শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে কুণাল ঘোষ ও শশী পাঁজার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সৌমেন্দু অধিকারী। রাজ্যের শাসক দলের নেতা ও মন্ত্রীর মন্তব্যের জেরে আইনি নোটিস। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নোটিসের উত্তর না দেওয়ায় মামলা দায়ের করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। বুধবার সকালে কাঁথি আদালতে উপস্থিত হন শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। এদিন আইনজীবী মারফত তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, আদালতের নির্দেশে গ্রুপ সি-তে যাদের চাকরি গিয়েছে তাঁদের মধ্যে ৫৫ জন পূর্ব মেদিনীপুরেরর। এই ৫৫ জনের চাকরি সুপারিশ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। গত ১৩ মার্চ তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগোবাংলার’ ফেসবুক পেজে এই অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সেই সূত্রে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিরোধী দলনেতাকে হেফাজতে নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। ঠিক তার পরের দিন ‘জাগো বাংলা’র প্রথম পাতায় ‘গ্রেফতার চাই শুভেন্দু অধিকারীর’ এই শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপা হয়। তাতেও বক্তব্য ছিল কুণালের। এই প্রতিবেদনের জেরে বিরোধী দলনেতার মানহানি হয়েছে বলে দাবি করেছেন সৌমেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি ‘জাগোবাংলা’-র কর্তৃপক্ষকেও নোটিস পাঠানো হয়। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রমাণ দাখিলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এই নোটিসে। তা না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বিরুদ্ধে।
পাল্টা, ১৫ ই জানুয়ারী কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। শুভেন্দু অধিকারীর সুপারিশে ৫৫ জনের চাকরি হয়েছিল। ওই ৫৫ জনের অন্যতম সঞ্জীব শুকুল বিরোধী দলনেতার অত্যন্ত কাছের লোক। এরই প্রেক্ষিতে পাল্টা সৌমেন্দু অধিকারী আইনজীবী মারফত নোটিস পাঠান। সৌমেন্দু অধিকারীর দাবি, মন্ত্রীর এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কল্পনা প্রসূত। এতে শুভেন্দু অধিকারীর মানহানি হয়েছে। আইনি নোটিসে, এই মিথ্যে বিবৃতির জন্য শশী পাঁজাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এবং সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে মিথ্যে বিবৃতি সংশোধন করার কথাও বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনানুগ পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন – সল্টলেকে ধুন্ধুমার ! ৯ বছর পরও মেধাতালিকা দেয়নি এসএসসি!চাকরি প্রার্থীদের বিক্ষোভে ধুন্ধুমার…
বুধবার কাঁথি আদালতে মামলা দায়ের করার পর সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, “আমার দাদা শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কে অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাওয়ার জন্য নোটিস করেছিলাম। কোনও সৎ উত্তর দেননি। তাই আদালতে মামলা দায়ের করলাম। আইনি ভাবে মামলার মোকাবিলা করব।” অপরদিকে, সৌমেন্দু অধিকারীর আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তী বলেন, “কাঁথি দেওয়ানি আদালতে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও জাগো বাংলা পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বিরুদ্ধে ৫০০ ধারায় ফৌজদারী মামলা দায়ের হয়েছে। কুণাল ঘোষের আইনজীবী নোটিস পাঠিয়েছিলেন। সঠিক উত্তর পাইনি বলে মামলা দায়ের হল।”