খাঁচায় থাকলেও বাঘ বাঘ থাকে , অনুব্রতকে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে ফাঁসানোর প্রতিবাদে সরব ফিরবাদ। তিনি বলেন,বীরভূমে আমি দশ বছর পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছি , চোখের সামনে বীরভূমের সংগঠনকে শিশু থেকে যুবক হতে দেখেছি। সংগঠনের সাথে আমি ওতপ্রতভাবে জড়িত। আমাদের কাছে বীরভূম জেলা তৃনমুলের নেতা অনুব্রত মন্ডল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ , বিজেপি যদি হবে এই ধরনের নেতা কে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য পাবে তাহলে তাদের সেটা ভুল ধারণা।
এই মুহূর্তে অনুব্রত মণ্ডল জেলায় নেই এটা ঠিক , কিন্তু নিশ্চিত করে বলতে পারি যেভাবে অনুব্রত মণ্ডল কে হেনস্তা করা হচ্ছে তাতে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন আরো জোরদার মজবুত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ থেকে তৃণমূল কর্মীরা বিজেপির এই সিবিআই ইডি কে লেলিয়ে দেওয়া পছন্দ করছে না। বীরভূমের মানুষ অনুব্রত মণ্ডল কে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে। তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। অনুব্রতকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তাতে মানুষের মধ্যে একতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আমি আবারো বলছি অনুব্রত মণ্ডল কে গ্রেপ্তার করে হেনস্থা করা হচ্ছে বিজেপির কতগুলো নেতার কথায়। পশ্চিমবাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের প্রচারের মুখ কেবলমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলনেত্রীকে সামনে রেখেই আমরা নির্বাচন লড়বো। বিজেপির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেছে বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতে নির্বাচন হবে , পরিপ্রেক্ষিতে পুরো ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন , আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোন সন্ত্রাস হবে না।
বিজেপি যেভাবে গুজরাট ত্রিপুরাতে নির্বাচন করিয়েছে সেই একইভাবে বাংলায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে বাংলায় অশান্তি চক্রান্ত করবে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে। সরকার চাইছে শান্তিতে পঞ্চায়েত নির্বাচন হোক , কিন্তু বিরোধীরা সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে তাহলে মানুষ চুপ থাকবে না। পিলপিলে কেঁচো হয়ে ফড়ফড় করে লাফাবে আর সাপ হয়ে চুপ করে বসে হজম করে যাবে তা হবে না। বিরোধীরা শান্তি পালন করুক তাহলে তৃনমুল ও শান্তির সাথে থাকবে।
বিজেপি রাজ্য ভাগ করতে চাইছে চক্রান্ত করে , কোচবিহারে বিজেপি সাংসদ নিশীদ প্রামাণিক কে উদ্দেশ্য করে ফিরহাদ হাকিম বলেন , আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নিশিত প্রামাণিক পাঁচ লক্ষ ভোটে পরাজিত হবে। বাংলাভাগের চক্রান্ত যারা করেছে বাংলার মানুষ তাদেরকে সব সময় জবাব দিয়ে পরাস্ত করেছে। আমরা রক্ত দেবো প্রাণ দেব কিন্তু বাংলাকে অখন্ড রাখবো। যেরকম কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী একটা ভারত বর্ষ সেরকম পাহাড় থেকে সাগর একটাই বাংলা।
নিশিত প্রামানিকের সঙ্গে অনন্তমহার এসে বৈঠক সম্পর্কে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নাই যা বলার কোচবিহারের জেলার নেতৃত্ব বলবে। এদিন বীরভূমের বিষ্ণুপুরে একটি জনসভা থেকে ফিরা থাকেন বলেন , বীরভূমের বাঘ কে এখন আটকে রাখা হয়েছে , এই সময় কিছু শেয়াল উল্লোসিত হয়ে হুক্কা হুয়া ডাক ছাড়ছে , কিন্তু বাঘ যেদিন খাঁচা থেকে বেরিয়ে এসে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াবে সেদিন ওই শেয়াল আর ইঁদুর গুলো গর্তে ঢুকে যাবে। সারাজীবন খাঁচায় থাকবে না। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি আরো বলেন , রাজ্যে বিজেপি সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু আমাদের দলীয় কর্মীদের সজাগ থাকতে হবে।
