সরকারি মহিলা কর্মচারীকে জমি মাফিয়া কটুক্তি করে হেনস্থা। এক মহিলা সরকারি কর্মচারীকে অফিস যাবার পথে রাস্তায় জমি মাফিয়া বলে কটূক্তির অভিযোগ সহ পাশাপাশি বৈধ চাকরিকে অবৈধ করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠলো গয়েরকাটার দুই তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে।ঘটনা সম্পর্কে জেলাশাসকের কাছে নালিশ মহিলার। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন অভিযোগকারী সরকারি কর্মী। ঘটনায় নিন্দার ঝড় বিভিন্ন মহলে।
অভিযোগ, গয়েরকাটার বাসিন্দা ধূপগুড়ি বিডিও অফিসে কর্মরত সুচিত্রা দেবনাথ (দত্ত) অন্যান্য দিনের মতোই কর্মসূত্রে গত ১১ই অক্টোবর গয়েরকাটা বাস স্ট্যান্ড থেকে ধূপগুড়ির বাসের জন্যে অপেক্ষা করতে থাকার সময় আচমকাই গয়েরকাটার বাসিন্দা সুমিত শিকদার ও মনোজ তিওয়ারি নামে ওপর আরেক যুবক সুচিত্রা দেবীকে জমি মাফিয়া সহ বিভিন্ন ধরনের কটূক্তি করে উত্যক্ত করার চেষ্টা করেন বলেই অভিযোগ। এখানেই শেষ নয় সুচিত্রা যদি তাদের সঙ্গে বসে সমঝোতা না করলে তার বৈধ সার্টিফিকেটকে যেমন অবৈধ বানিয়েদিয়েছেন! তেমনি তার বৈধ চাকরিকেও অবৈধ বানিয়ে দিবে বলে হুশিয়ারি দেন। কিসের জন্যে বসে সমঝোতার কথা বলছেন সুমিত শিকদার? প্রশ্নের জবাবে সুচিত্রা দেবনাথ জানান, সুমিত সিকদার ও আরো দুই জন মিলে বিভিন্ন গরিব মানুষের জমি কিনে ব্যবসা করে এর বিরুদ্ধে আমি প্রতিবাদ করার জন্য আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং আমাকে ও আমার স্বামীকে এর আগে মারধর করে অভিযুক্তরা।
পাশাপাশি লোকজন দিয়ে আমার বাড়ি ঘেরাও করে পুলিশ দিয়ে আমার ঘরের তালা ভাঙিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে আমাকে গ্রেফতার করায়। পরবর্তীতে আমিও বানারহাট থানার আই.সি. এর বিরুদ্ধে ও সুমিত শিকদারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করি বলে জানান সুচিত্রা দেবী। এর পর থেকেই সমস্ত মামলা তুলে নিতেই আমাকে এভাবে রাস্তাঘাটে দেখতেই কটূক্তি করছে সুমিত শিকদার বলে অভিযোগ সুচিত্রা দেবীর। মনোজ তিওয়ারি আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেন ডিআইজি আধিকারিকের কাছে। যে আমি তিন জনের জমি দখল করেছি। তার সমস্ত রকমের তথ্য আমার কাছে আছে। যেই তিন জনের নাম উল্লেখ করেছে সেই তিন জনের নামেই উল্টে মানুষ কেস করেছে। শেষ পর্যন্ত আমার চাকরির পেছনে এদের নজর পড়েছে।
তাই বিভিন্ন দফতরের কাছে আমার চাকরি ও সার্টিিকেট ভুয়ো বলে অভিযোগ করেছে। ভিজিলেন্স ডিপর্মেন্ট দিয়ে এনারা তদন্ত শুরু করেছে। যে আমার সার্টিফিকেট নাকি ভুয়ো। এমনকি যে আমার সেই সার্টিফিকেট দেয় তাকেই ভয় দেখিয়ে পুলিশ দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে যে সে আমায় সার্টিফিকেট দেয়নি। তাতেও যখন পারছেন না রাস্তা ঘাটে হুমকি দিতে শুরু করেছে অভিযুক্তরা। আইসির বিরুদ্ধে আদালতে করা মামলা যদি আমি না তুলে নেই তাহলে চাকরিকেও ভুয়ো বানিয়ে দেয়ার হুমকি ক্রমাগত দিয়েযাচ্ছেন বলে অভিযোগ সুচিত্রা দেবীর।
প্রশ্ন উঠছে, কে জমি মাফিয়া? কে সরকারি জায়গা ও নদী দখল করে বসে আছে? ধূপগুড়ি বাস স্ট্যান্ডে গেলেই সকলে দেখতে পায়। আমায় যখন জমি মাফিয়া বলে কটাক্ষ করছে, আমি দ্রুত তথ্য জানার আইনে আর টি আই করে দেখিয়ে দিবো, জেলা পরিষদের তিনটে জায়গা কে দখল করেছে? কি করে করেছে? পাট্টাই বা পেলো কোথা থেকে? আমি খুব শীগ্রই আবার আবার আদালতের মামলা করতে চলেছি বএ জানান সুচিত্রা দেবী। ওপর দিকে গোটা ঘটনা অস্বীকার করেছে সুমিত শিকদার ও মনোজ তিওয়ারি। সুমিত শিকদার বলেন, মিথ্যে অববাদ দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর জন্যই এই ধরনের মন্তব্য করছেন ওই মহিলা।
আরও পড়ুন – কালী পূজার প্রতিমা বানাতে জোর ব্যস্ততা কুমোরটুলিতে
উনি এভাবে অনেকের জমি যেমন রিন্টু সরকার ,স্বপন কর সকলের জমি নিয়েই এমনটা করেন। আদালতে বিষয়টি বিচারাধীন। আদালত এর বিচার করবেন।পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন তিনি। পাল্টা তিনি বলেন, যাকে তাকে এভাবে মিথ্যে রেপ কেস পর্যন্ত দিয়ে দেয়। এর আগে আমার নামে মিথ্যে রেপ কেস দিয়েছে। জেলা শাসক ম্যাডামকে আমি স্মারকলিপি দিয়েছি। জমি ঝামেলা চক্রান্ত বিষয়ে থাকে সবসময়। নিজে না করলেও লোক দিয়ে করায়। প্রশাসনকে অভিযোগ জানানো আছে। যেহুতু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। মহামান্য আদালত যারা রায় দেবে সেটাই মাথা বেঁধে নেব। শুধু আমাদের বিরুদ্ধেই নয় আইসি সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কোর্টে মামলা করেছে। উনি রাজ্যের সিএম, ডিএম, কাউকে কে চিনেন না। বিডিও অফিসে চাকরি করেন বলে নিজেকে মস্তান মনে করেন।
জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, দুজনেই একে অপরের বিরুদ্ধে ডিএম অফিসে অভিযোগ করেছেন। সুচিত্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে এফ আই আর আছে অ্যারেস্ট ও হয়েছিলেন। তারপর বেল পেয়েছেন। ঘটনা প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, বিষয়টি গুরুত্ব অনুসারে দেখা হবে।