পদ খুইয়েই মুখ খুললেন সাগরদিঘির দেবাশিস, রাজ্য রাজনীতির হিসাব বদলে দিয়েছে সাগরদিঘির (Sagardighi) উপনির্বাচন। যে কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে আলোচনা হলেই উদাহরণ হিসাবে উঠে আসছে সাগরদিঘির নাম। এই কেন্দ্রের ফল আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে জোট রাজনীতিকে। রাজনীতিকরা বলছেন, বিধানসভা উপনির্বাচনে এই কেন্দ্রের সংখ্যালঘু ভোট মুখ ফিরিয়েছে শাসকদলের দিক থেকে। তার প্রভাব পড়েছে ভোটবাক্সেও। তাই কি ব্লক সভাপতিকে সরিয়ে সাগরদিঘিতে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামল শাসকদল? উঠছে সে প্রশ্নও। একুশের নির্বাচনে সাগরদিঘি তৃণমূলের দখলে থাকলেও বিধায়কের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে মুর্শিদাবাদের এই কেন্দ্র হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। সেভাবে দেখতে গেলে, একটি উপনির্বাচনের ফল নিয়ে সারা রাজ্যে এত চর্চার কোনও কারণ নেই। তবে এই কেন্দ্র নিয়ে এত আলোচনার কারণ মূলত দু’টি। প্রথমত, বাম-কংগ্রেস জোটের পালে হাওয়া। দ্বিতীয়ত, তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ফাটলের প্রশ্ন।
সাগরদিঘির ফলের উপর দাঁড়িয়ে আগামী পঞ্চায়েতে বাম ও কংগ্রেসের হাতে হাত। গত পুরভোটেও তাদের কিছুটা ছন্নছাড়া লাগলেও, পঞ্চায়েত ভোটের আগে আবারও বেঁধে বেঁধে থাকার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বীরভূমের সিউড়িতে এক মঞ্চে সভাও করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিকে এই সভার আগে সাগরদিঘির তৃণমূলে বড়সড় বদলের খবর আসে।
পদ খোয়ান ব্লক সভাপতি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি এই উপনির্বাচনে প্রার্থীও হন। পরাজয়ের ২ মাস পর তাঁকে ব্লক সভাপতি পদ থেকে সরানো হল তাঁকে। বদলে আনা হয়েছে শামসুল হুদাকে। এদিকে পদ হারানোর পর দলের সিদ্ধান্তকে ‘মাথা পেতে’ নিলেও, সংগঠন যে দুর্বল ছিল মানছেন দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দেবাশিসের কথায়, জেলায় সংগঠনে কমিটিও তো ছিল না। দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সাগরদিঘিতে সংগঠন মজবুত করতে দল যেটা ভাল বুঝেছে, করেছে। সাগরদিঘিতে আমাদের কোনও ব্লক কমিটি বা অঞ্চল কমিটি বা বুথ কমিটি ছিল না। এখনও নেই। আগে বিধায়ক মুখে বলে দিয়েছেন, তুমি অঞ্চল সভাপতি তো তিনিই সেই পদে থেকে গিয়েছেন। কমিটি ছিল না।”
আরও পড়ুন – এক সপ্তাহের ট্রেনিংয়েই থানায় পোস্টিং! পুলিশ প্রশিক্ষণের নয়া ‘সিস্টেম’ মমতার
অন্যদিকে শামসুল হুদা বলেন, “গুরু দায়িত্ব পেয়েছি। চ্যালেঞ্জটা খুব কঠিন। সাগরদিঘি হারা এখনও আমরা সহ্য করতে পারছি না। সাগরদিঘি উদ্ধার সকলে নিয়ে একসঙ্গে ঝাঁপাব।” রাজনীতিকদের সংখ্যালঘু ভোট তত্ত্বও মানতে চাননি তিনি।, বলেন, “ভুল তথ্য। এমন গ্রাম আছে হিন্দু ভোটার সব, সেখানেও কংগ্রেস লিড পেয়েছে। সংখ্যালঘু ভোটার এখানে বেশি তাই এসব বলা হচ্ছে। আমরা তো ৬৫ হাজার ভোট পেয়েছি।”