শহরের প্রায় দেড়শো প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করবে ৫০ জন মুসলিম যুবক। বিসর্জন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। মেদিনীপুর শহরের রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিমা বিসর্জন দিয়েই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে মেদিনীপুর শহরে। শহর সংলগ্ন কংসাবতী নদীর গান্ধীঘাট ও ডিএভি ঘাটে প্রায় দেড়শো প্রতিমা বিসর্জিত হবে। যার শেষ পর্বটা সম্পন্ন করবেন ৫০ জন যুবক।
উদ্যোক্তাদের কাছে প্রতিমা নিয়ে নদীতে বিসর্জন করা, বিসর্জন শেষে কাঠামো তুলে নদী পরিস্কার করা সবটাই করবেন এই যুবকরা। সম্প্রীতির পিঠস্থান মেদিনীপুর অনেকেই বলে থাকেন। শারদ উৎসবের শেষ লগ্নে সেই সম্প্রীতির আরও একটা চিত্র ফুটে উঠলো বিসর্জন প্রক্রিয়ায়। দূর্গাপূজার সমস্ত প্রতিমা বিসর্জন এবং বিসর্জন শেষে নদীঘাট পরিষ্কার করার কাজ করতে হাত লাগালেন ৫০ জন মুসলিম যুবক। মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান জানিয়েছেন, ‘প্রশাসনের খাতায় প্রায় ১৩০টির বেশি প্রতিমা পুজোর হিসেব রয়েছে।
তারপরেও মেদিনীপুর শহর ও সংলগ্ন এলাকা থেকে বহু প্রতিমা মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন গান্ধীঘাট ও ডিএভি ঘাটে বিসর্জিত হবে। কংসাবতী নদীতে এই মুহূর্তে গভীর জল। ফলে ওই ঘাটে বিসর্জন প্রক্রিয়াতে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা প্রবল। তাই পৌরসভার পক্ষ থেকে নিয়ম করে-বিসর্জনে আশা পুজো কমিটির লোকজনদের নির্দিষ্ট স্থানে আটকে দেওয়া হয়। তাদের কাছ থেকে প্রতিমা নিয়ে পৌরসভার উদ্যোগে বিসর্জনের শেষ পর্ব সম্পন্ন হবে। পৌরসভার পক্ষ থেকে এই কাজের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শেখ মতিন নামে এক যুবককে’।
ওই ঘাট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মতিন, উদ্যোক্তাদের কাছে সেই প্রতিমা হায়ড্রা মেশিনের সাহায্যে নিয়ে নদীতে নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দেবে। বিসর্জন প্রক্রিয়া সম্পন্ন উদ্যোক্তাদের নিয়মে হবে। নদীতে বিসর্জনের পর মতিনের পক্ষ থেকে প্রায় ৬০ জন লোক নিয়োগ করা রয়েছে সেই কাঠামো ও বিসর্জনের বিভিন্ন জিনিসপত্র নদী থেকে তুলে পরিষ্কার করার জন্য। এই প্রক্রিয়া চলবে আগামী কয়েক দিন ধরে, যতদিন না বিসর্জন পর্ব শেষ হয়।
চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, ‘এটা একটা সম্প্রীতির উদাহরণ। উৎসবের সবাই সামিল, প্রায় ৫০ জন মুসলিম যুবক মতিনের নেতৃত্বে এই বিসর্জন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। মাতৃ মুর্তি শেষ পর্বে বিসর্জন ছাড়াও পরিচ্ছন্নকরণ সবটাই করবে ওরা। উৎসবে সমানভাবে অংশ নেবে ওরাও’। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা শেখ মতিন বলেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা সকলেই উৎসবে শামিল। শেষ পর্বে আমরা বিসর্জনে হাত লাগাতে পেরে ভালো লাগে। বিসর্জন ও পরিছন্নকরণ সবটাই প্রায় ৫০ জন মুসলিম যুবকেরা আমরা মিলেমিশে করি’।