নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সিবিআই এবং ইডির ভূমিকায় প্রশ্নও তুললেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা,তদন্তে বিলম্বিত করার চেষ্টা এবং তদন্তকারী আধিকারিকদের হুমকি দেওয়ার প্রবণতা ‘কড়া হাতে দমন’ করতে হবে— কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল। এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠি দেন বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়ে তিনি চিঠি দেন হেস্টিংস থানাতেও। সেই চিঠির বিষয়ে হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, ইডি বা সিবিআই প্রয়োজনে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। বৃহস্পতিবার সেই নির্দেশই বহাল রেখেছেন বিচারপতি সিন্হা। এই মামলায় নির্দেশ দিতে গিয়েই ওই পর্যবেক্ষণ বিচারপতি সিন্হার।
কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআই। বৃহস্পতিবার এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিন্হা। একই সঙ্গে কুন্তল এবং অভিষেকের মামলা খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তাঁদের দু’জনকেই ২৫ লক্ষ টাকা করে মোট ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিন্হা। জরিমানার টাকা অবিলম্বে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পূর্ববর্তী রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিলেন অভিষেক। সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। এই মামলায় নির্দেশ দিতে গিয়েই ওই পর্যবেক্ষণ করেন বিচারপতি সিন্হা।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সিবিআই এবং ইডির ভূমিকায় প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি সিন্হা। তিনি বলেন, ‘‘তদন্তের অগ্রগতিতে রিপোর্টে যা দিয়েছেন, তা তো গত বছরের। সাম্প্রতিক সময়ে তদন্তের কী অগ্রগতি হয়েছে?’’ জবাবে ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘তদন্তের মূল অংশটি সিবিআই দেখছে। আর ইডি আর্থিক অপরাধের বিষয়টি দেখছে। তদন্ত চলছে। আরও তথ্য সামনে আসবে।’’
আরও পড়ুন – অভিষেক-কুন্তলকে ৫০ লাখ জরিমানা হাইকোর্টের, তবে জানেন এই টাকা কী কাজে লাগে?
বিচারপতি সিন্হার পর্যবেক্ষণ, ‘‘তদন্তকে বিলম্বিত করার চেষ্টা এবং তদন্তকারী আধিকারিকদের হুমকি দেওয়ার প্রবণতাকে প্রথম থেকে বন্ধ না করা গেলে ভবিষ্যতে বহু গুরুত্বপূর্ণ তদন্তে এটাই স্টাইল হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই শুরুতেই একে শক্ত হাতে নির্মূল করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের পদক্ষেপ করার আগে বহুবার চিন্তা করেন।’’ এমনই পর্যবেক্ষণ ছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়েরও।