কলকাতা মেডিক্যালে বিরল অস্ত্রোপচারে বাঁচল তরুণের প্রাণ, শরীরের ৩ জায়গায় জমেছিল প্রাণঘাতী পারদ। মানুষের শরীরে পারদের ক্ষতিকারক প্রভাব কী? পরীক্ষা করতে ২টি থার্মোমিটার ভেঙে পারদ সংগ্রহ করে সিরিঞ্জের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করিয়েছিলেন নদিয়ার বাসিন্দা, চন্ডীগড় ইউনিভার্সিটির বি.টেক পড়ুয়া। কলকাতা মেডিক্যালে (Calcutta Medical College) বিরল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করা হল সেই পারদ। এখন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় তরুণ।
শরীরের ৩ জায়গায় জমেছিল প্রাণঘাতী পারদ। অস্ত্রোপচার করে তরুণকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরালেন কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজ-হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা। কলকাতা মেডিক্যালে সফল বিরল অস্ত্রোপচার। হাসপাতাল সূত্রে খবর,গলায় ব্যথা ও অস্বস্তি নিয়ে, মঙ্গলবার ENT বিভাগের আউটডোরে আসেন নদিয়ার চাপড়ার বাসিন্দা প্রোজ্জ্বল বিশ্বাস নামে এক তরুণ। বছর ১৯-এর তরুণের করা হয় সিটিস্ক্যান। সিটিস্ক্যানে দেখা যায়, তাঁর থাইরয়েড গ্রন্থির কাছ থেকে শ্বাসনালীর গোড়া পর্যন্ত এক সেন্টিমিটার জায়গাজুড়ে ধাবব জিনিস আটকে রয়েছে।
পরিবার সূত্রে খবর, সমস্যার সূত্রপাত ১ মাস আগে। চন্ডীগড় থেকে নদিয়ার চাপড়ার বাড়িতে আসেন প্রোজ্জ্বল। হঠাৎ পেট ও হাতে ব্যথা শুরু হয়। তখনই সিটিস্ক্য়ানে ধরা পড়ে পেট ও হাতে ধাতব কিছু আটকে রয়েছে। রানাঘাটের একটি নার্সিংহোমে ২ দফায় অপারেশন হলেও, সমস্যা মেটেনি। সবমিলিয়ে, শুধু তরুণকে সুস্থ করাই নয়, বুধবার পারদ রহস্যের যবনিকা পড়ল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই। আপাতত কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তারপর এক্স রে করে দেখা হবে, আর কোথাও পারদ আটকে রয়েছে কি না। তারপর তাঁকে ছাড়া হবে হাসপাতাল থেকে।
আরও পড়ুন – কলেজে ছাত্র সাংসদ নির্বাচন কবে? কী ভাবে হবে ছাত্রভোট,জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু
কিন্তু, শরীরে ওই জিনিস এল কীভাবে? চিকিৎসকদের প্রশ্নে প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও, পরে চন্ডীগড় ইউনিভার্সিটির বি.টেক পড়ুয়ার প্রোজ্জ্বল বিশ্বাসের কথা শুনে চমকে যান চিকিৎসকরা। তিনি জানান, ২টি থার্মোমিটার ভেঙে তার পারদ এক জায়গায় নিয়ে সিরিঞ্জে ভরে শরীরের ৩ জায়গায় প্রবেশ করিয়েছেন তিনি। বাঁ হাত, পাকস্থলীর কাছে। গলায় থাইরয়েড গ্রন্থির কাছে পারদ ইনজেকশন নিয়েছেন বলে জানান ওই পড়ুয়া। দাবি করেন, মানুষের শরীরে পারদের ক্ষতিকারক প্রভাব পরীক্ষা করতেই এ কাজ করেছেন তিনি। বুধবার, অস্ত্রোপচার করা হয় তরুণের। থাইরয়েড গ্রন্থির কাছে কিছুটা কেটে বিন্দু বিন্দু হয়ে জমে থাকা পারদ তুলে আনা হয়।