গোর্খাল্যান্ড ইস্যুকে উস্কে দিয়ে শান্ত পাহাড়ে ফের ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের আগুনে আঁচ দিচ্ছে বিজেপি। জন ভিত্তিহীন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিমলের সঙ্গে বিনয় ও অজয় এডওয়ার্ড এর পাহাড় বিভাজনের রাজনীতি আদতে বিজেপির নির্দেশে বৃহত্তর গেম প্ল্যান মন্তব্য গৌতম দেবের। লোকসভা ভোট এগিয়ে আসতেই রাজ্য বিভাজনের আগুন নিয়েই ফের ময়দানে নেমেছে ভাজপা।
আর সে লক্ষ্যে দার্জিলিং পাহাড়কে মহড়া হিসেবে ব্যবহার করছে বিজেপি। দিল্লির দরবারের নির্দেশ মতই পাহাড়ের ত্রি মূর্তিকে দিয়ে গোর্খা ল্যান্ড ইস্যুতে ফের ভোটের আগে ধ্বংসাত্বক অগ্নি বান প্রস্তুত করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। পাহাড়ে জনসমর্থনশূন্য হয়ে পড়েছে বিজেপি। ফলের লোকসভা নির্বাচনে পায়ের তলার মাটি হারিয়ে ত্রিমূর্তি বিমল বিনয় ও অজয়কে পাহাড়ি পাথুরে ভূমিকে উত্তপ্ত করার কাজে নামিয়েছে বিজেপি।
নিজ ফায়দা তুলতে দিল্লির গেরুয়া গড়ের নির্দেশ মতই নির্বাচনের মুখে গোর্খাল্যান্ডের জিগির তুলে পাহাড়ের উন্নয়ন স্তব্দ করতে নিয়মিত কর্মসূচিতে চালাচ্ছে কোণঠাসা হয়ে পড়া বিমল করুন পাহাড়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া বিমল গুরুং, বিনয় তামা এবং অজয় এডওয়ার্ড। সেমত সাধারণতন্ত্র দিবসের ঠিক পর ক্ষনেই শুক্রবার বাংলা বিভাজনের সলতেতে পাঁক দিয়ে ময়দানে নেমে প্রথমে শিলিগুড়ি বিধায়ক শংকর ঘোষ উত্তরবঙ্গ ভাগের রাজনীতিতে সুর চড়ান আর তার ঠিক কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তরফে বৈঠক করে জিটিএ স্বাক্ষরিত চুক্তি থেকে সরে এসে গোর্খাল্যান্ডের আওয়াজ তোলা হয়।
এদিন শিলিগুড়িতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দলীয় কার্যালয় সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন- গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গঠনের সময়তে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা অন্যতম পক্ষ হিসেবে চুক্তি স্বাক্ষর করে। সে সময় ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়। এবারে সে চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে জিজেএম। শুক্রবারই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্র এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে সেই চিঠি প্রেরণ করে তাদের সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে বলেও জানান তারা। তাদের দাবি যে উদ্দেশ্যে জিটিএ তৈরি হয়েছিল বর্তমানে জিটিএর সেই উদ্দেশ্য মুখী কাজ করছে না। তরাই ডুয়ার্স সহ মোট ৩৯৬ টি মৌজাকে জিটিএর অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব জানিয়ে জিটিএ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। পরবর্তীতে মাত্র পাঁচটি মৌজার অন্তর্ভুক্তকরণের কথা বলা হয়। আমাদের দাবি আলাদা রাজ্য গোর্খাল্যান্ড।
অস্তিত্ব হীনতার মুখে দাঁড়িয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সম্পাদক জানান ২০০৯ থেকে লাগাতার তিন দফায় বিজেপি কে নির্বাচিত করে সুযোগ দিয়েছে পাহাড়।তবে তাতেও পাহাড়ের লক্ষ্য পূরণ তো দূর আশা ব্যঞ্জনক কিছুই মেলেনি ব্যঞ্জক কিছুই মেলেনি। আর এবারে তা নিয়েই ফের বিক্ষোভ কর্মসূচীর ঘোষণা করলেও তা দার্জিলিং তরাই ডুয়ার্সের পরিবর্তে দিল্লিকে মুখ করে হবে বলে জানান তিনি।
পাহাড় নিয়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান থেকে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য ২০২৪ পর্যন্ত কেন্দ্র সরকারকে সময় বেঁধে দেওয়ার কথাও জানান তিনি। তবে এ সমস্তটাই দিল্লী গেরুয়া মসনদের নির্দেশনায় চলা ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের গেম প্ল্যান বলে জানান শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন-রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের নেতৃত্বে যখন পাহাড়ে উন্নয়ন সুস্থিতি ফিরে এসেছে।
মুখ্যমন্ত্রী হাত ধরে পাহাড় স্বস্তির দিকে এগোচ্ছে ঠিক তখন লোকসভা কিংবা বিধানসভা যে কোনো রকম ভোট এগিয়ে এলেই উন্নয়নে বাঁধার সৃষ্টির কাজ করা হয়। বিজেপির নাম না করে তিনি বলেন এবারেও ২০২৪ এর নির্বাচনকে মাথায় রেখে অনেকে ঘোলা জলে মাছ ধরার জন্য নেমেছে। তার সাফ মন্তব্য কোথায় কি চিঠি দিচ্ছে, কি করছে সেসবের কোন গুরুত্ব নেই।
আরও পড়ুন – “মায়েদের থেকেই সময়ের ম্যানেজমেন্ট শেখা উচিত ” দেশের পড়ুয়াদের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী
ভাজপার দিকে ইঙ্গিত ছুঁড়েই তিনি বলেন এটা বৃহত্তর গেমপ্ল্যানের একটি অংশ। তিনি সরাসরি বলেন কেন্দ্রের সরকার যারা শাসন ক্ষমতায় আছেন তাদেরই বৃহত্তর গেম প্ল্যান। কারণ তাদের মন্ত্রী বিধায়কেরা বিভিন্ন সময়তেই উত্তরবঙ্গ বিভাজনের কথা বলেন মূলত তাদের কথাই ঘুর পথে অন্যদের দিয়ে বলানো হচ্ছে।
দার্জিলিং এর পরিবর্তে দিল্লিতে বিক্ষোভের বিষয়ে মেয়র বলেন ইস্যুটা যদি বাংলার হয় আর দিল্লিতে গিয়ে হাওয়া দেওয়া হয় সেটা তাদের বিষয়। বিজেপিকে তোপ দিয়ে তার বক্তব্য শূন্যের সঙ্গে শূন্য যোগ করলে যোগফল শূন্যই হবে। বিজেপির একমাত্র লক্ষ্য বাংলার উন্নয়নশীল সরকারকে হেনস্থা করা যা সম্ভব হয়ে উঠছে না। বাংলার মানুষ উন্নয়ন ও শান্তির পক্ষে রয়েছে। এদিকে জিটিএ সিইও অনিত থাপা এবং পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলেরও একই মন্তব্য।