জন করার আবেদন রাখছেন। পরিবর্তে পাট জাত দ্রব্যে তৈরী উপাদান ও ব্যাগের ব্যবহারকে সর্বব্যাপী সরকারী স্বীকৃতি ও আইন প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সক্রিয় চেষ্টা করতেই তাদের এবারের পূজোর ভাবনা বলে জানিয়েছেন ‘মালঞ্চ’ এর উদ্যোক্তারা।