পনের দাবিতে গৃহবধূকে খুনের চেষ্টা স্বামী-শ্বশুরের, দেড় মাস পর কোমা থেকে ফিরে স্বামী ও শ্বশুড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

পনের দাবিতে গৃহবধূকে খুনের চেষ্টা স্বামী-শ্বশুরের, দেড় মাস পর কোমা থেকে ফিরে স্বামী ও শ্বশুড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

পনের দাবিতে গৃহবধূকে বহুতলের ছাদ থেকে ফেলে খুনের চেষ্টা স্বামী ও শ্বশুরের। টানা দেড় মাস পর কোমা থেকে ফিরে স্বামী ও শ্বশুড়ের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ শিলিগুড়ির গৃহবধূর।শনিবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে হাসপাতালে সদ্য কোমা থেকে ফেরা গৃহবধূর বয়ান রেকর্ড বন্দি করলো পুলিশ। গৃহবধূর নাম প্রিয়া আগ্রাওয়াল(৩০)। তার চারমাসের একটি শিশু কন্যা রয়েছে। গৃহবধূর পরিবার জানাচ্ছে গত আট বছর আগে কিশানগঞ্জ নিবাসী প্রিয়া অগ্রওয়ালের সঙ্গে শিলিগুড়ি খালপাড়ার বাসিন্দা পবনজো জজোদিয়ার ছেলে অঙ্কিতের বিবাহ হয়।

 

বিয়ের পর চারমাস আগে একটি শিশুকন্যার জন্ম দেন প্রিয়া দেবী। মহিলার পরিবারের অভিযোগ সম্প্রতি
পনের দাবি না মানায় প্রিয়া দেবীকে গত ৫ই ডিসেম্বর চার তলার ছাদে থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে খুনের চেষ্টা করেন স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা। দেড় মাস পর কোমা থেকে বেরিয়ে এসেই সে কথা পরিবারকে জানায় গৃহবধূ।
তাদের অভিযোগ গত ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে লাগাতার ২৫লক্ষ টাকা পনের দাবির করে গৃহবধূকে মানসিক ও শারীরিকভাবে অত্যাচার করতে লাগেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। ঘটনার আগে তিন থেকে চারদিন লাগাতর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তাকে মারধোর করে।

 

৫ ই ডিসেম্বর সকালে মর্নিংওয়াক করতে গিয়ে চার তলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছে তাদের মেয়ে বলে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ফোনে কিশান্গঞ্জ নিবাসী মহিলার পরিবারকে জানায়। গৃহবধুর পরিবারের সদস্যরা ছুটে আসেন এবং অন্যতর চিকিৎসার জন্য মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সে সময়তেই গৃহবধূকে অত্যাচার করা হয়েছে। এমন সন্দেহে এবং ছাদ পড়ে গুরুতর আহত গৃহবধুর বিষয়টি জানিয়ে পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় খালপাড়া পুলিশ ফাড়িতে। তবে ভয়ঙ্কর গা শিউরে ওঠা ঘটনা ঘটে থাকতে পারে তা আন্দাজ করতে পারেনি মহিলার পরিবার। চার তলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মস্তিষ্ক গুরুতর জখম হয়। কোমায় চলে যায় গৃহবধূ।

 

টানা দেড় মাস যাবত কোমা আচ্ছন্ন হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন। মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। তবে গত দুদিন আগে কোমা থেকে স্তম্ভিত ফিরে পেয়ে গৃহবধূ জানান ৫ই ডিসেম্বর তাকে জোর করে টেনে হিঁচড়ে ছাদে নিয়ে যায় স্বামী অঙ্কিত জাজদিয়া এবং তার শ্বশুড় পবন জজোদিয়া। সেখান থেকে চার তলার ছাদ থেকে স্বামী ও শ্বশুর দুজনে ধাক্কা মেরে নীচে ফেলে দেয়। স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা অভিযোগ তোলেন তিনি। শনিবার পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শিলিগুড়ির ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে মহিলার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। পরিবারের সূত্রে তিনি জানান

আরও পড়ুন – প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সদর দফতরেই বড়সড় কেলেঙ্কারি ফাঁস!

ঘটনার ৩-৪দিন আগে থেকেই লাগাতার প্রিয়া দেবীকে ২৫ লক্ষ টাকা পনের জন্য চাপ দিতে লাগে স্বামী ও শ্বশুড়। বাপের বাড়ি থেকে কোন রকম টাকা আনতে পারবেন না সে কথা পরিষ্কারভাবে স্বামীকে জানালে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তাকে খুনের হুমকি দেয়। এরপরই ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার গল্প সাজিয়ে আদতে চার তলার ছাদ থেকে স্বামী ও শ্বশুর ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় তাকে।এই পুরো কাজে শ্বাশুড়ীও মদত দেন। এই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত এডিসিপি পূর্ব শুভেন্দর কুমার জানান পূর্বেই খালপাড়া ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

 

ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড বন্দি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে।
মহিলার বাবা শ্রবণ আগারওয়াল জানান যে সময় শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা জানিয়েছিল মর্নিং ওয়াক করতে ছাদে উঠেছে সে সময়তেই একটা খটকা বাদে। তবে এভাবে ভয়ঙ্কর ঘটনার রূপায়ন করেছে জামাই ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তা ভাবতেও পারিনি। গৃহবধূর পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে সত্ত্বর স্বামী শ্বশুর সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের গ্রেপ্তারির দাবি জানানো হয়।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top