স্পিড ব্রেকারের দাবিতে শিক্ষকদের মারধর স্থানীয় যুবকদের। স্কুলের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাচ্চাদের ধাক্কা পণ্যবাহী গাড়ির।স্কুলের সামনে স্পিড ব্রেকারের দাবিতে শিক্ষকদের উপর চড়াও হলেন স্থানীয় যুবকেরা।ঘটনার ভিডিয়ো তোলার সময় মোবাইল ভাঙচুর করে শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলার ইংরেজবাজার থানার বুধিয়া এলাকায় । ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
ইংরেজবাজারের বুধিয়া এলাকায় বুধিয়া হাইমাদ্রাসা ও বুধিয়া ম্যানেজড প্রাইমারি স্কুল পাশাপাশি রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার পড়ুয়ারা স্কুলে গিয়েছিল, বুধিয়া ম্যানেজড প্রাইমারি স্কুলের গেট বন্ধ ছিল । গেট খোলার অপেক্ষায় স্কুলের সামনে দাঁড়িয়েছিল কিছু খুদে পড়ুয়া । সেই সময় পণ্যবাহী একটি ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই বাচ্চাগুলিকে ধাক্কা মারে । হাইমাদ্রাসার সম্পাদক-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা ওই বাচ্চাগুলোকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজে পাঠান ।
এদিকে, ঘটনার পর স্কুলের সামনে স্পিড ব্রেকারের দাবিতে অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা । অভিযোগ, এরপরেই হাইমাদ্রাসায় ঢুকে পড়েন স্থানীয় কিছু যুবক । স্কুলের স্টাফ রুমে ঢুকে শিক্ষকদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন ওই যুবকরা। সেই ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ড করতে গেলে মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের শিক্ষক তুষারকান্তি মণ্ডলকে বেধড়ক মারধর করা হয় । এমনকী তাঁর ফোন ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। হামলাকারীদের মধ্যে বেশ কিছু প্রাক্তন ছাত্রও ছিল।
এ নিয়ে গতকাল রাতে ইংরেজবাজার থানা ও বিডিওকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন মাদ্রাসার শিক্ষকরা । মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মহম্মদ আজিজুর রহমান জানান, “আমাদের স্কুলের লাগোয়া একটি প্রাথমিক স্কুল আছে । স্কুলের গেট বন্ধ থাকায় কিছু বাচ্চা স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। এদিন সকালে সাড়ে দশটা নাগাদ মালদা থেকে একটি ছোট ডিমবাহী গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাচ্চাদের ধাক্কা মারে । একটি বাচ্চা গুরুতর আহত হয়। আর দুটি বাচ্চার সামান্য আঘাত লাগে । আমাদের স্কুলের সম্পাদক ওই বাচ্চাগুলোকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এরপর স্কুলের সামনে কেন স্পিড ব্রেকার নেই এ বিষয়ে স্থানীয় কিছু যুবক স্কুল চত্বরে চড়াও হয় । এর আগেও ওরা সামান্য কারণ নিয়ে স্কুলের উপর চড়াও হয়েছিল ।
আমাদের স্পিড ব্রেকার বসাবার ক্ষমতা নেই। এই নিয়ে আমরা থানার আইসি, ট্রাফিক ওসি থেকে সর্বস্তরে জানিয়েছিলাম। তিনি আরো বলেন, শিক্ষকদের উপর চড়াও হয়ে এক শিক্ষকের গলা টিপে ধরে মারধর করা হয় । ওই শিক্ষকের মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয় । অন্যান্য শিক্ষকরা কোনওমতে তাঁকে উদ্ধার করেন । যাওয়ার সময় ওই যুবকরা ফের হুমকি দিয়ে যায় বলে অভিযোগ । বর্তমানে আক্রান্ত শিক্ষক মালদা মেডিক্যালে চিকিত্সাধীন । এই ঘটনার পরে স্টাফ কাউন্সেলিংয়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল রাতে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে । অভিযোগ জানানো হয়েছে বিডিওকেও । জেলাশাসকেও এই ব্যাপারে অবহিত করা হবে ।