শোভনের নতুন ইনিংস কি শুরু হবে নতুন বছরে। তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ২০১৯-এর ১৪ অগাস্ট। তারপর ২০২১ বিধানসভার মুখে তিনি বিজেপির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেন। আর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এই সাড়ে তিন বছরে অন্তত তিনবার শোভনের তৃণমূলের ফেরা নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা।
এখন আবার শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নাম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখে নেওয়ার পর জল্পনা দ্বিগুণ হয়েছে। তবে কি নতুন বছরে রাজনীতিতে নতুন ইনিংসের সূচনা করতে চলেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়? ২০২৩-এর প্রারম্ভেই তাঁর প্র্ত্যাবর্তন নিয়ে জোর চর্চা চলছে। এর আগে সমস্ত জল্পনা স্তিমিত হয়ে গেলেও, এবার মুখ্যমন্ত্রীর দিক থেকে প্রত্যাবর্তন জল্পনা শুরু হয়েছে, তাই এবার হয়তো শোভনের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়লে ছিঁড়তেই পারে।
শুক্রবার হাওড়ায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মমতার মুখে স্তুতি শোনা গিয়েছে শোভনের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্তুতির পরেই প্রত্যাবর্তন জল্পনা মাথাচাড়া দেয়। আর এর পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। এ বছরেরই জুন মাসে বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়ে নবান্নে গিয়েচিলেন শোভন।
নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর শোভ বলেছিলেন এতদিনের মান-অভিমান সব মিটে গিয়েছে। তৃণমূলে ফেরার বিষয়টি তিনি সম্পূর্ণরূপে দিদির উপরে ছেড়েছেন। যেদিন দিদি ডাকবেন, সেদিনই তিনি ফের তৃণমূলে ফিরবেন। একেবারে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ভাইফোঁটা নিতে গিয়েছিলেন শোভন। তারপর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের সমালোচনা তিনি যেভাবে করেছেন এবং যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে সওয়াল করেছেন, তাতে ফের শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দলে ফেরা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।
কিন্তু শোভনের ফেরা আর হয়নি। কারণ ডাক আসেনি দিদির। এবার সরকারি মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে শোভনের প্রশংসা করেছেন, তাতে যে শীঘ্রই ডাক আসতে পারে, তা মনে করছে রাজনৈতিক মহল। নতুন বছরে ফের নতুন ইনিংস শুরু করতে পারেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। ফের পথ চলা শুরু হতে পারে রাজনীতিতে।
আরও পড়ুন – কোচবিহার বইমেলায় উপচে পড়া ভিড়
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শোভনের দলত্যাগ ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর বেহালা অঞ্চে তৃণমূলের কোনও প্রভাবশালী মুখ নেই। তাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেলযাত্রার পর শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ফেরার পথ প্রশস্ত হয়েছে। সমনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর পরের বছরই লোকসভা নির্বাচন, তার আগে নতুন বছকেই শোভনকে যদি ফিরিয়ে নেয় তৃণমূল তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নারদ কেলেঙ্কারি ছাড়া বড় কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। তাই মমতার মুখে যখন তাঁর প্রশংসা শোনা যাচ্ছে, তাতে তাঁর রাজনৈতিক ইনিংস শুরু করা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে। এখন দেখরা কবে ডাক আসে মমতার, আর তাঁর স্নেহের কাননের কবে নতুন ইনিংস শুরু হয়।