হাইকোর্টের নির্দেশে ডিএ নিয়ে হবে বৈঠক, যৌথমঞ্চ ইতিমধ্যেই সরব তিন দাবি নিয়ে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বিক্ষোভ-ধর্না ও কর্মবিরতি আন্দোলনের পাশাপাশি প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল, কলকাতা হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে দীর্ঘ কালের মামলা-মকদ্দমাতেও বকেয়া ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না। সমাধান খুঁজতে কলকাতা হাই কোর্ট আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারকে বৈঠকে বসার নির্দেশ দিল বৃহস্পতিবার। হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ১৭ এপ্রিলের মধ্যে বৈঠক করতে হবে। আন্দোলনকারীদের তিন জন প্রতিনিধি থাকবেন। রাজ্যের তরফে থাকবেন মুখ্যসচিব-সহ শীর্ষ কর্তারা।
কর্মবিরতিতে ক্ষতি ও পরিষেবার ব্যাঘাতের অভিযোগ তুলে মামলা করেছিলেন তৃণমূলপন্থী আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। কোর্টে তিনি জানান, এই কর্মবিরতির ফলে ৪৩৬ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এর সুরাহা প্রয়োজন। ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি)-এর কাছে জানতে চায়, কর্মীরা দফতরে গিয়েছেন কি? এজি জানান, অফিসে গেলেও অনেকে কাজ না-করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে জরুরি পরিষেবা চালু আছে। হাই কোর্টের প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্টে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় এমন পদক্ষেপ কেন? আন্দোলনকারীদের আইনজীবীরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। তার প্রতিবাদেই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত।
আন্দোলনকারী সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘আলোচনার ক্ষেত্রে আমাদের প্রথম দাবি, সুপ্রিম কোর্ট থেকে সরকারকে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ২) ধর্মঘটের জন্য কর্মীদের কাছে পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিস প্রত্যাহার করতে হবে। ৩) প্রত্যাহার করতে হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বদলির সব নির্দেশও।’’ ভাস্কর জানান, তাঁদের তিনটি দাবি— বকেয়া ডিএ প্রদান, স্বচ্ছ নিয়োগ, অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে যোগ্যদের স্থায়ীকরণ। ১০-১১ এপ্রিল দিল্লিতে আন্দোলনকারীদের বৈঠক আছে। তাই ১২ এপ্রিলের পরে তাঁরা বৈঠক করতে পারবেন। রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ গুপ্তচৌধুরী বলেন, “পরিস্থিতি এমনই যে, সরকারি কর্মীদের সঙ্গে সরকারকে আলোচনা করার কথা বলতে হচ্ছে কোর্টকে!”
আরও পড়ুন – চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে তরুণীকে গণধর্ষণ!
তবে কর্মী সংগঠনগুলির বক্তব্য কিছুটা আলাদা। ডিএ চেয়ে অন্যতম মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগে আমাদের আলোচনার প্রস্তাবে কর্ণপাত করেনি সরকার। এখন সরকার ডাকলে আমরা থাকতে পারব না। কারণ, আমাদের মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।” অন্য মামলাকারী সংগঠন রাজ্য কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, “আদালতের নির্দেশকে স্বাগত। আলোচনায় মামলাকারীদেরও ডাকা উচিত ছিল। সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার নিষ্পত্তির আগে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে কি না, সন্দেহ।”