শুধু কথায় হবে না, করে দেখান! রাজ্যপালের ভূমিকায় আবার অসন্তোষ প্রকাশ করলেন শুভেন্দু , হাওড়া এবং রিষড়ায় অশান্তির ঘটনায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভূমিকায় আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এ বার রাজ্যপালকে ‘কিছু করে দেখানোর’ চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন বিরোধী দলনেতা। বললেন, ‘‘সাংবিধানিক প্রধান, তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট না চেয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দিল্লিকে জানান। শিবপুর থানা, রিষড়া থানা এলাকায় ৩৫৫ ধারার আওতায় উপদ্রুত ঘোষণা করা হোক। আগামী দেড় মাসের জন্য ওই থানাগুলিকে আধা সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হোক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে এই প্রস্তাব দিন। তা হলে বুঝব, রাজ্যপাল কিছু করে দেখাতে চাইছেন।’’
রাজ্যপাল বোসের ভূমিকা নিয়ে অবশ্য শুভেন্দুর উল্টো সুর শোনা গিয়েছে সুকান্ত মজুমদারের গলায়। মঙ্গলবার রাজ্যপালের রিষড়া সফর প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেছেন, ‘‘রাজ্যপালকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে উনি সেখানে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন।’’
এই প্রসঙ্গে শুভেন্দুকে বিঁধেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বলেছেন, ‘‘ধনখড়ের সময় রাজভবনকে জেঠুর বাড়ি ভেবেছিলেন। যখন তখন ঢুকে পড়তেন, খেলা করতেন। নতুন রাজ্যপাল এখনও পর্যন্ত ধনখড়ের মতো চক্ষুলজ্জাহীন বিজেপির এজেন্টপনা করেননি। রাজভবন পার্টি অফিস মনে করেন ওঁরা।’’
অশান্তির ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন শুভেন্দু। বলেছেন, ‘‘এই পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীই দায়ী।’’ অশান্তির ঘটনায় তৃণমূল নেতারা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। রিষড়া, শ্রীরামপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন শুভেন্দু। মঙ্গলবার এই ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। বুধবার এই মামলার শুনানি।
আরও পড়ুন – নবান্নের কাছে রাজ্যের তিন এলাকার অশান্তির ঘটনার রিপোর্ট তলব করল অমিত শাহের…
মঙ্গলবার প্রাক্তন দুই রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী এবং জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্যপাল বোসের আবার তুলনা করেছেন শুভেন্দু। রাজ্যপালকে নিয়ে নিজের বক্তব্যে অনড় থেকে বিজেপি নেতা আবার বলেছেন, ‘‘আমার তিন দশকের রাজনৈতিক জীবনে অনেক রাজ্যপালকে দেখেছি। এই ধরনের পরিবেশে গোপালকৃষ্ণ গান্ধী, জগদীপ ধনখড়ের ভূমিকা স্মরণ করতে চাই। বর্তমান রাজ্যপালের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত গান্ধী এবং ধনখড়ের ভূমিকা ব্যক্তিগত ভাবে দেখতে পাইনি। আগেও বলেছিলাম, আজও এই মন্তব্যে আমি অনড়।’’ বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন একাধিক ঘটনায় ধনখড় ‘অতিসক্রিয়তা’ দেখিয়েছিলেন বলে শাসকশিবির বিভিন্ন সময় অভিযোগ তোলে। যা ঘিরে রাজ্য বনাম রাজভবন সংঘাত তুঙ্গে উঠেছিল। অতীতে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় রাজ্যপাল হিসাবে ‘সক্রিয়তা’ দেখিয়েছিলেন গোপালকৃষ্ণ। এই দুই রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে গত শনিবার বনগাঁতেও একই রকম মন্তব্য করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। গোড়া থেকেই রাজ্যপাল বোসের ভূমিকা নিয়ে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করেছিলেন শুভেন্দু-সহ বিজেপি নেতারা। তবে সম্প্রতি রাজ্যপালের বিভিন্ন পদক্ষেপে তাঁকে নিয়ে সমালোচনা বন্ধ করেছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু রাজ্যের সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনায় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে আবার সমালোচনায় সরব হলেন বিরোধী দলনেতা।