শনিবার বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত, প্রবল দুর্যোগের পূর্বাভাসও শোনালো হাওয়া অফিস , কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জন্য এখনই ঝড় বৃষ্টির কোনও পূর্বাভাস নেই ঠিকই। তবে এরইমধ্যে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ (Cyclone Mocha) নিয়ে নয়া তথ্য দিল হাওয়া অফিস। যে ঘূর্ণাবর্ত থেকে এই মোখার সৃষ্টি হওয়ার কথা, শনিবার তা তৈরি হওয়ার কথা ছিল। বেলা বাড়তেই আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) সেই ঘূর্ণাবর্তের জন্ম হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে খুবই ঢিমেতালে শক্তি বাড়ায় ঘূর্ণাবর্ত। আপাতত যা পূর্বাভাস তাতে ৮ মে নিম্নচাপে পরিণত হবে এই ঘূর্ণাবর্ত। ৯ মে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপ তৈরি হলে আবহাওয়া দফতরেরও সাইক্লোনের গতিপথ বা কতটা জোরাল হওয়ার সম্ভাবনা তা সম্পর্কে একটা আভাস দিতে পারেন আবহবিদরা। গভীর নিম্নচাপ তৈরির পর মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোনোর পথে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপ সৃষ্টির পরই ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ জানানো সম্ভব হবে, বলছেন আবহবিদরা। আপাতত আন্দামান নিকোবরে প্রবল দুর্যোগের আভাস। ৮ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত জারি হয়েছে সতর্কবার্তা।
আমফানের দাপট থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রস্তুতি শুরু কলকাতায়। ঝড়ের জন্য একটি স্পেশাল কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। যে কন্ট্রোল রুমে বিভিন্ন দফতর একসঙ্গে থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা করবে। লালবাজারের মধ্যেই খোলা হচ্ছে এই কন্ট্রোল রুম। ১০ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত সেন্ট্রাল ফ্লাড কন্ট্রোলরুম খোলা হচ্ছে । তিনটে শিফটে এই কন্ট্রোল রুমে লোক থাকবে। চারজন করে প্রত্যেকটি শিফটে থাকবে লোক। নেতৃত্ব দেবেন একজন অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার। জলসম্পদ ভবনের একতলায় তা খোলা হবে।
সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে সতর্কতা জারি আবহাওয়া দফতরের। পর্যটকদের জন্য সতর্কবার্তার পাশাপাশি মৎস্যজীবীদেরও সতর্ক করা হয়েছে। রবিবার বিকেলের মধ্যে মৎস্যজীবীদের উপকূলে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারী থেকে অতি ভারী এমনকী প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা দ্বীপপুঞ্জে। ৬০ কিলোমিটার থেকে শুরু করে ৯০ এবং কোথাও কোথাও ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া বইবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে।
আরও পড়ুন – ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সমাজে সন্ত্রাসবাদের মুখোশ খুলে দেবে, এবার মুখ খুললেন মোদী
এই ঝড়ের প্রভাব এ রাজ্যে পড়বে কি না তা বলার সময় এখনও আসেনি। ঘূর্ণিঝড় তৈরি না হওয়া পর্যন্ত তার গতিবিধি বলা অসম্ভব। তবে যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস, তাই প্রথম থেকে সবরকমভাবে প্রস্তুত থাকতে চাইছে রাজ্য সরকার। উপকূলের জেলাগুলির ক্ষেত্রে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। যে কোনও ঝড়েই সবথেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ে পূর্ব মেদিনীপুর এবং ২৪ পরগনার সাগরবর্তী এলাকা।