ভিন্ন ভাবনা, শিক্ষক শিক্ষিকারই লালন পালন করছেন পথ কুকুরদের। প্রচারের আড়ালে থেকে, এক ভিন্ন বার্তা নিয়ে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত তৈরি করছেন রায়গঞ্জের সুদর্শন পুর দ্বারিকা প্রসাদ উচ্চ বিদ্যাচক্রের শিক্ষক শিক্ষিকারা। স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে পশু প্রেমের ভাবনা ছড়িয়ে দিতে স্কুল চত্বরেই গত ১ মাস ধরে লালন পালন করছেন চার চারটে খুদে পথ কুকুরের বাচ্চাকে। স্কুলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পশুপ্রেমীরাও।
স্কুলের শিক্ষক দের কথায়, পথ কুকুর আমাদের সকলের জীবনযাত্রার অংশ।
তাদের সুস্থ রাখলে নিশ্চিত থাকে পাড়া বা মহল্লার পরিবেশ। তাই স্কুল থেকে এমন পশু প্রেম মানসিকতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। তাই পাঠ্য বিষয়ের পাশাপাশি এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পথ কুকুরদের লালন পালনে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে এসেছেন ওই স্কুলের শিক্ষিকা ঈশিতা কর। তিনি নিজের বাড়ি থেকে মাছ, মাংস, ডিম দুধ, যেদিন যেমন সম্ভব এনে পরিচর্যা করছেন ওই চার খুদেকে। এদিন নিউজ বৃত্তান্তকে তিনি জানান, স্কুলেরই এক সহকর্মী যখন জানালো যে ৪টি কুকুরের বাচ্চা খুব কষ্ট পাচ্ছে। আমি তুলে নিয়ে আসি এবং স্কুলের ভেতরে আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকের আবেদন করি৷ ওনার অনুমতি পেয়েই এই পরিচর্যার কাজ শুরু করি।
স্কুলের পড়ুয়াদের কাছে ভিড়তে দিচ্ছি না, আঁচড় লাগার ভয় আছে। তবে ওরা খাবার আনলে সেগুলো খাইয়ে দিচ্ছি নিজের হাতে।
এরকমের একটা ভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ডে কাউকে কোনো বাধা দেননি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ দত্ত। তিনি নিজেও পশু প্রেমী হওয়ায়, পড়ুয়াদের মধ্যে এমন পশু প্রেম ছড়ানোর বার্তা দিতে উৎসাহী। এদিন তিনি বলেন, লকডাউন পরবর্তী সময় থেকে সকল প্রানীর প্রতি সহমর্মিতা বোঝানোর জন্য এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছি। এতে স্বামীজীর জীবে প্রেম ভাবনাকে পাথেয় করে এগিয়ে চলেছি। এই কাজে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারাই অগ্রনী ভুমিকা নিয়েছে।
আরও পড়ুন – আর্জেন্টিনার ‘তিন তারা’ লোগো উন্মোচন
আমি পাশে আছি। এদিকে, ওই স্কুলটিতে পাঠ্য বিষয় পঠনপাঠনের পাশাপাশি পশুদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন ও পরিচর্যায় শিক্ষক শিক্ষিকারা যেভাবে এগিয়ে এসে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন, তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন রায়গঞ্জের পশু প্রেমী সংগঠনগুলোও। উত্তর দিনাজপুর পিপলস ফর এ্যানিম্যালসের সদস্য তথা রায়গঞ্জ সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের শিক্ষক ড. উতঙ্ক দে বলেন, এমনটাই তো হওয়া প্রয়োজন। আমাদের এই দেশী কুকুরকে লালন পালন করার ভাবনা সঠিকভাবে ছড়িয়ে দিতে পারলে, পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় থাকবে। ওই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রইলো।