এবার সরাসরি সংঘাতে বিজেপি ! রাজ্যপালের ভাষণকে ঘিরে উত্তপ্ত হল রাজ্য বিধানসভা lজগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকাকালীন রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত সামনে এসেছিল বারবার। আর এবার একেবারে উলট-পুরাণ! শাসক দলের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলার ছবি বিধানসভায় নতুন নয়। তবে এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধেও স্লোগান তুলল বিজেপি। শুধুমাত্র ‘ধিক্কার’ জানানোই নয়, বুধবার সিভি আনন্দ বোসকে গদি ছাড়ার দাবি জানিয়েছি সরব হলেন বিজেপি বিধায়কেরা। বাজেট অধিবেশনের শুরুতে এদিন রীতি মেনে ভাষণ পাঠ করেন রাজ্যপাল। তার মাঝেই শুরু হয় বিজেপির স্লোগান। ভাষণ পাঠ শেষ করে রাজ্যপাল যখন হাসিমুখে গাড়িতে উঠে যাচ্ছেন, তখন বিজেপি শিবিরের পক্ষ থেকে স্লোগান ভেসে আসে, ‘রাজ্যপাল গদি ছাড়ো।’ সাম্প্রতিককালে বিজেপির সঙ্গে রাজ্যপালের এমন সরাসরি সংঘাত বেনজির বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
বাজেট অধিবেশনের সূচনায় রাজ্যপালের ভাষণকে ঘিরে উত্তপ্ত হল রাজ্য বিধানসভা। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বক্তব্যে দুর্নীতিকে আড়াল করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে অধিবেশন কক্ষেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। পরে ‘চোর ধরো, জেল ভরো’ স্লোগান তুলে বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন তাঁরা।
বিক্ষোভ, স্লোগানের মধ্যে রাজ্যপাল অবশ্য তাঁর পুরো বক্তব্যই পেশ করেন। এক সময় তুমুল বিক্ষোভ এবং স্লোগান দেওয়ার জেরে রাজ্যপালের বক্তব্য শোনা না গেলেও থামেননি আনন্দ বোস। লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বিধানসভা চত্বর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও বিজেপি বিধায়করা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।
আরও পড়ুন-
সচরাচর রাজ্য আইনসভায় বাজেট অধিবেশনের আগে রাজ্যপাল যে বক্তব্য পাঠ করেন, তা সরকারের তরফেই লিখে দেওয়া হয়। বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করে থাকে যে, এই লিখিত বক্তব্যে শুধু সংশ্লিষ্ট সরকারের গুণগানই করা হয়, বাস্তবচিত্রের প্রতিফলন রাজ্যপালের ভাষণে ধরা পড়ে না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে রাজ্যপালরা সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্য পাঠ না করে স্বতন্ত্র বক্তব্য রাখতে চাইলেও, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। যেমনটা হয়েছিল তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল কিংবা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ক্ষেত্রে। ধনখড় অবশ্য পুরো বক্তব্য পাঠ না করে আংশিক বক্তব্য পাঠ করে বিধানসভা ত্যাগ করেছিলেন। তবে সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্য পাঠ করবেন রাজ্যপাল, এমনটাই দস্তুর।
বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিরোধী বিধায়কদের উদ্দেশে হাতজোড় করে প্রণাম করেন রাজ্যপাল। তখনও রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায় বিজেপি বিধায়কদের। বিক্ষোভের মধ্যে রাজ্যপাল যাতে নির্বিঘ্নে বিধানসভা থেকে বেরোতে পারেন, সে বিষয়ে আগে থেকেই সজাগ ছিল প্রশাসন।