কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে রক্ষাকবচ পেলেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। রক্ষাকবচ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তী। আদালতের নির্দেশ, বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্যকে জেরা করতে পারে পুলিশ। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নয় বলেই জানিয়েছে আদালত। পুলিশ তাঁকে বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলে জানিয়েছে আদালত।
আগামী ২০ ও ২২ নভেম্বরের তাঁকে বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে পুলিশ। তবে কঠোর কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। প্রতি কেসের জন্য এক ঘণ্টার বেশি জিজ্ঞাসাবাদ নয় বলেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রতি কেসের জন্য এক ঘণ্টার বেশি জেরা নয়, নির্দেশ আদালতের। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে মামলার শুনানি হয়। বিচারপতি নির্দেশ দেন নতুন নোটিস দিতে হবে পুলিশকে। ২৯ নভেম্বর এই মামলার শুনানি।
আরও পড়ুনঃ পুলিশের কাছে সময় চেয়ে আর্জি বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর, সময় দিতে না জানিয়ে ফের চিঠি পুলিশের
বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী শুক্রবার আদালতে জানান, ‘প্রাক্তন উপাচার্যকে ৫টি মামলায় ৭টি নোটিস দেওয়া হয়েছে। শান্তিনিকেতন থানা থেকে নোটিস দেওয়া হয়। বিভিন্ন অফিসার বিভিন্ন সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছেন। জামিন যোগ্য নয়, এমন ধারা দেওয়া হয়।’ একইসঙ্গে বিদ্যুতের অভিযোগ, কোনও এফআইআর আপলোডও করা হয়নি কোথাও। ফলে কারা অভিযোগ করেছেন সেটাও স্পষ্ট নয়।
রাজ্যের আইনজীবী তপন চক্রবর্তী বলেন, ‘কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। জিজ্ঞাসাবাদই করা হবে। ওনাকে সহযোগিতা করতে থানায় যেতে হবে।’ এরপরই বিচারপতি সেনগুপ্ত জানতে চান, একদিনের নোটিসে কি তাঁকে ডেকে পাঠানো হচ্ছে? বিদ্যুৎ আদালতকে জানান, ‘শেষ ৫ বছরে আমি অনেক কিছুর সম্মুখীন হয়েছি। যা সঠিক, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই সমস্যায় পড়তে হয়েছে।’ ২৯ নভেম্বর আবারও এই মামলা শুনবে আদালত।
বৃহস্পতিবারই মেয়াদ শেষ হয়েছে বিদ্যুতের। যদিও তাঁর কার্যকালের মেয়াদের পুরোটাই বিতর্কে ভরা। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বাড়ির জমি নিয়ে গোলমাল থেকে শুরু করে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র তকমা সম্বলিত ফলক বসানো নিয়ে মহাবিতর্ক— গত পাঁচ বছরে বিদ্যুত্ একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন। যে তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন, ফলক নিয়ে বিতর্ক। যে ফলকে তাঁর নিজের নাম এবং আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম থাকলেও ছিল না স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের নামই। তারই প্রতিবাদে বুকে রবীন্দ্রনাথের ছবি ঝুলিয়ে দলকে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়ার নির্দেশ দেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা। সেই মতো কর্মসূচিও শুরু হয়। যদিও তৃণমূলের প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে তাঁকে খুনের হুমকি দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা— এই অভিযোগে পুলিশের কাছে নালিশ জানিয়ে রেখেছেন বিদ্যুত্। তাঁর কার্যকালের মেয়াদ ফুরনোর পরেই তৃণমূলও কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করে। এই প্রেক্ষিতেই পুলিশের নয়া নোটিস গেল বিদ্যুতের কাছে।