যে রাজনৈতিক দল ধর্মীয় বিভাজন করে তাদের পাশে জানো কোন মানুষ না থাকে। বাংলার অখণ্ডতা ও মানুষের ঐক্য নষ্ট করে নিজেদের ভোটব্যাংক তৈরি করতে চাইছে। কিন্তু আমরা এই বিভাজনের রাজনীতি কে কোনভাবেই প্রশ্রয় দেবনা। লাল ঝান্ডা ও কংগ্রেস এখন হাত মিলিয়েছে , দুটো ল্যাংড়া একসাথে একে ওপরের ভর করে বলছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ফেলে দেবো ২০১৬ সালে। কিন্তু মানুষ ভোট বাক্সে জবাব দিয়ে বলেছিল বাংলার দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই থাকবে। তৃনমুল কংগ্রেসের একজন নেতা অন্যায় করেছে , তার জন্য আমরা লজ্জিত। তার জন্য সবাই কে চোর বলার অধিকার বিজেপির নেই। কারন তোমার বড় চোর। বিজেপি কি ভুলে গেছে হ্যেলিকপ্টার কেলেংকারী। কিন্তু বিচার হবার আগে টিভি তে বসে কাউকে দোষী তে প্রমানিত করা অন্যায়। এটা বন্ধ হওয়া উচিত।
বাংলায় ওদের সংগঠন বলে কিছু নেই মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে দুয়ারে হিন্দুত্ব কর্মসূচি শুরু করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ! শনিবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কে তীব্র আক্রমণ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, বাংলায় বিজেপির কোন অস্তিত্ব নেই কোন সংগঠন নেই বিজেপিকে সুবিধে পাইয়ে দেবার জন্য ময়দানে নেমেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে ওরা। ওদের শূন্য কলসি। ভাঁড়ে মা ভবানী। কিছু নেই তাই বেশি আওয়াজ করছে।
আরও পড়ুন – চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে
স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণদেব, বিদ্যাসাগর থেকে রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের আদর্শ নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুয়ারে সরকার ও পরিষেবাকে পৌঁছে দিয়েছে। নবান্নকে মানুষের দরজায় নিয়ে গিয়েছে। গণতন্ত্র ও ধর্মনিরেপক্ষতাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে তৃণমূল। প্রসঙ্গত, শুক্রবার তারাপীঠ মন্দিরে পুজোর মধ্যে দিয়ে ‘হিতচিন্তক’ নামে অভিযানের সূচনা করল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ৬ থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই ‘হিতচিন্তক’ অভিযান। সদস্য সংগ্রহ করতে বাড়ি বাড়ি অভিযান করবে ভিএইচপি। এদিন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই কর্মসূচিকেই তীব্র আক্রমণ করেন ফিরহাদ।
ফিরহাদের পাশাপাশি ভিএইচপি-র এই কর্মসূচিকে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ-ও তুলোধনা করেন। তিনি বলেন, বাংলায় যারা হিন্দু তারা সনাতন ধর্মের আদর্শ নিয়ে চলে। তারা স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণদেবের হিন্দুত্বে বিশ্বাসী। তারা আরএসএস-বিজেপির শেখানো হিন্দুত্বে চলে না। অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে বীরভূম জেলা তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, অনুব্রত মণ্ডল একটি মামলায় জড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি জেলা সভাপতি হিসেবেই রয়েছেন। বীরভূম জেলা অন্য নেতারা ভালোভাবেই চালাচ্ছেন। জেলা নেতৃত্ব অত্যন্ত সবল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, একটি চক্র বাংলাভাগ করতে চাইছে। আমরা বাংলার ছেলেরা রক্ত দিয়ে দেব, কিন্তু, বাংলা ভাগ হতে দেব না।