
জেল থেকেই ফিরেই বাড়ির সামনে নোটিস দেখতে পেলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় নায়িকা ( Conspiracy ) পরীমণি। মাদক মামলায় জড়িত পরীমণি অবশেষে জামিন পেলেন ২৬ দিন পর। কিন্তু তারপরেও নেই স্বস্তি। নেট মাধ্যমে পরীমণির কাতর বার্তা, ‘আমি এখন কোথায় যাব!’ গোটা পরিস্থিতিটাই পরীমণির বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
আবারও পরীমণির সমর্থনে এগিয়ে এলেন লেখিকা। জেল ফেরত নায়িকার বাড়ি ছাড়ার নোটিসের সঙ্গে ২০০৭ সালের পশ্চিমবঙ্গ ছাড়ার ( Conspiracy ) নির্দেশকে মিলিয়ে দিলেন তিনি। আবারও বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রয়াত লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়লেন তসলিমা।
ফেসবুকে একটা লম্বা পোস্টে তসলিমা লিখেছেন, ‘পরীমণি জেল থেকে বেরোলো, বাড়িতে ঢুকলো আর দেখলো তাঁকে বাড়ি ছাড়ার নোটিস দিয়েছে বাড়িওয়ালা। এই ভয়ংকর দুঃসময়কে ( Conspiracy ) আমি খুব ভাল জানি, যেহেতু নিজের জীবনেই ঘটেছে এমন ঘটনা। মনে পড়ছে কলকাতার সেই দিনগুলোর কথা। ৭ নম্বর রওডন স্ট্রিটে ডাক্তার দেবল সেনের বাড়িতে আমি তখন ভাড়া থাকি। ২০০৭ সাল।
আর ও পড়ুন আজ থেকে টানা ৬ দিনের জন্য বন্ধ থাকছে তারাপীঠের ( Tarapith ) মন্দির
পুলিশ কমিশনার এসে জানিয়ে যাচ্ছেন, আমাকে দেশ ছাড়তে বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। দেশ যদি আপাতত না-ও ছাড়ি, রাজ্য আমাকে আজ বা কালের মধ্যেই ছাড়তে হবে। দেশের দরজা বহুকাল বন্ধ। ইউরোপ ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে প্রাণের টানে আর ভাষার টানে আশ্রয় নিলাম, আর আমাকে কিনা এই আশ্রয়টিও ছাড়তে হবে, কোথাও তো আর ঘর বাড়ি নেই আমার, যাবো কোথায়!’
তসলিমা লিখেছেন, ‘আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরিয়ে নিতে চাইছে কারা! আমি সম্ভবত যত না রাজনীতিকদের ষড়যন্ত্রের শিকার, তার চেয়ে বেশি শিকার সাহিত্যের মাফিয়া ডনদের রাজনীতির। যখন আশে পাশে কেউ নেই, বিপদ দেখে বন্ধুদের উপস্থিতি একশো থেকে প্রায় শূন্যে চলে এল। একা একা আমি চিৎকার করছি, আমি রাজ্য ছাড়ব না, শহর ছাড়ব না, বাড়ি ছাড়ব না, কারণ আমি কোনও অন্যায় করিনি, আমি মানবতার কথা লিখি। মানবাধিকারের জন্য সংগ্রাম করা, মানবতার কথা লেখা অন্যায় তো নয়!’ ‘সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যখন ফোন করে বললেন আমাকে রাজ্য ছাড়তেই হবে, বুঝলাম যাঁদের উচিত ছিল পাশে দাঁড়াবার, তাঁরাই পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। কলকাতা তো দেখিয়ে দিয়েছে লেখকেরা কী করে আরেক লেখকের বই নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়, লেখকেরা কী করে আরেক লেখকের সর্বনাশ করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।’
পরীমণির প্রসঙ্গে তসলিমা লিখেছেন, ‘বাড়ি ছাড়ার নোটিসটি হাতে নিয়ে পরীমণি বলছে, ‘আমি এখন কোথায় যাব, কে আমাকে এই সময় বাড়ি ভাড়া দেবে, আমাকে কি তাহলে ঢাকা ছাড়তে হবে, দেশ ছাড়তে হবে!’ এরকম আমিও বলেছিলাম সেদিন। পরীমণির অসহায়তা আমি অন্তর দিয়ে অনুভব করছি। পরীমণির শত্রু যেমন কম নয়, অনুরাগী শুভানুধ্যায়ীও তেমন কম নয়, তাঁরা এই দুঃসময়ে তাঁর পাশে দাঁড়াবেন, আমার বিশ্বাস।