Deprecated: version_compare(): Passing null to parameter #2 ($version2) of type string is deprecated in /home/u517603494/domains/shinetv.in/public_html/wp-content/plugins/elementor/core/experiments/manager.php on line 129
শিলিগুড়িতে বসানো হয়েছে এস-৪০০, অমিত শাহ জানেন এটি একমাত্র

শিলিগুড়িতে বসানো হয়েছে এস-৪০০, অমিত শাহ জানেন এটি একমাত্র চিকেন নেক

শিলিগুড়িতে বসানো হয়েছে এস-৪০০, অমিত শাহ জানেন এটি একমাত্র চিকেন নেক

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

শিলিগুড়িতে বসানো হয়েছে এস-৪০০, কেননা এটি একমাত্র চিকেন নেক। সীমান্তের সবচেয়ে দুর্বলতম জায়গা হচ্ছে এই চিকেন নেক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ অবশ্যই এই এলাকার উল্লেখ করবেন নিশ্চিত। পূর্বাঞ্চালীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে শিলিগুড়ি গুরুত্ব পাচ্ছে।

 

সম্প্রতি শিলিগুড়িতে মুখ‍্যমন্ত্রী বিজয়াদশমী সেরেছেন। সেখানের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে দারুণ উদযাপন করলেন। আমরাও সঙ্গী ছিলাম। রাজ‍্যের উত্তরভাগের এই অংশে রাজনৈতিক কারণে গতলোকসভায় তার দল কিছুটা খারাপ ফল করে। তাই এবার সেই শিলিগুড়িতে মুখ‍্যমন্ত্রীর পদার্পণ বেশ ফলপ্রসু। তবে আজকের আলোচনা রাজনৈতিক নয়। ভৌগলিক।

আমরা যুদ্ধ চাইনা। যদি কখনো যুদ্ধ বাধে তাহলে কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উঠবে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সবথেকে দুর্বল সীমন্ত হচ্ছে এই রাজ‍্যের একটি জায়গা যার নাম’শিলিগুড়ি’। সেখানে আক্রমণ হেনে ঢুকে পড়লে আমাদের শত্রু চীন তাহলে ভারতের মুল ভূখণ্ড থেকে সেভেন সিস্টার অর্থাৎ আসাম মেঘালয় মণিপুরের মত সাতটি রাজ‍্য মুল ভারত থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়বে।

 

পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে উত্তরে হচ্ছে দার্জিলিং জেলা। তার নিম্নভাগের নাম শিলিগুড়ি। এটি মহাকুমা শহর। উত্তরবঙ্গের রাজধানী। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী সৃষ্টি করেছেন ‘দ্বিতীয় নবান্ন’। এখানে তার বিখ্যাত ‘উত্তর কন্যা’। এসবের ওপরে আরো একটি বড় পরিচয় সীমান্তের দিক থেকে এটি চীনের লাগোয়া। সবথেকে কাছের এলাকা। সীমান্তের ভাষায় বলা হয় “চিকেন নেক” বা ‘মুরগির গলা’। আসলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বা ডিফেন্স বিভাগের খাতায়, সুরক্ষার প্রশ্নে খুব দুর্বল এলাকা। শত্রু প্রতিবেশী দেশের সহজতম টার্গেট পয়েন্ট। শত্রু দেশ এই এলাকায় সহজ নিশানা লাগাতে পারে।

 

শত্রুপক্ষ সহজে এটা দখল করে নিলে তখন বেকায়দায় পড়তে হবে ভারতকে, কেননা মাথার অংশটা দেহের থেকে আলাদা হয়ে যাবে। তখন মাথার অংশের দখল নেওয়া শত্রুদেশের পক্ষে সহজতর হবে। এই অংশকে অতি সহজে দেশের বৃহত্তর ভূখণ্ড থেকে আলাদা করা ও দুর্বল করা যায়। এই অংশ হল ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চাল। এককথায় সাত বোন এক ভাই। সেভেন সিস্টার ওয়ান ব্রদার। মোট আট রাজ্য। সেভেন সিষ্টার হল সাতটি ক্ষুদ্র রাজ্য। মণিপুর, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মেঘালয়, অরুণাচল, আসাম, ত্রিপুরা। এই সাতবোনের একমাত্র ভাই হল সিকিম। যা স্বাধীনতার অনেক পরে যুক্ত হয়েছে ভারতের সঙ্গে। ১৬ মে ১৯৭৫ জরুরি অবস্থার সময়ে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই ক্ষুদ্র পাহাড়ি রাজ্যটিকে ভারতের অন্তর্ভুক্তির জন্য উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করেছিলেন।

 

