জঙ্গলে একটানা ২৫ কিমি পথ হাঁটলেন জেলাশাসক। একের পর এক পাহাড় ডিঙিয়েছেন।হাঁটলেন জঙ্গল পথেও।শনিবার একটানা ২৫ কিমি হেটেছেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা।সমতলের কোন গ্রাম শহর জনপদে নয়।হাঁটলেন জেলার সবচেয়ে দুর্গম প্রত্যন্ত বক্সা পাহারে। সান্তলাবাড়ি থেকে চুনাভাটি।সেখান থেকে লাল বাংলা গ্রাম।শেষে বক্সা সদর বাজার হয়ে আবার সান্তলাবাড়িতে ফিরে আসেন জেলাশাসক।রুটটি এতটাই দুর্গম একদিনে নির্দিষ্ট রুটে ঘুরে বেড়াতে ট্রেকারও দুবার চিন্তা করেন।
গোটা পথটি জঙ্গলের ভেতর।তবে গত ৩ বছর যেমন সাবলিন দক্ষতায় বক্সা পাহারের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়িয়েছেন সুরেন্দ্র কুমার মিনা এদিনও ঠিক তাই হল।পাশাপাশি ঘুরে দেখেন জেলার সবচে উঁচুতে থাকা এবারের দুয়ারে সরকার ক্যাম্প।উল্লেখ্য, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০০০ ফুট উচুতে চুনাভাটিতে ছিল শনিবার দুয়ারে সরকারের বিশেষ ক্যাম্প।গোটা গ্রাম নেমে এসেছিল স্থানীয় ফিনিশ মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।এদিনই নেপালি মাধ্যমের স্কুলটিতে প্রথম স্মার্ট ক্লাসের সূচনা হয়েছে।জানা গেছে, চতুর্থ দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে চুনাভাটির নেপালি,ডুখপা সম্প্রদায়ের মানুষ জেলাশাসকের কাছে স্মার্ট ক্লাসের আবেদন করেন।
কথা দিয়েছিলেন জেলাশাসক।এদিন পঞ্চম দুয়ারে সরকারের শিবিরে বক্সা পাহারে আর একটি নতুন স্মার্ট ক্লাস পেয়ে গেছে।শনিবার সকাল থেকে দুপুর অবদি জেলাশাসকের সাথেই ছিলেন কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন।শুধু দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পেই নয়,বক্সা, লালবাংলা সহ পথে যে গ্রাম গুলিই এসেছে সেখানেই স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এলাকার খোঁজ খবর নিয়েছেন জেলাশাসক ও বিডিও। প্রসঙ্গত,বক্সা পাহাড়ের সবকটি গ্রামই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতর রয়েছে।জেলা প্রশাসন গত ৩ বছরে একের পর এক কাজ করেছে বক্সা পাহারে।শনিবার ২৫ কিমি পথে নতুন আর কিকি কাজ করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করেন জেলাশাসক।বিপদসঙ্কুল রাস্তায় চিতাবাঘ থেকে ভালুক সবকিছুই নজরে আসে স্থানীয়দের।দিনের আলো থাকতেই এদিনের কর্মসূচি শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছিল প্রশাসন।
আরও পড়ুন – নেইমারকে নিয়ে ব্রাজিল শিবিরে সুখবর
ভোড় সাড়ে ৬ টায় সান্তলাবাড়ি থেকে হাটা শুরু হয়।শেষ হয় দুপুর সারে ১২ টা নাগাদ।চুনাভাটিতে অনেকটা সময় ছিলেন প্রশাসনের কর্তারা।ছিল বিনামূল্যে মেডিকেল চেক আপ ক্যাম্প।ক্যাম্প শেষ হবার পরই শুরু হয় কম্বল, মশারী বিতরণ।এরপর স্থানীয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টর বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন জেলাশাসক।পাশাপাশি দুয়ারে সরকারের নির্দিষ্ট ২৫ টি সরকারি পরিশেবা থেকে গ্রামের কোন মানুষ বাদ রয়েছেন কিনা তাও জেনে বুঝে নেন প্রশাসনের দুই কর্তা।এদিকে,কম্পিউটার, প্রজেক্টের সহ স্মার্ট ক্লাস পেয়ে বেজায় খুশি প্রাথমিক স্কুলের ছাত্র ও তাদের অভিভাবকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা স্মাইল ডুখপা বলেন,জেলাশাসক কথা দিয়েছিলেন।স্মার্ট ক্লাস পেয়েছি আমরা। আর সুন্দরভাবে পড়াশোনা করতে পারবে ছাত্র ছাত্রীরা।শনিবার চুনাভাটি থেকে লাল বাংলা হয়ে বক্সাতে আসেন জেলাশাসক। সেখানে স্থানীয় স্কুল,স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিশেবা নিয়েও খোঁজ খবর নিয়েছেন।জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে সবচে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে চাইছি আমরা।দুর্গম প্রত্যন্ত এলাকার ক্যাম্পগুলিকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।বক্সা পাহারের গ্রামগুলিতে সারাবছরই প্রশাসনের নজর রয়েছে।