রথযাত্রার অনুমতি দিয়ে পুলিশি কড়াকড়ির সমালোচনায় হাই কোর্ট , রথযাত্রার দিনে হাওড়ায় পুলিশি ভূমিকার কড়া সমালোচনা করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। মঙ্গলবার তাঁর পর্যবেক্ষণ, রথযাত্রার গোটা পথে ৩০০ মিটার দূরত্ব বিগ্রহকে রথ ছাড়া নিয়ে যাওয়ার পুলিশি নির্দেশ কার্যত ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা। দেশের মানুষ যে দীর্ঘদিন ধরে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে রথযাত্রায় শামিল হয়েছেন, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি। বলেছেন, এই ধরনের নির্দেশ কার্যকর করা হলে রথযাত্রা তার মূল বিষয় থেকেই সরে যাবে। আদালতের খবর, ওই রথযাত্রার উদ্যোক্তারা বিষয়টি নিয়ে আগেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। হাই কোর্ট পরামর্শ দিয়েছিল, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পুলিশ-প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাতে হবে।
মঙ্গলবার পুলিশের কাজের সমালোচনা করে রথযাত্রার অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি বিচারপতি মান্থার নির্দেশ ছিল, কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে রথযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে চাইলে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। ওই নির্দেশের পরে রথযাত্রা নিয়ে হাওড়ায় অবশ্য কোনও গোলমাল হয়নি। তবে আইনজীবীদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, বিচারপতি মান্থার এই নির্দেশের বৃহত্তর প্রেক্ষাপট আছে। বহু ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ‘যুক্তি’ দেখিয়ে ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠে। সে ক্ষেত্রে এই নির্দেশ পরবর্তী কালে প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
রথযাত্রার সঙ্গে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের যোগসূত্রও বিচারপতির পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। তিনি জানান, পুরাণ ও লোককথা অনুযায়ী, জগন্নাথ এবং বলভদ্র (বলরাম) রথে চেপে নিজেদের বাড়ি থেকে মাসির বাড়ি যান। দেশে হাজার বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। তাতে নানা ধর্মের মানুষ শামিল হন। এমন একটি প্রথায় কোনও রকম হস্তক্ষেপের কার্যত নিন্দাও করেছে আদালত।
আরও পড়ুন – প্রতি বিন্দু রক্তপাতের জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন, মন্তব্য রাজ্যপালের
আদালতের খবর, ওই রথযাত্রার উদ্যোক্তারা বিষয়টি নিয়ে আগেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। হাই কোর্ট পরামর্শ দিয়েছিল, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পুলিশ-প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাতে হবে। সূত্রের খবর, পুলিশের অনুমতি না-পাওয়ায় ফের উদ্যোক্তারা আদালতের দ্বারস্থ হন।