Deprecated: version_compare(): Passing null to parameter #2 ($version2) of type string is deprecated in /home/u517603494/domains/shinetv.in/public_html/wp-content/plugins/elementor/core/experiments/manager.php on line 170
কেরালার নৌকা বাড়ি

কেরালার নৌকা বাড়ি

কেরালার নৌকা বাড়ি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram

কেরালার নৌকা বাড়ি। আমি কেরালাতে আছি ২০১৭ সাল থেকে । এখানকার বিখ্যাত “হাউস বোট” বা নৌকা বাড়ি চড়ে ঘুরেছি অনেকবার। রাত্রিযাপন করেছি দুইবার। প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপ দ্বারা ঘেরা শান্ত ব্যাকওয়াটার বরাবর যাত্রা করা, কাস্টমাইজড ট্রান্সপোর্ট বোটগুলির বারান্দায় বিশ্রাম নেওয়া আমাকে খুব টানে। বিকেলের সেই সোনা রোদে বসে, চুলে বাতাস দিয়ে চোখ বুজে বিশাম, বিশ্বের সবচেয়ে অনন্য অভিজ্ঞতা ।

 

ঈশ্বরের নিজের দেশে কেরালার নৌকা বাড়ি কাশ্মীর এর থেকে অনেক আলাদা। এখানে এটা জলযান। কেরালা প্রচুর, নদী, লেক, জলভুমি দিয়ে ঘেরা। সরকারি ভাবে এখানে বসবাস করার মত জলযানের ব্যবস্থা আছে। “হাউস বোট” বা নৌকা বাড়ি কে এখানে বলা হয় “কেট্টুভল্লম” যার আক্ষরিক অর্থ হল “গিঁটযুক্ত নৌকা”, এই নৌকাগুলি আগে খাল জুড়ে পণ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হত। ৮০ -১০০ ফুট হস্তনির্মিত সৃষ্টিগুলি স্থানীয় কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল যার নাম ‘আঞ্জিলি’। প্রথমে কাঠ থেকে বড় আকারের তক্তা কাটা হয় এবং এই তক্তাগুলিকে তারপর হাতে তৈরি নরিকেলের দড়ি ব্যবহার করে একত্রে বেঁধে দেওয়া হয়। এখানে নারকেল গাছের প্রাচুর্যের জন্য নারকোলের গাছ এর সব অংশের ব্যবহার হয়ে থাকে।

 

এই আশ্চর্যজনক সংমিশ্রণটি এই নৌকাগুলিকে বর্ষাকালে প্রবল বৃষ্টি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ায় জোয়ার-ভাটা সহ্য করার শক্তি দিয়ে থাকে। এই ভাসমান সুন্দরীরা এই দুর্দান্ত ব্যাকওয়াটারের অবিসংবাদিত তারকা। কেরালাতে এই বড় বড় যান গুলি আগে খালি পণ্যে পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হত। পরবর্তীকালে ব্রিজ আর রাস্তা হবার ফলে পণ্যে পরিবহন স্থলপথে বেশি শুরু হয়। এই সময় থেকে বোটগুলিকে ফ্লোটেলে রূপান্তর করার কাজ শুরু হয়। এর ফলে মাঝিদের জীবিকাও চলতে থাকে আগের মতন।

 

ঐতিহ্যগত অথচ আধুনিক, নৌকা বাড়িগুলি অনন্য কেরালার পর্যটনের ক্ষেত্রে। এটি এখন কেরলার সেরা পর্যটন হোটেল। এর টানে, দেশ ও বিদেশের বহু মানুষ আসেন কেরালাতে। দিন কয়েক আরাম ও বিলাসিতায় কাটিয়ে ফেরেন। নৌকা বাড়িতে আপনি এক রাত থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারেন। রাত্রে যান গুলি নোঙ্গর করা থাকে। দিনে এরা চলে ভিন্ন গ্রাম আর বিভিন্ন স্থানে। যাত্রীরা চাইলে থামিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। আর দেখতে পারেন ৭৪২ A.D তে বানান গির্জা, বা ২৫০ বছরের পুরাতন মসজিদ, মহাভারাতের সময়ের মন্দির, গ্রাম্য জীবন এবং নৌকা বাইচ সহ অনেক কিছু আছে।

 

রুমের মাপ শুধুমাত্র দুই জনের থাকার জন্য যথেষ্ট। এখানে দশ রুমের নৌকা আছে। ঠিক যেমন হোটেলগুলিতে আমাদের তারকা শ্রেণিবিভাগ রয়েছে আপনার কাছে ডিলাক্স, প্রিমিয়াম এবং বিলাসবহুল নামে বিভিন্ন বিভাগের হাউসবোট রয়েছে। প্রতিটি নৌকায় করা কাজ এবং সুবিধার উপর ভিত্তি করে দামের তারতম্য হয় হয়ে থাকে। সাধারণত ক্রজ দুপুরের মধ্যে শুরু হয় এবং পরের দিন সকাল ৯ টার মধ্যে শেষ হয়। প্রায় ২১ ঘন্টা স্থায়ী এই যাত্রা্। যার মধ্যে প্রায় ৫-৬ ঘন্টা সমুদ্র ভ্রমণ শুধু আপনার জন্য। ক্রজ চলাকালীন আপনি প্রাত্যহিক জীবন, বাড়ি, গীর্জা, মন্দির, ধান চাষ, মাছ ধরা, বিভিন্ন ধরণের নৌকা, রেস্তোরাঁ, টডির (দেশী মদ) দোকান এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে গঠিত গ্রামের জীবন প্রত্যক্ষ করতে পারেন।

আরও পড়ুন –  ফাঁক বুঝে ভরা এজলাস থেকে ফাঁক গলে পালাল আসামী

একদিনের ক্রজ এর ক্ষেত্রে, দুপুরের খাবার, সন্ধ্যার জলখাবার এবং রাতের খাবার পরিবেশন করা হয়। এবং প্রস্থানের দিন সকালের নাস্তা দেওয়া হয়। এখানে খাবার গুলির রন্ধনপ্রণালী স্থানীয় । ক্রজগুলির দাম ৫০০০/- টাকা থেকে শুরু। লক্ষ টাকার ক্রজ ও আছে। কুমারাকম হল সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ক্রজ ভ্রমণ। এছাড়াও আলাপী, এরনাকুলাম আস্টামুডি বিভিন্ন স্থানে ক্রজ এর ব্যবস্থা আছে। কচিন বিমান বন্দর থেকে দুই ঘন্টার মধ্যে পৌছনো যায় বোট জেটী গুলিতে, তবে আগে থেকে বুক করে আসা ভাল।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top