পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের বিরোধিতা নিয়ে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের তুলোধনা ,কী বললেন শমীক? রাজভবন থেকে গতকাল পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করা হয়েছে। যদিও আলাদা করে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করার ঘোর বিরোধী রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠিও লিখেছেন। বাংলার সাংবিধানিক প্রধানকে মমতা লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের সিদ্ধান্তে তিনি মর্মাহত। এদিকে কলকাতার প্রথম সারির তিন ফুটবল ক্লাবও পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের বিরোধিতা করে। সেই তালিকায় ছিল ইস্টবেঙ্গলও (East Bengal)। সেই নিয়ে আজ বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে লাল-হলদু কর্মকর্তাদের তুলোধনা করেন বিজেপির (Bengal BJP) রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)।
ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তাদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করে শমীকের বক্তব্য যদি কারও রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকে তিনি যেন পতাকা নিয়ে ক্লাবের বাইরে রাজনীতি করেন। কিন্তু ক্লাবের প্রতিনিধি করে রাজনীতি করা কখনও কাম্য নয় বলে মনে করছেন তিনি। এমন কাজকর্মে হাজার হাজার ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ভাবাবেগে আঘাত করা হচ্ছে বলেই মত তাঁর। বললেন, ‘যাঁরা ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করে রাজনীতি করছেন, তাঁদের নিয়ে চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে।’ বিজেপি মুখপাত্রর আরও বক্তব্য, ‘একদিকে ২০১৯ সালে নাগপুরে মেইল করবে। তলায় তলায় আমাদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখবে, সাহায্যের কথা বলবে। আর ময়দানে নামবে শাসক দলের হয়ে। আবার খেলার মাঠ চালাবে। এটা হতে পারে না।’
শমীক ভট্টাচার্যের এই তুলোধনার পর ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। এই বিতর্ক নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি না হলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক লাল-হলুদ কর্তা পাল্টা দিয়েছেন বিজেপি মুখপাত্রকে। ওই কর্তার দাবি, ‘২০ জুন কোনও অবস্থাতেই সুখকর নয়। অনেক যন্ত্রণা জড়িয়ে আছে। তাই ওই দিনকে জন্মদিন হিসেবে পালন করা যায় না। দ্বিতীয়ত, যে যখন ক্রীড়ামন্ত্রী থেকেছেন এই রাজ্যের… সুভাষ চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, মদন মিত্র, অরূপ বিশ্বাস, সবার সঙ্গে প্রয়োজন মতো সহযোগিতা করেছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। আগামী দিনে বিজেপি যদি ক্ষমতায় আসে এই রাজ্যে, যিনি ক্রীড়ামন্ত্রী হবেন, তাঁকেও পূর্ণ সহযোগিতা করবে ক্লাব। আর, তলায় তলায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে চলতে হয় না।’
আরও পড়ুন – পঞ্চায়েত ভোট উপলক্ষে ছুটি ঘোষণা করল রাজ্য সরকার
কি ফুটবল ক্লাবগুলির বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্মকর্তাদের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে বেজায় বিরক্ত শমীক। বললেন, ‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে বহু ছিন্নমূল মানুষের আবেগ জড়িয়ে। দেশভাগের স্মৃতি জড়িয়ে আছে।’ ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় চলে আসা মানুষদের জন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের যে সংগ্রাম, যে লড়াই… সেই কথাও এদিন তুলে ধরেন বিজেপি মুখপাত্র। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্মকর্তাদের এমন পদক্ষেপকে ‘রাজনীতি’ ছাড়া আর কিছুই মনে করছেন না তিনি। বললেন, ‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাব পুরো রাজনীতির আখড়া হয়ে গিয়েছে। সমর্থকদের ভাবাবেগে আঘাত করছেন।’