ভোট ঘোষণার আগেই ছত্তিশগড়-মধ্য প্রদেশে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ বিজেপির, ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে এই রকম নিদর্শন আগে আর আছে কিনা, যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। চলতি বছরের শেষেই নির্বাচন হবে ছত্তীসগঢ় এবং মধ্য প্রদেশে। এখনও ভোটের দিনক্ষণ কিছুই ঘোষণা করা হয়নি। তার আগেই বৃহস্পতিবার (১৭ অগস্ট), দুই রাজ্যের প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিল ভারতীয় জনতা পার্টি। ছত্তীসগঢ় বিধানসভার আসন সংখ্যা ৯০। এদিন বিজেপির পক্ষ থেকে ২১ আসনের জন্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। অন্যদিকে, মধ্য প্রদেশের ২৩০ বিধানসভা আসনের ৩৯টির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। ঠিক কী কারণে নির্বাচনের এত আগে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল বিজেপি, তা এখনও জানা যায়নি। এই ঘটনায় বিস্মিত গোটা রাজনৈতিক মহল।
ছত্তীসগঢ়ে যে ২১ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে দুর্গ লোকসভা আসনের সাংসদ বিজয় বঘেলের নাম। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিং-সহ দলের অনেক বিশিষ্ট নেতারই নাম নেই প্রথম তালিকায়। একইভাবে মধ্য প্রদেশের প্রথম প্রার্থী তালিকায় নেই মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং মন্ত্রিসভার কোনও সদস্যের নাম। ছত্তীসগঢ়ের তালিকায় রয়েছেন ৫ জন মহিলা, ১০ জন তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের এবং একজন তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের। মধ্য প্রদেশের তালিকাতেও আছেন ৫ জন মহিলা। তফসিলি জাতির প্রার্থী হয়েছেন ৮ জন আর ১৩ জন প্রার্থী হয়েছেন তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায় থেকে। পরবর্তী তালিকাগুলিতে রমন সিং-শিবরাজ সিং-রা থাকেন কিনা, এখন সেটাই দেখার। চলতি বছরের শেষে ছত্তিশগড় এবং মধ্য প্রদেশের পাশাপাশি রাজস্থান, তেলঙ্গানা এবং মিজোরামেও বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা।
আরও পড়ুন – কর্মসূচি ঘোষণা করে ইউরোপ সফরে যাচ্ছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, বুধবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এক বৈঠকে বসেছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি। তার একদিন পরই দুই রাজ্যের প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বর্তমান বিজেপি দলকে একটি ‘নিরন্তর নির্বাচন যন্ত্র’ বলে থাকেন। যন্ত্রের মতো যারা কোনও বিরতি না নিয়ে নির্বাচন জয়ের কাজে লেগে থাকে। বিজেপির পক্ষেও নির্বাচনের এত আগে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করাটা বিস্ময়কর। কেন এত আগে প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হল, তার কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি গেরুয়া শিবির। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কর্নাটক নির্বাচনের প্রেক্ষিতেই এই ব্য়তিক্রমী পদক্ষেপ করল বিজেপি। মাস কয়েক আগে দিকে কর্নাটক নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছিল বিজেপির। অন্যান্য বিভিন্ন কারণের পাশাপাশি, বিজেপির ভোটে বিপর্যয়ের করণ হিসেবে উঠে এসেছিল গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। প্রার্থী না করায় বহু নেতা শিবির বদল করেছিলেন। ছত্তীসগঢ়-মধ্য প্রদেশেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সমস্যা রয়েছে। কোথায় কোথায় এই দ্বন্দ্ব রয়েছে, তা শনাক্ত করতেই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব এত আগে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করল বলে মনে করা হচ্ছে।