‘আভড়াপুণেই’ উৎসব পালন হয় কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার দিন

‘আভড়াপুণেই’ উৎসব পালন হয় কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার দিন

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

‘আভড়াপুণেই’ উৎসব পালন হয় কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার দিন। কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার দিনে দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্ত বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিশেষ করে ঝাড়গ্রাম জেলাজুড়ে পালিত হয়ে আসছে ‘আভড়াপুণেই’ বা অব্যূঢ়া পূর্ণিমা(অব্যুঢ়া ব্রত)। এই লৌকিক উৎসব অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের জন্য। উৎকল সংস্কৃতি বা ওড়িশার রীতি প্রভাব এই উৎসবে লক্ষ্য করা যায়।

 

ওড়িশার ‘কুমার পূর্ণিমা’-র প্রভাব এই ‘আভড়াপুণেই’ উৎসবে পরিলক্ষিত হয়। এই উৎসবে মা, ঠাকুমা, দিদিমারা অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের মঙ্গল কামনা করেন। তাঁদের অবিবাহিত সন্তানরা যাতে ভবিষ্যৎ-এ ভালো জীবনসঙ্গী বা জীবনসংগিনী পায় সেই কামনা করা হয়। এদিন বাড়িতে পিঠে, পায়েস, লুচি, সুজি, ক্ষীরি থেকে শুরু করে নানা নিরামিশ পদ তৈরী হয়। এদিন সারাদিন অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের ‘ভুজা’ বা ‘মুড়ি’ খাওয়া বারণ থাকে।

 

এদিন স্নান করে নতুন পোশাক পরতে হয়। স্নানের পরে মায়েরা অবিবাহিত সন্তানের মঙ্গলকামনায় কপালে চন্দনের মঙ্গল টিকা পরিরে দেন। অনেক অবিবাহিত ছেলেমেয়েরা যাদের বয়স একটু বেশি তারা অনেক ক্ষেত্রে নিজের ভবিষ্যৎ জীবনে কার্তিকের মতো স্বামী বা লক্ষ্মী প্রতিমার মতো স্ত্রী পাওয়ার লক্ষ্যে সরাদিন উপবাস রেখে ব্রত করেন। আবার কারো কারো মতে চাঁদের মতো সুন্দর জীবন সঙ্গী বা জীবনসঙ্গীনি পাওয়া এই ব্রতর লক্ষ্য। পূর্ণিমার চাঁদ উদয় হওয়ার পর এই ব্রত শেষ হয় তুলসী গাছে জল ঢেলে।

আরও পড়ুন – খেলার মাধ্যমে প্রয়াত খেলোয়াড়ের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

ছেলেমেয়েদের মঙ্গল কামনায় অনেক ক্ষেত্রে মায়েরা তুলসী গাছে জল ঢালেন। ব্রতর শেষে আজকাল তুলসী গাছে জল ঢালার রীতি প্রায় হারিয়ে গেছে। এই উৎসব ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে সমান। এই উৎসবের আগের দিন, মা-ঠাকুমারা অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের আশীর্বাদ করে বলতেন ‘পো মেনেকার নিশ বাঢ়ু’ অর্থাৎ ছেলেদের গোঁফ বাড়ুক। আর বলতেন ‘ঝি মেনেকার আইস বাঢ়ু’ অর্থাৎ মেয়েদের আয়ু বাড়ুক। আজকের আধুনিক জীবনের ছোঁয়ায় ‘আভড়াপুণেই’-এর জৌলুষ অনেকটা ফিকে।

 

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির শেকড়ের সংঙ্গে যুক্ত এই উৎসব। ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের আমরদা গ্রামের বাসিন্দা মৃদুলা রানী ভূঞ্যা‌ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রথা মেনে আসছি। এটা আমাদের আস্থার একটি লৌকিক উৎসব। গোপীবল্লভপুর-২ নং ব্লকের জুনশোলা গ্রামের রিদম পাল ও অলিভিয়া পালের ‘আভড়াপুণেই’ পালন করলেন, যথাক্রমে রিদমের মা রূপশ্রী পাল ও অলিভিয়া মা মহুয়া পাল।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top