প্রয়াত পরেশ অধিকারীর পুত্র হীরকজ্যোতি অধিকারী

প্রয়াত পরেশ অধিকারীর পুত্র হীরকজ্যোতি অধিকারী

প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর ছেলে হীরকজ্যোতি অধিকারী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৩০ বছর। হীরকজ্যোতি পেশায় চিকিত্‍সক ছিলেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়িতে বাবা পরেশের সঙ্গে বসে কথা বলছিলেন তিনি। আচমকা অসুস্থ বোধ করায় হীরকজ্যোতিকে মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিত্‍সকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুনঃ গ্রেফতারির পর এবার ইডির নজরে বালুর শান্তিনিকেতনের ‘দোতারা’?

মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালের সুপার তাপসকুমার দাস জানান, কার্ডিয়াক রেসপিরেটরি ফেলিয়োর এবং দীর্ঘ দিনের কিডনির সমস্যায় মৃত্যু হয়েছে। হীরকজ্যোতি মেখলিগঞ্জের কুচলিবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। জেলা যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পদেও ছিলেন তিনি। বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ‘রেড ক্রস সোসাইটি’র মেখলিগঞ্জ মহকুমার সম্পাদক পদে ছিলেন।

 

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে উঠে এসেছিল বিধায়ক পরেশ অধিকারীর নাম। বাম আমলে রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই বামপন্থী রাজনীতি করেছেন তিনি। এরপর রাজ্যে পালাবদলের পর তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়ান তিনি। যদিও লোকসভা নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। এরপর ফের বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেন পরেশ। তৃণমূল জমানায় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হন তিনি। তবে রাজ্যে শিক্ষক দুর্নীতি কাণ্ডে তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম উঠে আসে।

 

বিরোধীরা অভিযোগ করেন, নিজের প্রভাব খাটিয়ে নিজের মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। এমনকি, তাঁর পরিবারের আরও একাধিক সদস্যকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন বিরোধীরা। তাঁর বাড়িতে ইডি তল্লাশি হয়। পরে আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় এজেন্সির জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। প্রসঙ্গত, পরেশ অধিকারী নিজের মেয়েকে ছাড়াও আরও কয়েকজনকে পদের সুবিধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরেশ অধিকারীর পরিবারের ৩১ জন সদস্যদের নামের তালিকা প্রকাশ করে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, প্রত্যেকেই কোনও না কোনও ভাবে বেনিয়মের মাধ্যমে কর্মরত হয়েছেন। উল্লেখ্য, বিতর্কে জড়ানোর পর তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রিত্ব পদ হারাতে হয়। মন্ত্রিত্ব হারানোর পর জেলার রাজনীতিতে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন পরেশ অধিকারী। তবে পুজোর পরেই এহেন মর্মান্তিক খবরে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব পরেশ অধিকারীর ছেলের মৃত্যুতে বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।

en.wikipedia.org