বোলপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি মমতার ,‘অমর্ত্য সেনের বাড়িতে হাত দিলে আমি যা দেব না!’ অমর্ত্য সেনকে দেওয়া বিশ্বভারতীর উচ্ছেদের নোটিসের জেরে উত্তাল শান্তিনিকেতন। শুক্রবার থেকে ধর্না-অবস্থানে বসেছে সামাজিক মর্যাদা রক্ষা সমিতি। সকালে নোবেলজয়ীর ‘প্রতীচী’ বাড়ির সামনে থেকে শান্তিনিকেতন স্টেট ব্যাঙ্ক পর্যন্ত পদযাত্রাও করেন বিশ্বভারতীর আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থনীতিবিদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন আগেই। শুক্রবার মালদহ থেকে ট্রেনে ফেরার পথে বোলপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে আবার হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, কোনও ভাবেই বিশ্বভারতীর এই পদক্ষেপ বরদাস্ত করবেনা না তাঁরা।
শুক্রবার বোলপুর স্টেশনে ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে আবারও দলীয় নেতা কর্মীদের পরামর্শ দেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। বুঝিয়ে দেন অমর্ত্যের পাশে থাকতে হবে। এই প্রসঙ্গে বীরভূম জেলার তৃণমূল কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘ আমরা দিদির সঙ্গে দেখা করলাম। তিনি বললেন যে অবস্থান বিক্ষোভ হওয়ার কথা সেটা যেন সুষ্ঠু ভাবে হয়। উনি অমর্ত্য সেনের পাশে থাকতে বলেছেন। এছাড়াও দলের বেশ কিছু বিষয়ে খোঁজখবরও নিয়েছেন।’’
এর আগে বুধবার মালদহ সফরে যাওয়ার পথে বোলপুর স্টেশনে দলের নেতাকর্মীদের বিশ্বভারতীর উচ্ছেদ-নোটিসের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী ৬ এবং ৭ মে অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার নির্দেশ দেন। সেই প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে তৃণমূল। শনিবার সকাল থেকে অমর্ত্যের শান্তিনিকেতনের বাসভবন ‘প্রতীচী’র সামনে বাউল শিল্পীদের পাশাপাশি, বিশিষ্টজনেরাও শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসার কর্মসূচি নিয়েছেন। প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত থাকার কথা কবীর সুমন, যোগেন চৌধুরী, শুভাপ্রসন্ন, গৌতম ঘোষদের। এ ছাড়াও বিশ্বভারতীর শিক্ষক এবং প্রাক্তনীরাও থাকবেন।
শুক্রবার দুপুরে মালদহ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। দুপুরে অল্প সময়ের জন্য এক্সপ্রেস ট্রেনটি দাঁড়ায় বোলপুর স্টেশনে। ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলাপচারিতা করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ঘিরে ছিলেন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও। সেখানে অর্থনীতিবিদের জমি-বিতর্কের কথা উঠতেই মমতার মন্তব্য, ‘‘অমর্ত্য সেনের বাড়িতে হাত দিলে… আমাকে তো চেনে না। আমি যা দেব না।’’
আরও পড়ুন – শব্দের থেকেও বেশি গতিতে উড়ছে যুদ্ধবিমান
অন্য দিকে, ওই কর্মসূচির কারণে ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ হতে পারে, এই আশঙ্কা থেকে ইতিমধ্যেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।’’