চণ্ডীপুরে আমার গাড়ি আটকে পেট্রল বোমা মারা হয়েছিল বললেন মমতা, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী। তিনদিনের সফরে পূর্ব মেদিনীপুর যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে খেজুরির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। সূত্রের খবর, সরকারি ও দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সফরে তিনি নিজে হাতে প্রায় ৪৭৫ কোটির পরিষেবা প্রদান করেন। জেলাশাসক জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি থেকে পরিষেবা পাবেন জেলার ২ লক্ষ ৯৮ হাজার মানুষ। এছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরে ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প। সেই ক্যাম্প থেকে মানুষকে কীভাবে দ্রুত পরিষেবা প্রদান করা হবে সেই রূপরেখাও বানিয়ে ফেলেছে জেলা প্রশাসন। ২০ দিনের মধ্যে যাতে জেলার প্রত্যেকে পরিষেবা পান, তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্র ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। এরা পাপী। ১৭ লক্ষ লোকের টাকা দেয়নি। বাংলার বাড়ির টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। ১২ হাজার কিমি রাস্তা আমাদের টাকা। দিল্লির টাকা নয়।” “দিল্লিতে দুজন মারা গিয়েছেন। তাঁদের আমরা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। যাঁদের কেউ বাইরে কাজ করেন তাঁদের কারোর যদি খবর না পান, একটা অ্যাপ আছে, আপন বাংলা। সেখানে ক্লিক করে আপনার সমস্যা জানান। সরকার সাহায্য করবে।”“আমি রাস্তা তৈরি করছি। ওরা রাস্তা ভাঙছে। একটা আইন তৈরি হয়েছে, যেখানে কেউ যদি সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে তাহলে সরকার আপনার জমি অ্যাটাচ করে নিলাম করে দেবে। নিলামে বিক্রি হবে। সেই টাকায় পৌঁছবে যাঁদের বাড়ি ঘর পুড়েছে তাঁদের কাছে।”এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুরীর মতো জগন্নাথ মন্দির দিঘাতেও তৈরি হচ্ছে।”
সিপিএমের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন “সিপিএম-এর আমলে দেখছি গুন্ডাবাজি, পুকুরে বিষ মিশিয়ে দেওয়া, মানুষের পা কেটে দেওয়া, মানুষকে বয়কট করা, নরমুন্ডু নিয়ে খেলা করা। আর বিজেপির আমলে দেখছি দাঙ্গাবাজি।”“এখন যাঁরা বলছে নন্দীগ্রামে ঢুকতে দেব না। এখানকার ছেলেমেয়েদের জেলে পাঠিয়েছে। নির্বাচনের পরে নাকি বাবুর গায়ে আঁচড় লেগেছে। একটুও লাগেনি। নন্দীগ্রামে ভোটে লড়তে এসে ওরা আমার পা ভেঙে দিয়েছিল। আমার পায়ে এখনও দাগ রয়েছে। ভাল হয়নি। পুরো ফুলে গিয়েছিল। তারপরও আমি চ্যালেঞ্জ করে হুইলচেয়ার নিয়ে মিছিল করেছিলাম।”
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাঁরা আমাদের থেকে খেয়ে গিয়ে এখন আমাদের বদনাম করছেন আমি তাঁদের জন্য শুধু বলি ঈশ্বর-আল্লা তেরো নাম, সবকো সুমতি দে ভগবান, আমি বলি আল্লা তালা দোয়া করো যেন আমি সহ্য করতে পারি, ঈশ্বরকে বলি যেন সহ্য করতে পারি।” “চণ্ডীপুরে আমার গাড়ি আটকে পেট্রল বোমা মারতে গিয়েছিল। কোলাঘাটে আমার গাড়িতে মদের বোতল ছোড়া হয়েছিল। আমার উপর অনেক অত্যাচার হয়েছে। আমি যত দিন বাঁচব আমার আন্দোলন কেউ রুখতে পারবে না। আমার সংগ্রামী জীবন কেউ রুখতে পারবে না। আমি মানুষের সঙ্গে ছিলাম আছি থাকব।” “নন্দীগ্রামে সূর্যোদয়ের নামে দশদিন কাউকে বেরতে দেওয়া হয়নি। ১৪ মার্চ যখন গুলিতে মারা গিয়েছিল, সেই সময় খেজুরি দিয়ে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হত না। সেই সময় গদ্দাররা মাঠে ছিল না। লুকিয়ে বসেছিল। আমি সেই সময় ২৬ দিন অনশন করেছিলাম। ১৪ মার্চের গুলিকাণ্ডের পর আমি ছুটে এসেছিলাম।”
আরও পড়ুন – রবিবার সন্ধ্যার বিমানেই দিল্লি সফরে রওনা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়,
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একসময় খেজুরিতে ঢোকা যেত না। সিপিএম-এর অত্যাচারে মানুষ অত্যাচারিত ছিল। আমার একজন ছাত্রী বন্ধুকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছিল। এরপর তাঁর বাবার নামে দোষ দেওয়া হয়েছিল। সিপিএম গুলো এখন বিজেপি হয়েছে। আমাদের পড়ুয়াদের জেলে ঢুকিয়ে ভোট পরবর্তী হিংসার নামে জেলে ঢুকিয়েছে। ভাবছে এইভাবে চিরদিন চলে যাবে।”