হাত জোড় বাবার ,‘আমার মেয়ে ইনোসেন্ট’, প্রতিবেশীরা বলছেন, ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’ , নৈহাটির জেলাপাড়ার একটা সরু গলি। সেই রাস্তাতেই দোতলা ঝাঁ চকচকে বাড়ি। বাড়ির দোতলার বারান্দার কাচের জানালাটা খোলাই ছিল। সেখানেই দাঁড়িয়ে হাত নাড়িয়ে সাংবাদিকদের ফুটো তুলতে মানা করছিলেন শ্বেতার বাবা। বারবারই বলছিলেন, “সকাল থেকে আমাকে বিরক্ত করছেন আপনারা। আমি কোনওদিনও কোনও খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত নই। আমার মেয়ে একেবারেই ইনোসেন্ট।” শ্বেতা- দুর্নীতি কাণ্ডের আরেক চাঁই অয়ন শীলের বান্ধবী। ইডি-র র্যাডারে তিনি। এটাই এখন তাঁর মোক্ষম পরিচয়। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই বিভিন্ন টেলিভিশনে দেখা গিয়েছে শ্বেতার ছবি। আর তাতেই উৎসুক প্রতিবেশীদের কানাঘুষো পাড়ার মোড়ে। শ্বেতার বাবা প্রাক্তন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী ছিলেন। ছেলেমেয়েদের ভালো পড়াশোনা শিখিয়েছেন। শ্বেতাও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন। কামারহাটি পুরসভাতেও চাকরি করতেন। ভালই ছিল সব। তবুও কেন এত টাকার প্রয়োজন ছিল? উত্তর খুঁজছেন প্রতিবেশীরাই।
এক প্রতিবেশী বলেন, “আমি তো এইমাত্র খবরে দেখলাম, দেখেই অবাক হয়ে গেছি। এই তো সেই শ্বেতা। চাকরি করতে যেত, এটুকুই শুনেছি। মডেল ছিল কিনা, এসব বলতে পারব না।” আরেক প্রতিবেশী বলেন, “ছোট থেকে বড় হতে দেখলাম। আমরা আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি। অন্যায় তো করেছে, এটা ঠিকই। তাঁকে তো শাস্তি পেতেই হবে। পাড়ার লোকের সঙ্গে খুব একটা মিশত না। ঘর থেকে বাইরে বেরিয়েই গাড়িতে উঠে যেত, আবার গাড়িতেই ঘরে ফিরত।”
পাড়ার এক বয়স্ক লোক বললেন, “আমরা তো চাকরি করে এত টাকা পাইনি কখনও। প্রত্যেকের কাছে একটা করে বান্ধবী রয়েছে। পয়সা-একটাই কথা। লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।” পাড়ার এক মহিলা, তিনি শ্বেতার বাড়িতে কাজ করতেন। তিনি বললেন, “নম্র স্বভাবের মেয়ে। ও যে কীভাবে এই ফাঁদে পা দিল, কে জানে! এত লোভ ভাল না।”
আরও পড়ুন – অয়ন শীল এবং শ্বেতা চক্রবর্তীর সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন এলাকাবাসীরা
শ্বেতা বাবা সাংবাদিকদের দেখে হাতি নাড়িয়ে বলেন, “আমি রিটায়ার্ড। আমি কিছু জানি না।” শ্বেতার প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন অনেক কথা। সরু গলি, যেখানে বড় গাড়ি ঢুকলে পাশ দিয়ে লোক যাওয়ার উপক্রম থাকে না। সেই গলিতে রোজ সাড়ে ন’টায় অয়নের পাঠানো গাড়ি এসে দাঁড়াত। তাতে উঠে চলে যেতেন শ্বেতা।