যথেষ্ট সমৃদ্ধ রাষ্ট্র এখন। চীনের সঙ্গে সংঘাত বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য সিকিমের গুরুত্ব বেড়েছে। আর এই সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান এবং একমাত্র পথ হল শিলিগুড়ি। তিস্তা নদী বেয়ে এগিয়ে উপরের দিকে সিকিম। যার রাজা শেষ চোগিয়ালের ৪৯ দিনের শোক পালনের দীর্ঘ আয়োজন দেখেছিলাম। এই অধ্যাত্মিক রাজার প্রতি বৌদ্ধ ধর্ম মেনে শোকপ্রকাশের বিশাল কর্মসূচি। ‘ত্রিপিটক’ পাঠ। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের এই ধর্মগান খুব পবিত্র এবং গভীর ব্যঞ্জনাময় যা অভিভূত করেছিল । শুধু সিকিম নয় বাকি সাতটি রাজ্যে ঢোকার এই রাস্তা শিলিগুড়ি। তাই একে বলা হয় করিডোর। শিলিগুড়ি করিডোর ভূবনখ্যাত।

 

একে বিছিন্ন করলে আটটি রাজ্য শুধু নয় পাঁচকোটি ভারতীয় বিছিন্ন হয়ে পড়বেন। এছাড়াও দেশের বহি:শত্রু আক্রমণের ক্ষেত্রে এই এলাকায় মোক্ষম আঘাতের পরিকল্পনা শত্রু পক্ষের আছে। একে সুরক্ষিত রাখা প্রধান জাতীয় কর্তব্য।
কেন্দ্র এখন এই এলাকায় নজর দিচ্ছে। চীনের সঙ্গে ইতিমধ্যে অরুণাচল নিয়ে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। যেকোনো সময়ে মাত্র ৬০ কিলোমিটার লম্বা ও ২২ কিলোমিটার চওড়া চিকেন নেক ধড় থেকে আলাদা করে দিতে পারে এমন আশঙ্কা রয়েছে। আর সেটা যে কেন্দ্রীয় সরকারের বড় মাথাব্যথা তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। ২৬২২৩০ বর্গকিলোমিটার জায়গা যা ভারতের ৯ শতাংশ। এই আটটি রাজ্যের সঙ্গে চীনের সীমান্ত প্রায় ২৭০০ কিলোমিটার।

 

অনেকেই লাদাখের সঙ্গে এই অঞ্চলকে মিলিয়ে ভাবেন। চীনের সঙ্গে সীমান্ত কারণে এই তুলনা শুধু নয়। তারা লাদাখের চেয়েও গুরুত্বের দিক থেকে বেশী এগিয়ে রাখেন এই অঞ্চলকে। ফলে এই অঞ্চলে এবার আরো কঠোর দৃষ্টি ফেলতে শুরু করেছে চীন। এই অঞ্চলে মিলিটারী সক্রিয়তা বাড়ছে। বহুবর্ষ ধরে চলে আসা সমস্যা। কারণ চীন এই সীমান্ত এলাকার কাছাকাছি রাস্তা, যুদ্ধবিমানঘাটি তৈরি করতে প্রত্যক্ষভাবে তৎপর। এরফলে চীন দ্রুত সেনাবাহিনী ও অস্ত্রশস্ত্র মজুত করতে পারে। তা এই করিডোরকে চাপে রাখছে। যে এলাকা এখন একটি গলিপথ মাত্র চীনের কাছে। এর নাগালের মধ্যে চীন মীসাইল, বিমান বিধ্বংসি অস্ত্র বসিয়ে ভারতের সব সাপ্লাই লাইন বন্ধ করে দিতে পারে এই আশঙ্কা ষোল আনা আছে। এখানে শুধু একটি মাত্র রেললাইন আছে যা নষ্ট হলে বিকল্প দ্রুতগামী অন্য কোন সাপ্লাই রাস্তা নেই। যুদ্ধ বাধলে বিপাকে পড়তে পারে ভারত যা চাইছে চীন।

 

বিকল্প হচ্ছে বাংলাদেশ :
বাংলাদেশের মহাদেবগঞ্জের সঙ্গে মেঘালয়ের পাহাড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছে একটি যৌথ টিম। পলাশবাড়ি গাইবান্ধা গোরাঘাট এর মধ্য দিয়ে এই যোগাযোগ সম্ভব।একটি ১০০ কিলোমিটারের করিডোর গড়া যায়। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে এই দুরত্ব একটি রেল ও উড়াল পোল নির্মাণের মধ্যে দিয়ে করা যায় যদি বাংলাদেশ রাজী থাকে। এই করিডোর একটি পর্যটন ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে দুই দেশের কাছে। এই অর্থনৈতিক করিডোর বাংলাদেশ ও উত্তর পৃর্ব ভারতের আটটি রাজ্যের মধ্যে দারুণপর্যটন কেন্দ্র গড়ি বড়ধরণের লাভবান হতে পারে।

 

