কথায় কথায় চাকরি কেন খাচ্ছেন? যারা ভুল করেছে, তাদের আবার সুযোগ দিন, বললেন মমতা , নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের রায়, চাকরি যাওয়া এবং সংশ্লিষ্ট বিতর্কে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ করলেন, রাজনৈতিক স্বার্থের শিকার হচ্ছে যুব সমাজ। মঙ্গলবার জেলা আদালতের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বিচারপতিদের এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করার আবেদন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টেনে আনলেন তাঁর পূর্বতন সরকারের আমলে কলকাতা হাই কোর্টে রায়ের প্রসঙ্গও। কোথাও কোনও ভুল হয়ে থাকলে, চাইলেন তা সংশোধনের সুযোগও।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সিপিএম আমলে তিনি হাই কোর্টের একটি রায় প্রত্যক্ষ করেছিলেন। যেখানে চাকরি নিয়ে একটি মামলায় বিচারপতি সংশোধনের সুযোগ দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি রায় শুনেছিলাম। চাকরি নিয়ে মামলার রায়ে তিনি বলেছিলেন, ‘যদি ভুল থাকে সংশোধন করে নাও।’ উনি চাকরি খাওয়ার কথা বলেননি।’’ এর পর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় নিয়ে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এখন রোজ কথায় ৩ হাজার চাকরি বাদ। ৪ হাজার চাকরি বাদ! কেউ যদি নিচুতলায় অন্যায় করেও থাকে, সংশোধনের সুযোগ পাওয়া উচিত।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘সবাই আমার সরকারের ক্যাডার নন। সরকারের ক্যাডার হলেও তাঁরা কোনও না কোনও দলের সমর্থক। তাই সেখানে বসে যদি কেউ অন্যায় করেন, তিনি আমার দলেরও হন, আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’’
নিয়োগ দুর্নীতি মামলা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী হাই কোর্টের উদ্দেশে বলেন, ‘‘যাঁরা অন্যায় করেছে, অ্যাকশন নিন। টেক স্ট্রং অ্যাকশন। আমার কোনও দয়া নেই তাঁদের জন্য। কিন্তু ছেলেমেয়েরা যাতে তার শিকার না হয়, সেটা দেখুন। তাঁদের চাকরিটা আইন অনুযায়ী ফিরিয়ে দিন। দরকার হলে তিনি আবার পরীক্ষা দিন। কোর্ট যদি অন্য কোনও ব্যবস্থা করতে বলে, আমরা সেটাও করে দেব। সিদ্ধান্ত আপনাদের।’’ এর পর মঞ্চের সামনের দিকে তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি প্রধান বিচারপতিকে পেলাম না। এটা আমার মনের ভাবনা। কথায় কথায় লোকের চাকরি খাবেন না। এটা রাজনীতি নয়।’’
আরও পড়ুন – নেশাগ্রস্ত কপিলকে গাড়িতে বসিয়ে জিজ্ঞাসা করেন শাহরুখ ড্রাগ নাও?
মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে স্বাধীনতা সংগ্রামী অরবিন্দ ঘোষের মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার প্রসঙ্গ। মমতা বলেন, ‘‘আমরা তো আইনজীবীদের উপর নির্ভর করি। বিচারপতিদের রায়কে সম্মান জানাই। আমি অধিকার কাড়ার পক্ষে নই। আমি অধিকার দেওয়ার পক্ষে। যেটা আইনত স্বীকৃত, সেই অধিকারের কথা বলছি।’’ এর পর তিনি বলেন, ‘‘আমি যদি অন্যায় করি, আপনারা গালে দুটো চড় মারুন। আমি কিচ্ছু মনে করব না। যদি আমি দেখি, ‘ইয়েস আমি গিল্টি।’ আমি জীবনে জেনেশুনে কোনও অন্যায় করিনি। আমি ক্ষমতায় আসার পর একটাও সিপিএম ক্যাডারের চাকরি খাইনি। তা হলে তোমরা কেন খাচ্ছ? দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কাড়বার ক্ষমতা আছে!’’