অ্যাডিনোর প্রকোপে শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ! শিশু মৃত্যুর উদ্বেগের মধ্যেই রিপোর্ট NICED-এর ,অ্যাডিনো ভাইরাস- এখন এই নামটা গোটা বাংলার অভিভাবকদের শঙ্কার কারণ। রাজ্যে জ্বর-শ্বাসকষ্টে একের পর এক শিশুর মৃত্যু। দিশেহারা পরিবার। কোলে এক রত্তি, চোখে জল, বুক ফাটা হাহাকার। শহরের বি সি রায় শিশু হাসপাতাল কিংবা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে পা রাখলেই বুকে মোচড় দিচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, ততই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে শিশুদের মধ্যে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে দাবি করা হয়েছে, এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। অ্যাডিনো নিয়ে আতঙ্ক হওয়ারও কিছু নেই। এরই মাঝে প্রকাশ্যে এল আইসিএমআর নাইসেডের সমীক্ষা। ওই সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, অ্যাডিনোর প্রকোপে শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ।
পরিসংখ্যান বলছে, অ্যাডিনোর কবলে প্রথম পাঁচ রাজ্যের মধ্যে প্রথমেই বাংলা। অ্যাডিনো আক্রান্ত ৩৮ শতাংশ। তামিলনাড়ু ১৯ শতাংশ। কেরল ১৩ শতাংশ। দিল্লি ১১ শতাংশ। মহারাষ্ট্র ৫ শতাংশ। কেন্দ্রের সমীক্ষার জেরেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে স্বাস্থ্য ভবন। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, জানুয়ারিতেই অ্যাডিনো ভাইরাসের বাড়াবাড়ি, তবে কেন ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম সতর্কীকরণ রাজ্যে? সরকারি বিবৃতিতে অ্যাডিনোর প্রকোপ মারাত্মক নয় বলেই দাবি করা হয়েছে। কিন্তু ভিন্ন ছবি উঠে আসছে আইসিএমআর নাইসেডের সমীক্ষাতেই।
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “শিশুমৃত্যু নিয়ে একটা ভয়ঙ্কর প্যানিক তৈরি করছেন কেউ কেউ। মানুষ যে ভয় পাচ্ছে, তাতে একদল লোক আবার ব্যবসা করার সুযোগও পায়। প্রাইভেট হাসপাতালগুলো। যেটা সত্যি সেটাই আপনারা বলুন। এটা সব রাজ্যেই হচ্ছে।” নাইসেড ডিরেক্টর শান্তা দত্ত বলেছেন, “বাংলায় ৪০ শতাংশ অ্যাডিনো আক্রান্ত মানে অনেকটা, এত বেশি পরিমাণে সংক্রমিত হচ্ছে বলে সিকুয়েন্সিং শুরু হয়ে গিয়েছে।” বাংলায় অ্যাডিনোর দাপটের কারণ কী? নাইসেড অধিকর্তা বলছেন, “অ্যাডিনো হাইব্রিড ভাইরাস, ৩ ও ৭-এর হাইব্রিড। সেটা আগেও পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু এত বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়নি। এই নতুন হাইব্রিড ভেরিয়েন্টটার নতুন কোনও চেঞ্জ আসে কিনা, তা আগামী সপ্তাহের মধ্যে বলা যাবে।”
আরও পড়ুন – ডিএ ধর্মঘটের দিন কারা কারা এলেন না রিপোর্ট চাইল নবান্ন , সরকারি…
শুক্রবারও মৃত্যু হয়েছে আরও তিন শিশুর। প্রতিদিনই জ্বর-শ্বাসকষ্টে রাজ্যে শিশু মৃত্যুর খবর মিলেছে। এই সব শিশুর মৃত্যুর ক্ষেত্রে অ্যাডিনো ভাইরাসই দায়ী কিনা তা স্পষ্ট নয়। রাজ্যের তরফে দেওয়া রিপোর্টেও অ্যাডিনোয় আক্রান্ত মৃ্যুর সংখ্যা কম। বরং কোমর্ডিবিটি ও রেফার জনিত সমস্যায় অধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে, আইসিএমআর নাইসেডের সমীক্ষা বলছে রাজ্যে অ্যাডিনো আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ভয়াবহ। এমনকী গোটা দেশের মধ্যে প্রথম বলেও দাবি করা হয়েছে।