দ্বিতীয় সুযোগ ডোকালামের তিনমুখী জংশনের মধ্য দিয়ে আরো বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। উপরন্তু এই এলাকার ওপর নজরদারি বাড়ান। তূতীয় সুযোগ হল বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। যা সেফ এবং সুরক্ষিত। একটি বহুমুখীন যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল রাস্তা করা যেতে পারে শিলিগুড়িতে । যা বোমা বা অন্যধরনের গোলাগুলিতে ভেদ করবে না। একটি বহুমুখী বিকল্প করিডোর করা। এগুলো গোলাগুলির হাত থেকে বাঁচার সহজ রাস্তা।

 

মুরগি মেরে ফেলার জন্য শহর ছাড়া: মুরগির গলা বা চিকেন নেক শুনতে খারাপ লাগলেও মুরগি আমাদের যেমন খাদ্য তালিকায় খুব প্রিয় প্রয়োজনীয়। তেমনি মুরগি নিয়ে অনেক গল্প গাঁথা। মুরগি হল একটি পাখী। একে নিয়ে মজার একটি গল্প আছে। পুরানে যেমন গল্প আছে ব্যাধের হাতে ক্রৌঞ্চ মিথুনকে বধ হতে দেখে ব্যথিত হয়েছিলেন বাল্মীকি। আহত পাখির জন্য কষ্ট পেয়েছিলেন রাজকুমার সিদ্ধার্থ।

 

তেমনি আমেরিকার একটি শহরে মুরগি মেরে ফেলা হয়েছে বলে দুঃখে চিরতরে নিজেদের বাসস্থান ছেড়ে চলে যান লোকজন। আমেরিকার টেক্সাসের শহরে এরকমই ঘটেছিল যার আগে নাম ছিল নিউ হোপ। এখন সেই শহরের আরেকটি নাম চিকেনফেদার ! চিকেন নেক চিকেন, ফেদার নিয়ে মুরগির উদাহরণ মনে করিয়ে দেয় একটি অন্য মূল্যবান কথা চিকেন নেক শিলিগুড়ির কথা।

 

শত্রুপক্ষের পদাতিক বাহিনী, মিসাইল এবং বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র যেকোনো মুহুর্তে এখানকার সরবরাহ ব্যবস্থা বানচাল করে দিতে পারে। মনে রাখতে হবে একটিমাত্র রেল যা উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের প্রাণভোমরা। মহেন্দ্রগঞ্জ ও মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকাকে যুক্ত করার জন্য গোরাঘাট পলাশবাড়ি এবং বাংলাদেশের গাইবান্ধা।

 

১০০ কিলোমিটার একটি রাস্তা ও রেল লাইনের মধ্য দিয়ে সহজে যুক্ত করা যায় দুই দেশকে। সম্প্রতি এটা নিয়ে দুদেশের যৌথ টিম কাজ করছে। যা টুরিজম শিল্পে বদলে যাবে। মেঘালয়ের গোঘাট হয়ে মহেন্দ্রগঞ্জ, পলাশবাড়ি, গাইবান্ধা যোগাযোগ গড়ে উঠতে পারে বলে সম্ভাবনা আছে। একশ কিলোমিটার দুরত্ব একটি রাস্তা ও রেল করিডোর হয়ে উঠতে পারে। যা উত্তর পূর্ব ভারতের ব্যবসা ও ভ্রমনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

আরও পড়ুন – দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার মেলা

যুদ্ধকে আড়াল করতে ডোকালামের আন্ডার গ্রাউন্ড:

দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে, ডোকা লা’র সঙ্গে শিলিগুড়ির বহুমুখী যোগাযোগ বাড়ানো।সঙ্গে নজরদারিও বাড়াতে হবে। এটি একটি ত্রিমুখি জংশন। এখানে নজরদারি সবথেকে তুঙ্গে থাকতে হবে। তৃতীয় সুযোগ হল বিকল্প যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলা। যা শিলিগুড়িতে বহমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। আন্ডার গ্রাউন্ড টানেল বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা বা ঈরিডোর গড়ে তোলা জরুরি।

 

যুদ্ধের সময় এই টানেল সেফটির কাজ করবে। পদাতিক যুদ্ধে কাজ দেবে যুদ্ধের সময়। ব্যাধের হাতে ক্রৌঞ্চমিথুনকে বধ হতে দেখে ব্যথিত হয়েছিলেন বাল্মীকি। আহত পাখির জন্য কষ্ট পেয়েছিলেন রাজকুমার সিদ্ধার্থ। মুরগি মেরে ফেলা হয়েছে বলে দুঃখে চিরতরে নিজেদের বাসস্থান ছেড়ে চলে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু শিলিগুড়ির চিকেন নেক নিয়ে সচেতন বাঙালির মাথাব্যথা তেমন বোঝা যায় না। এটাই সবথেকে বড় চিন্তার । সূত্রে জানা যায় এই এলাকা নিয়ে আলাদা সুরক্ষা বলয় তৈরি করতে লাদাখের মডেল ভাবছে কেন্দ্র।। এস-৪০০

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top