গৃহবধূকে উদ্ধার করল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার নিখোঁজ হওয়া এক গৃহবধূকে উদ্ধার করে তার পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। পরিবার সূত্রে জানা যায় গত বৃহস্পতিবার সকাল বেলা পায়েল দাস নামে এক গৃহবধূ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়।
সেই গৃহবধুর স্বামী বিকি দাস পেশায় লটারি বিক্রেতা। বিকি দাস হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তুলসিহাটার ভাগবরোল গ্রামের বাসিন্দা। বৃহস্পতি বার সারাদিন কেটে গেলেও পায়েল দাস বাড়ি ফিরে যায়নি বলে জানা যায়। ফলে বিকি দাস তার আত্মীয় স্বজনের বাড়ি এবং আশেপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করে ও কোন সন্ধান পায়নি বলে জানায়। মা ছাড়ায় রাত্রি কাটে দুই বছরের একমাত্র কন্যা সন্তানের। ফলে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ে বিকি দাস ও তার পরিবার।
অপরদিকে পায়েল দাস বাড়ি থেকে স্বামীর উপর রাগ করে স্থানীয় স্টেশনে এসে একটি হাওড়া গামী ট্রেনে উঠে হাওড়া স্টেশনে পৌছে যায়। কিন্তু স্টেশনে এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করতে দেখে রেলওয়ে পুলিশ সেই গৃহবধূকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত টেয়ার্স নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা গীতা রাউত সেই গৃহবধূকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
তারপর পায়েল দাস নামে সেই গৃহবধূর সাথে কথা বলে জানতে পারে বিকি দাস ড্রাগস এবং ডেনড্রাইট এর নেশায় আসক্ত হয়ে প্রতিনিয়ত সেই গৃহবধূর উপরে অত্যাচার চালাতো বলে সে বাড়ি থেকে কাউকে না বলেই চলে এসেছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে সেই গৃহবধূকে সব রকম সহযোগিতা করার আশ্বাস দেয় এবং তার বাড়ির ঠিকানা জেনে সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থারই মালদা জেলার কর্মকর্তা আমিরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
আরও পড়ুন – মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এবার প্রবীণরা,নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মালদা জেলা শাখার কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম ঘটনাটি জানতে পেরে বিকি দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ফলে বিকি দাস তার গৃহবধূর খোঁজ পেয়ে পরের দিন ট্রেন ধরে হাওড়া পৌঁছায়।
টেয়ার্স নামে সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মহিলা কর্মকর্তা গীতা রাউথ জানান হরিশ্চন্দ্রপুরের বিকি দাস নামে সেই যুবক নিজ অপরাধের কথা স্বীকার করে এবং পরবর্তীতে এই ধরনের কোন অপরাধ করবে না বলে একটি মুচলেখা লিখিত দেয়। এবং সেই যুবকের পরিচয় পত্র দেখে গৃহবধূকে তুলে দেওয়া হয় স্বামী বিকি দাসের হাতে। পাশাপাশি তাদেরকে বাড়ি যাওয়ার জন্য কিছু আর্থিক সাহায্য ও নতুন ব্যাগ এবং তাঁদের সন্তানের জন্য নতুন জামা কাপড় ও কিনে দেওয়া হয় সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির পক্ষ থেকে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই বিকি দাস ও তার পরিবার।