ইডি আধিকারিকদের সন্দেহ, শুধু ২০১৪ সালই নয়, ২০১৭ সালের টেট ‘কেলেঙ্কারি’তেও কুন্তলের ভূমিকা রয়েছে। নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় কুন্তল ঘোষের বক্তব্য প্রথম থেকেই আলাদা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। নিয়োগে বেনিয়ম ও কোটি কোটি টাকার লেনদেনে কুন্তলের যোগও স্পষ্ট বলেই ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে। এবার আদালতের নির্দেশ মতো জেলে গিয়ে কুন্তলকে (Kuntal Ghosh) জেরা করা শুরু করল ইডি। বৃহস্পতিবার আলিপুরে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে কুন্তল ঘোষকে জেরা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দুই আধিকারিক এদিন সংশোধনাগারে যান। ইডি সূত্রে খবর, এর আগে কুন্তল যখন ইডির হেফাজতে ছিল, সেই সময় তাঁর কাছ থেকে একাধিক প্রশ্নের উত্তর ইডি পায়নি। এরপরই গত ৩ ফেব্রুয়ারি কুন্তলকে আদালতে তোলা হলে ইডির আধিকারিকরা এ বিষয়ে বিচারককে জানান। তাঁরা আবেদন করেন, জেলে গিয়ে জেরার যেন অনুমতি দেওয়া হয়। আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর এদিন কুন্তলকে জেরা করতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে যান ইডির আধিকারিকরা। কুন্তলের বিরুদ্ধে ভুয়ো ওয়েবসাইট চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সেই ওয়েবসাইটে নাম তুলে টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে কুন্তলের নামে।
কুন্তল বেশ কিছু ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলেন এবং সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের দেখানো হতো যে তাঁরা পরীক্ষায় পাশ করেছেন। আর ওই ওয়েবসাইট দেখিয়েই টাকা তুলতেন কুন্তল বলে তদন্তকারী সংস্থার কাছে তথ্য উঠে এসেছে। কুন্তল ঘোষের বাড়িতে যেদিন ইডি তল্লাশি করেছিল, সেখান থেকে ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের মার্কশিট উদ্ধার হয় বলে সূত্রের খবর।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কুন্তলের একটি ডায়েরি তাদের হাতে এসেছে। যে ডায়েরির পাতায় পাতায় সাঙ্কেতিক অক্ষরমালা। টাকার হিসাবের পাশে নাম ও পদবির আদ্যাক্ষর লেখা বলেও দাবি সূত্রের। শুধু তাই নয়, প্রচুর গানের প্যারোডিও লেখা রয়েছে সেই ডায়েরিতে। ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে উঠে এসেছে প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার নাম করে একের পর চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে টাকা তুলেছেন শাসকদলের এই যুবনেতা। এমনও তদন্তকারী সংস্থার দাবি, বিকাশ ভবনের এক আধিকারিকের সঙ্গে কুন্তলের যোগাযোগ ছিল। সেই সম্পর্কের জোরে এই নিয়োগসংক্রান্ত বেনিয়ম করতে সুবিধা হয়েছে। ভুয়ো ইন্টারভিউয়েরও আয়োজন করতেন এই আধিকারিকের সহযোগিতায় বলেও ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে।এর আগে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছিল, তদন্ত প্রক্রিয়াকে ব্যহত করার চেষ্টা করছেন হুগলির এই তৃণমূল যুব নেতা। একইসঙ্গে তদন্তে যথাযথ সহযোগিতা না করার অভিযোগও করেছিল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি ছিল, ইতিমধ্যে পুলিশ ও তাদের কাছে যে বয়ান কুন্তল ঘোষের রেকর্ড হয়েছে, তাতে পার্থক্য রয়েছে।
আরও পড়ুন – ‘বিরল’ গ্রহের যোগ ৩০ বছর পর! মহাশিবরাত্রির দিন দিশার আলো দেখবে এই…
প্রসঙ্গত, ইডি ৫০ পিএমএলএ অ্যাক্টে কুন্তলের বয়ান রেকর্ড করে। অন্যদিকে পুলিশ ১৬১ ধারায় বয়ান রেকর্ড করে। ইডির বক্তব্য, নানা কৌশলে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন কুন্তল। এরপরই কুন্তলকে জেরা করতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। সেই নির্দেশমতোই এদিন সংশোধনাগারে যায় তারা।