রবিতেই উদ্বোধন নয়া সংসদ ভবনের, তারপর কী হবে পুরনোটির? রবিবারই (২৮ মে), নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নতুন সংসদ ভবনের দরজা খুল যাওয়া মানে, বর্তমান সংসদ ভবনের কাজ ফুরোবে। আসলে পুরোনোকে তো নতুনের জন্য জায়গা ছেড়েই দিতে হয়। তবে, সেই পুরোনোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে অনেক আবেগ, অনেক ইতিহাস। আর স্বাধীন ভারতের প্রথম সংসদ ভবনের সঙ্গে তো জড়িয়ে আছে এরকম অনেক অনেক স্মৃতি। এই ভবনেই একের পর এক আইন পাস হয়েছে যা, স্বাধীন ভারতকে রূপ দিয়েছে। ভারতের সংবিধান গৃহিত হয়েছে এই ভবনেই। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, বর্তমান সংসদ ভবনটি ‘অতিরিক্ত ব্যবহারে জরাজীর্ণ’ হয়ে পড়েছে। তাছাড়া, স্থান এবং আধুনিক প্রযুক্তির অভাবের কারণে নতুন এক সংসদ ভবনের অত্যন্ত প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। প্রশ্ন উঠছে, নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন হওয়ার পর, পুরনো সংসদ ভবনটির কী হবে? সেটি কি ভেঙে ফেলা হবে?
কী হবে পুরোনো সংসদ ভবনে?
নতুন সংসদ ভবনে সংসদীয় কাজকর্ম শুরু হয়ে গেলে, বর্তমান ভবনটি তার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার ও সংস্কারের জন্য মুক্ত হয়ে যাবে। ২০২২ সালে একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বর্তমান সংসদ ভবনের একটি অংশকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হতে পারে। কেন্দ্রের সেন্ট্রাল ভিস্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই পুরোনো সংসদ ভবনে জাদুঘর তৈরি করা হবে। বর্তমান সংসদ ভবনটি জাদুঘর হিসাবে খোলা হলে দর্শকরা বর্তমান লোকসভা কক্ষে বসার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।
ভেঙে ফেলা হবে কি?
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, সংসদ ভবনের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও পুনরুজ্জীবিত করা জাতীয় গুরুত্বের বিষয়। এটি দেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। তাই ভবনটি কোনওভাবেই ভেঙে ফেলা হবে না। ২০২১ সালের মার্চে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি জানিয়েছিলেন, নতুন সংসদ ভবন তৈরি হয়ে গেলে, পুরোনো ভবনটি মেরামত করতে হবে। তারপর সেটিকে বিকল্প কাজে ব্যবহারের করা হবে। তবে এই ভবনটিকে ঠিক কী কাজে ব্যবহার করা হবে, সেই বিষয়ে কোনও বিশদ তথ্য দেননি তিনি। তবে নতুন ভবনটি সঙ্গে সঙ্গেই পুরোনোটিকেও ব্যবহার করা হবে এটা নিশ্চিত।
আরও পড়ুন – ‘অস্ট্রেলিয়ায় মন্দির ভাঙচুর মেনে নেব না’, কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি মোদির
আদতে ছিল কাউন্সিল হাউস
আজ যা সংসদ ভবন হিসেবে পরিচিত, তা তৈরি হয়েছিল মূলত কাউন্সিল হাউস হিসেবে। এটি ছিল ব্রিটিশ ভারতের ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল। ব্রিটিশ স্থপতি স্যার এডউইন লুটিয়েন্স এবং হার্বার্ট বেকার এই ভবনটির নকশা করেছিলেন। ভবনটির নির্মাণে ছয় বছর সময় লেগেছিল। ১৯২৭ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছিল। ১৯৫৬ সালে ভবনটিতে দুটি নতুন তল যুক্ত করা হয়েছিল। ২০০৬ সালে এই ভবনে সংসদ যাদুঘর যুক্ত করা হয়েছিল।