অনুব্রত মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড়। স্বাস্থ্যসাথীর নাম করে নিরক্ষরদের ‘সই চুরি’

অনুব্রত মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড়। স্বাস্থ্যসাথীর নাম করে নিরক্ষরদের ‘সই চুরি’, সেই সই দিয়ে শ’য়ে শ’য়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট!

অনুব্রত মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড়। প্রথমে ১৭৭ ও পরে ৫৪টি অ্যাকাউন্টের পর শুক্রবার নতুন আরও ১১৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি জমা করল সিবিআই। গরু পাচারের টাকা আড়ালের ক্ষেত্রে এই অ্যাকাউন্টগুলি বাফার অ্যাকাউন্ট হিসাবে ব্যবহার করার হদিশ পেয়েছে সিবিআই। তার বিস্তারিত তথ্য আসানসোল আদালতের কাছে তুলে ধরা হয় শুক্রবার। এদিন সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, এখনও পর্যন্ত ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, অ্যাকাউন্টগুলি তাঁদের খোলা নয় এবং টাকাও তাঁদের নয়। এদিন বিচারক জানতে চান, কীভাবে অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হল? তখন সিবিআইয়ের দাবি, দু’দিনের মধ্যেই অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছে। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার দাবি করেছেন, তিনি শুধুমাত্র সই করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে এই কাজ করেছেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার জানিয়েছেন বলে সিবিআইয়ের দাবি। সমবায় ব্যাঙ্কগুলির অ্যাকাউন্ট থেকে যে টাকা ঘুরপথে অনুব্রত মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল, সেখানে জড়িয়ে রয়েছে রাজীব ভট্টাচার্যের নামও। এই সেই রাজীব ভট্টাচার্য, যাঁর বিরুদ্ধে অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ৬৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গিয়েছে বাফার অ্যাকাউন্টে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এ থেকে স্পষ্ট হচ্ছে গরু পাচারের টাকাই ঘুরপথে বিভিন্ন খাতে খেটেছে।

 

 

 

সিবিআই বিচারককে জানায়, যাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল, তাঁরা এই সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। এক্ষেত্রে ১৬১ ধারা অনুযায়ী নেওয়া একটি জবানবন্দিও আদালতে পেশ করেন। আরও জানা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যসাথীর মতো সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করেই বাসিন্দাদের কাছ থেকে নথি সংগ্রহ করা হয়েছিল। যা দিয়েই অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। ওই ১৬ জন অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের মধ্যে ১২ জন টিপ সই দিয়েছেন। তাঁরা কিছুই এ বিষয়ে জানতেন না। অন্যদিকে অনুব্রতকে জেলে জেরা করার জন্য আবেদন করে সিবিআই। যদিও অভিযুক্তর আইনজীবী এর বিরোধিতা করেন।

 

 

অন্যদিকে, সায়গল হোসেনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত নিয়ে চাঞ্চল্যকর মোড় এসেছে। সেহেগলের যেসব সোনা এবং রূপার অলঙ্কার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, সেই ৪৪টি সামগ্রী কেন পৃথক করে তালিকা তৈরি করা হয়নি ? তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারক। পরবর্তী শুনানির দিনেই তার তালিকা সিবিআই-কে জমা করতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত বছর থেকেই সামগ্রীগুলি ফেরত পাওয়ার জন্য সেহেগলের আইনজীবী দরবার করছেন। সেহেগলকেও সিবিআই জেলে গিয়ে জেরার আবেদন করেন। অবদুল লতিফকে পলাতক ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই।

 

 

শুক্রবার সকাল ১১ টা নাগাদ আসানসোল জেল থেকে সিবিআই আদালতে তোলা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। পরনে সাদা পাঞ্জাবি, সাদা পাজামা। গায়ে শাল, মাথায় টিকা। কিন্তু মুখে উদ্বের ছাপ স্পষ্ট ছিল। এদিন আদালতে ঢোকার সময়ে বীরভূমের কোর কমিটি নিয়ে বারবার জিজ্ঞাসা করা হলেও তিনি সংবাদমাধ্যমকে কোনও উত্তর দেননি। এমনকি বীরভূমের মুখ্যমন্ত্রী সফর প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেননি তিনি। এজলাসে ঢোকার সাত থেকে দশ মিনিটের মধ্যেই তাঁকে বের করে আনা হয়। যেহেতু জামিনের আবেদন করা হয়নি, তাই পরবর্তী শুনানির দিন ১৭ ফেব্রুয়ারি দেওয়া হয়। আবারও ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে কেষ্টর।

 

 

আরও পড়ুন – চিকেন পক্সের সংক্রমণ নিয়ে ভিড় বাড়ছে বেলেঘাটা আইডিতে, কলকাতায় মৃত বেড়ে ২৬

অনুব্রত মণ্ডল বেরিয়ে যাওয়ার পর সেহেগল হোসেনের ভার্চুয়াল শুনানি হয়। এবং তারপরে সিবিআই-এর ইনভেস্টিগেশন অফিসার ও বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী এদিন অনুব্রত মণ্ডলের তদন্তের নথি খতিয়ে দেখেন।

 

(সব খবর, ঠিক খবর, প্রত্যেক মুহূর্তে ফলো করুন facebook পেজ এবং youtube )