কেন পুকুরে ফোন ফেলেছিলেন জীবন, ভরা এজলাসে খোলসা করলেন আইনজীবী,নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে (TMC MLA Jiban Krishna Saha) শুক্রবার ফের পেশ করা হয় আদালতে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে আবারও জীবনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। উল্লেখ্য, জীবনের বাড়িতে সিবিআই যখন হানা দিয়েছিল, সেই সময় এক চূড়ান্ত নাটকীয় দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। পাঁচিলের উপর উঠে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন মোবাইল ফোন। সেই ফোন খুঁজে বের করতে গিয়ে নাকানি চোবানি খেতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। কেন জীবন মোবাইল ছুড়ে ফেলেছিলেন পুকুরে? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রশ্ন উঠে আসতে শুরু করেছে। অনেকে অনেক তত্ত্ব তুলে ধরছেন। ওই মোবাইলে কী এমন গোপন তথ্য রয়েছে, যা জীবন লুকানোর চেষ্টা করছিলেন, তা নিয়েও বিস্তর ধোঁয়াশা। তবে এবার আদালতে জীবনের আইনজীবী জানালেন, কী কারণে বিধায়ক মোবাইল ফেলে দিয়েছিলেন।
তৃণমূল বিধায়কের আইনজীবীর আরও দাবি, তাঁর মক্কেলকে প্রশ্ন করা হচ্ছে হিন্দিতে। তিনি উত্তর দিচ্ছেন বাংলায়। আর সেটি লেখা হচ্ছে ইংরেজিতে। এদিন আদালতে বিচারক জানতে চান, বিধানসভার অধ্যক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে কি না। জবাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, বিধানসভাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত জীবনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতের সওয়াল জবাবের শুরুতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আইনজীবীর বক্তব্য, জীবনের বাড়ি থেকে বিভিন্ন নথি ও রশিদ পাওয়া গিয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, সেগুলি বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে এবং এজেন্টদের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা নেওয়ার নথি ও রশিদ। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অপর অভিযুক্ত কৌশিক ঘোষের সঙ্গে জীবনের আর্থিক লেনদেনের নথিও পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। প্রসঙ্গত, এই কৌশিক ঘোষকে আগেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন – তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে ঢুকেই মোবাইল বাজেয়াপ্ত তদন্তকারীদের
উল্টোদিকে তৃণমূল বিধায়কের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের সিবিআই হেফাজতের বিরোধিতা করে তাঁর জামিনের আবেদন করেন। জীবনের আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘আমার মক্কেল একজন বিধায়ক। ওনার অনেক রাজনৈতিক শত্রু রয়েছে। ওনার বাড়ি থেকে নথি পাওয়া যায়নি। বাইরে কে ফেলি দিয়ে গিয়েছে, তা আমার মক্কেল কীভাবে জানবেন?’ পাশাপাশি ওই ফোন ফেলে দেওয়ার বিষয়টিও উঠে আসে আদালত কক্ষে। জীবনের আইনজীবীর দাবি, ‘ফোনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। ওনার মেয়ে শিলিগুড়িতে পড়াশোনা করেন। প্রতিদিন সন্ধেয় মেয়ে ও বাবার কথা হয় ফোনে। সেই কারণে, মেয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য তিনি মোবাইলটি দেওযার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। সেটি না দেওয়ার কারণেই হঠাৎ রাগ করে ফেলে দেন তিনি।’