স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী পুলিশের এএসআই ( ASI )। মোবাইল ক্যামেরায় সরাসরি স্বামীকে সার্ভিস রিভলবার থেকে কপালে গুলি চালাতে দেখেন স্ত্রী। ঘটনায় চাঞ্চল্য পাহাড়ভূমি সেভকে। মৃতের নাম সুদীপ ছেত্রী ( ASI ) ( ৪৬)। মালদার বাসিন্দা। জানা গিয়েছে বিগত দুবছর ধরে সেভক ফাঁড়িতে এএসআই ( ASI ) পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেভকেই বাড়ি ভাড়া নিয় থাকতেন। পরিবারের তার স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছে। তারা শিলিগুড়ির মাটিগাড়া শিবমন্দিরের বসবাস করেন।
পারিবারিক কোনো সমস্যা ছিল না বলে পরিবারের তরফে দাবি করা হলেও পুলিশ কর্মীর আত্মহত্যার পেছনের কারণ ভাবাচ্ছে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের। জানা গিয়েছে শনিবার রাতে কাজ সেরে সেবকের ভাড়া বাড়িতে ফেরেন ওই পুলিশকর্মী। রাত দশটা -এগারোটা নাগাদ গুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। স্থানীয়রা ছুটে আসেন পুলিসকর্মীর বাড়িতে। সেভক ফাঁড়িকে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে সেভক ফাঁড়ির পুলিশ এসে তার বাড়ি থেকে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে।
দেখা যায় বাড়িতে নিজের সার্ভিস রিভলবার থেকে গুলিবিদ্ধ রক্ততা দেহ পড়ে রয়েছে। হাতের সঙ্গে সার্ভিস রিভলভারের অবস্থান দেখে আত্মহত্যার বলেই প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। এরপর তাকে শিলিগুড়ি সেবক রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পুলিশের তরফে শিবমন্দিরে থাকা পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়। বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা পুলিশকর্মীকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। সেবক ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক জানান প্রাথমিক অনুমান নিজ সার্ভিস রিভলভার থেকে সোজা মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী হয় সে। কাজের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যার ছিলনা।
কোনোধরনের সমস্যা বা মানসিক চাপের বিষয়ে সে কখনই কাউকে জানায়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলা হবে। তবে ঠিক কি কারনে আত্মহত্যা তা ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সূত্রে জানা যাচ্ছে সম্প্রতি স্ত্রী সঙ্গে অশান্তি চলছিল মৃত পুলিশকর্মীর। তবে ঠিক কি নিয়ে এই অশান্তি সে বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না কেউই। তবে দার্জিলিং জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার বক্তব্যে এএসআইয়ের আত্মহত্যার ঘটনার উল্লেখ্যযোগ্য তথ্য সামনে আসে।
যাতে এএসআই আত্মহত্যা কান্ড নয়া মোড় নেয়। জানা যায় মৃত এএসআই নিজের স্ত্রীকে ভিডিও কলে করে সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি ছোড়ে আত্মঘাতী হন। ফোন ক্যামেরায় এএসআই স্বামীর নিজেকে গুলিবিদ্ধ করার পুরো দৃশ্যের প্রত্যক্ষ সাক্ষী স্ত্রী। দার্জিলিং এসপি ঘটনার বিষয়ে জানান প্রাথমিক অনুমান আত্মহত্যা। তবে সেভক ফাঁড়ির মতো জায়গায় কোনো ধরনের কাজের চাপ বিষয় নেই। তিনি বলেন স্ত্রীকে ভিডিও কল করে সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালায়। স্ত্রী নিজে দেখেছে সেই দৃশ্য।
এদিকে রবিবার শিলিগুড়ি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মৃত এএসআইয়ের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে মৃত পুলিশকর্মীর স্ত্রী যদিও ভিডিও কলের বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন কেন এধরনের ঘটনা ঘটলো সে বিষয়ে কিছুই বুঝতে পারছি না। মানসিক অবসাদের বিষয় নিয়ে সে কখনই কিছু বলেনি। খোলামেলা ভাবে পরিবারের সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতো। কোনো সমস্যা রয়েছে এমন কিছু কখনও বলেনি। শনিবার রাতে বিষয়টি জানতে পারি। মৃতের বন্ধু শঙ্খদ্বীপ দাশগুপ্ত জানান ভালো ক্রিকেট খেলতো। ও এধরনের কাজ করবে তা ভাবতেই পারছিনা।