মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ‘কম যন্ত্রণাদায়ক এবং মর্যাদাপূর্ণ’ পদ্ধতি খোঁজার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ফাঁসির পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ‘কম যন্ত্রণাদায়ক এবং মর্যাদাপূর্ণ’ পদ্ধতি খোঁজার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিংহের বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনেরও পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রকে।
মৃত্যুদণ্ডের বিকল্প পথ খোঁজার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটিতে দিল্লি, বেঙ্গালুরু বা হায়দ্রাবাদের মতো অন্তত দু’টি জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ, দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)-এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বৈজ্ঞানিক, মনোবিদ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের রাখার সুপারিশও করেছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। শুনানি পর্বে অ্যাটর্নি জেনারেলকে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, ‘‘আজকের বিজ্ঞানে কম যন্ত্রণাদায়ক এবং মর্যাদাপূর্ণ মৃত্যুর উন্নত পদ্ধতি রয়েছে কি না, তা খুঁজে বার করুন।’’
প্রসঙ্গত, অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা উচিত কি না তা নিয়ে শুধু ভারতে নয়, গোটা বিশ্ব জুড়েই বিতর্ক উঠেছে বার বার। ভারতেও এর আগে বহু বার মৃত্যুদণ্ড তুলে দেওয়ার দাবি উঠেছে। কিন্তু সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডই বহাল থেকেছে দেশে। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড হিসাবে ফাঁসি কতটা যথাযথ, তা নিয়ে ২০১৭ সালের অগস্টে প্রথম প্রশ্ন তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে বলেছিল, ‘‘যে কারওরই মৃত্যু যন্ত্রণাহীন ও মর্যাদাপূর্ণ হওয়া উচিত। সরকারের উচিত আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে মৃত্যুর অন্য কোনও যন্ত্রণাহীন পন্থা খুঁজে বার করা।’’ প্রায় ছ’বছর পর সুপ্রিম কোর্ট এ বার কেন্দ্রীয় সরকারকে ফাঁসির পরিবর্তে অন্য কোনও বিকল্প পন্থা খোঁজার নির্দেশ দিল।
আরও পড়ুন –শেষমেশ তিহাড়েই ঠিকানা কেষ্টর ! জেল হেফাজতে পাঠাল দিল্লির আদালত,
এই মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে হাজির ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমানি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ তাঁকে বলে, ‘‘কাউকে ফাঁসিতে ঝোলানো হলে মৃত্যু পর্যন্ত তাকে যে অপরিসীম যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। প্রয়োজন ফাঁসির বিকল্প খোঁজা।’’ ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পদ্ধতি ‘মর্যাদাপূর্ণ’ নয় বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।