পঞ্চায়েত ভোটের আগে নওশাদের হাত ধরে তণমূল ছাড়লেন পঞ্চায়েত প্রধান-সহ শতাধিক কর্মী, পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগে আরও বেশ খানিকটা শক্তি বাড়ল আইএসএফের। শনিবার বিকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পাথরপ্রতিমা ব্লকের উত্তরাবাদের জনসভাতে নওশাদ সিদ্দিকীর (Naushad Siddiqui) হাত ধরে আইএসএফে (ISF) যোগদান করলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তথা দক্ষিণ গঙ্গাধরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আলাউদ্দিন মোল্লা, নির্দলের পাথর প্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সাইফুদ্দিন পাইক ও কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য নুরনবী মোল্লা-সহ শতাধিক তৃণমূলের কর্মী। তাঁদের হাতে নিজের হাতে আইএসএফের পতাকা তুলে দেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।
দলবদল প্রসঙ্গে সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের যুব সভাপতি বাপি হালদার বলেন, “কিছু ভেকধারী তৃণমূল কর্মী দীর্ঘদিন থেকেই মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন। মানুষ তাঁদের চাইছে না। তাঁরা বুঝতে পারছেন আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে তাঁরা টিকিট পাবেন না। সে কারণেই দলবদল করছেন। তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও ক্ষতি হবে না।”
আইএসএফে যোগদানকারী তৃণমূল কর্মীদের একটাই বক্তব্য, দুর্নীতির প্রতিবাদ করতেই তাঁরা দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একজন তো বলেই দিলেন, “এই চোর দলটার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এখন আইএসএফে যোগ দিলাম।” শনিবারের যোগদান মঞ্চ থেকে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দাগতে দেখা যায় নওশাদকে। রীতিমতো চাঁচাছোলা ভাষায় তিনি বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষাতে আপনাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যদি সব পরিবারের সন্তানেরা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যায়, তাহলে ভোটের সময় মারামারি, হানাহানি ও বোমা বাঁধার জন্য ওরা লোক খুঁজে পাবে না। সে জন্য আপনাদের সন্তানদের হাতে বই, খাতা, পেন তুলে দেওয়া যাবে না। তাই প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করে এদের হাতে বোমা, গুলি ও পিস্তল তুলে দিচ্ছে তৃণমূল। পাঁচশো ও এক হাজার টাকার ভাতা ছেড়ে দিয়ে আপনারা আওয়াজ তুলুন।”
আরও পড়ুন – চারদিন বাতিল ট্রেন, ভোগান্তির আশঙ্কা এই স্টেশনের যাত্রীদের,
এখানেই না থেমে তৃণমূলের সরকারের একাধিক প্রকল্প নিয়েও কটাক্ষবাণ শানাতে দেখা যায় নওশাদকে। বলেন, “শুধু চুরি করব, পঞ্চায়েতের প্রকল্পের টাকা লুঠপাঠ করব, বার্ধক্য ও বিধবা ভাতা থেকে কাটমানি নেব, আবাস যোজনা থেকে কাটিং করব, রাস্তা তৈরির বরাদ্দ থেকে কাটমানি নেব, এই ধান্দা যারা করছে তারা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভাবছে না। আমরা কোনও চোর ডাকাতকে বাঁচানোর জন্য সিঙ্গেল বেঞ্চ থেকে ডিভিশন বেঞ্চ ও সুপ্রিম কোর্টে ছোটাছুটি করব না। চোর ডাকাতকে সরাসরি প্রশাসনের হাতে তুলে দেব। উকিলের পিছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করব না।” প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যের নানা প্রান্তেই চলছে দলবদল। সবথেকে বেশি ভাঙন দেখা যাচ্ছে তৃণমূলে। কখনও তৃণমূল ছেড়ে বাম, তো কখনও তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদানের ছবি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এরইমধ্যে এবার আইএসএফে নতুন যোগদানে ভোটের আগে দলীয় কর্মীদের মনোবল বেশ খানিকটা বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।