সাধারন মানুষের জীবনযাত্রা বুঝতে, বাংলার পথে পদব্রজে গুজরাটের রাহুল। ভারতবর্ষের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতির মানুষ বসবাস করেন। অঞ্চলের তারতম্যে প্রত্যেকের জীবনযাপন ভিন্ন ভিন্ন ধরনের। এগুলোকেই সংগ্রহ করে নিজের মনের খোরাক পূরণ করতে চান গুজরাট রাজ্যের সুরাট লাগোয়া অঞ্চলের বাসিন্দা তথা পেশায় অলঙ্কার ডিজাইনার রাহুল গোঁসাই।
তিনি গুজরাটের সুরাটের ঘর ছেড়ে বেরিয়েছেন গত ১৬ই অক্টোবর সকালে। এরপর মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ওড়িশা হয়ে এখন পশ্চিম বঙ্গের সাধারণ মানুষের মধ্যে ঘোরাঘুরি করছেন তিনি। পরিবার থেকে নানা বাধাবিপত্তি থাকলেও বাবা, মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে ভারতের সাধারন মানুষের মন বুঝতে, ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এখন লক্ষ্য ঠিক করেছেন কাঞ্চনজঙ্ঘার বেস ক্যাম্প। রাহুলের কথায়, জানি না কোথায় থাকব, কোথায় পৌঁছাবো, কি খাব, কিভাবেই বা যাব। যখন যার কাছ থেকে যতটুকু লিফ্ট পাই, সেটা নিয়েই পথে এগিয়ে চলেছি। তার কথায়, পথই নতুনকে জানতে শেখায়, পথই শেখায় সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের সুর।
তাই সাধারণ মানুষকে জানতে পথই সেরা ঠিকানা। দীর্ঘ ২৫/২৬ দিন পশ্চিম বঙ্গে থাকতে থাকতে টুকটাক বাংলা বুঝে বলতেও শিখেছেন রাহুল। সে বলে, চলাটাই জীবন। এর মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছি। ফলে সকল মানুষের সুবিধা অসুবিধা, অভাব, অভিযোগ জানতে পারছি। জানতে পারছি তাদের জীবনযাত্রার পদ্ধতি, এটা নতুনকে শিখতে সাহায্য করে। সেটা শেখার জন্যই পথে নেমেছি। যতদিন পারব, পথে থাকব।
গতকাল বুধবার রাত রায়গঞ্জ রেলস্টেশনে নিজের আনা টেন্টেই ছিল সে। তাঁর পিঠ ব্যাগে রয়েছে একসেট জামাকাপড়, একটা ম্যাট্রেস আর ল্যাপটপ ও স্মার্টফোন। পথে সময় পেলেই ল্যাপটপ খুলে তৈরি করছেন নতুন অলঙ্কারের ডিজাইন। এতে নিয়মিত অনলাইনে উপার্জন হয়ে চলেছে রাহুলের। যা থেকে জুটছে পথের খরচ। অজানাকে জানা ও তাকে শখ হিসেবে মেনে ভারতীয় দর্শনের নতুন গল্পগাথা লিখতে চান বছর ২৭ এর রাহুল।
মানুষের মন বুঝতে, ঘর ছেড়ে পথে নামা গুজরাটের রাহুলকে দেখে রায়গঞ্জের সমাজকর্মী কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, এটা একটা ভিন্ন ধরনের শখ।
আরও পড়ুন – ৪ দফা দাবী নিয়ে ডেপুটেশন অল ইন্ডিয়া খেতমজদুর সংগঠনের
ওনার মানসিকতাকে স্যালুট করছি। এভাবে লিফ্ট নিয়ে, পায়ে হেঁটে চলে উনি যেভাবে জীবন উপভোগ করছেন, তা দেখে শেখার মত। ওঁনার যাত্রা শুভ হোক।
অজানাকে জানা ও তাকে শখ হিসেবে মেনে ভারতীয় দর্শনের নতুন গল্পগাথা লিখতে চান বছর ২৭ এর রাহুল। মৃত্যু বাদে বাকি সবকিছুকে আপন করে দেখতে চান রাহুল। এতেই তার আনন্দ। রাস্তার ধার ধরে গুটি গুটি পায়ে চলতে চলতে তার চোখ খুজছিল বাইক, ট্রাকের থেকে কোনো লিফ্ট। না পেলে হেঁটেই পৌঁছে যেতে চান তিনি তার লক্ষ্যে।